অনলাইন সংস্করণ
১৪:০০, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫
গত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ছয় শহীদ তরুণের মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় নিজের ক্ষমা চেয়েছেন রাজসাক্ষী শেখ আবজালুল হক। বুধবার (১৯ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি শেষে তিনি এই দুঃখ প্রকাশ করেন।
আবজালুল হক এই মামলায় ছয় মরদেহ পোড়ানো এবং সাতজন হত্যার ঘটনায় সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ ১৬ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন।
ট্রাইব্যুনাল-২ এর সদস্য, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেলের সামনে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
তিনি জানান, যদিও মরদেহ পোড়ানোর সময় তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না, কিন্তু ১৫ আগস্ট নিজের ইস্যু করা অস্ত্র জমা দিতে এসে জানতে পারেন যে লাশগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। আবজালুল হক জানিয়েছেন যে, আশুলিয়া থানার তৎকালীন ওসি সায়েদ ও এএসআই বিশ্বজিৎ মিলে ছয়টি মরদেহ পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেন। সর্বশেষ তিনি ট্রাইব্যুনালের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
এ মামলায় চলতি বছরের ২১ আগস্ট ১৬ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করার আদেশ দেয়া হয়। ওই সময় হাজির করা আট আসামির সাতজনই নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। তবে এসআই শেখ আবজালুল হক দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হতে চেয়ে মামলার ব্যাপারে যা জানেন তা আদালতে জানান।
এর আগে গত বছরের ৫ আগস্ট ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শাহরিয়ার হোসেন সজিব, গুলিবিদ্ধ ভুক্তভোগী সানি মৃধা এবং অন্যান্য সাক্ষীরা আদালতে তাদের বিবরণ দেন। এছাড়া আশুলিয়া থানার এসআই মো. আশরাফুল হাসান তার জবানবন্দিতে জানান, থানার ওসির নির্দেশে চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল রাইফেলের ছয় রাউন্ড গুলি উদ্ধার এবং থানায় জমা দেন।
মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয়ার সময়, অন্যান্য তথ্যসূত্র হিসেবে ৩১৩ পৃষ্ঠা, ৬২ সাক্ষী, ১৬৮ পৃষ্ঠার দালিলিক প্রমাণ এবং দুটি পেনড্রাইভ সংযুক্ত করা হয়।
মামলায় গ্রেপ্তার আট আসামির মধ্যে রয়েছেন ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, সাবেক অতিরিক্ত সুপার মো. শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান, আবজাল ও কনস্টেবল মুকুল। সাবেক এমপি সাইফুলসহ আটজন এখনও পলাতক রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে ছয় তরুণ নিহত হন। তাদের লাশ পুলিশ ভ্যানে তুলে পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়। একজন জীবিত থাকার পরও তাকে বাঁচতে দেওয়া হয়নি। ১১ সেপ্টেম্বর এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা দায়ের করা হয়।