অনলাইন সংস্করণ
১৮:৪৯, ৩০ জুলাই, ২০২৫
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত সংস্কারগুলো আইনগত ভিত্তি না পেলে তা বাস্তবায়নযোগ্য হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, এসব প্রস্তাবের কোনো আইনগত শক্তি না থাকলে জনগণের কাছে এর কোনো মূল্য থাকবে না এবং তাতে জামায়াত সই করবে না।
বুধবার (৩০ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ২২তম দিনের সংলাপে এসব কথা বলেন তিনি।
ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে যেসব সংস্কার প্রস্তাবে দলগুলো একমত হয়েছে, সেগুলো যদি যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়, তাহলে দেশে গুণগত পরিবর্তন সম্ভব। কিন্তু মঙ্গলবার কমিশনের পক্ষ থেকে পাঠানো সনদের খসড়া দেখে আমরা হতাশ হয়েছি। সেখানে বলা হয়েছে, দুই বছরের মধ্যে সংস্কার বাস্তবায়িত হবে, কিন্তু বর্তমান সরকারের মেয়াদ কিংবা কমিশনের এখতিয়ার সম্পর্কিত কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, এই সরকার কি তাহলে আরও দুই বছর ক্ষমতায় থাকতে চায়? আর যদি বর্তমান সরকার না থেকে ভবিষ্যৎ কোনো সরকার এসব বাস্তবায়ন করে, তাহলে এতদিন ধরে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা ও পরিশ্রম কি কেবল পরামর্শ দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে? তাহলে এর প্রকৃত কোনো মূল্যই থাকবে না।
ডা. তাহের বলেন, আমরা প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই ধরে নিয়েছিলাম এই সংস্কারগুলোর আইনগত ভিত্তি থাকবে এবং তা বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক হবে। কিন্তু এখন যা দেখা যাচ্ছে, তাতে এসব শুধু কথার কথা হয়ে থাকবে, যেগুলোর প্রতি জনগণ কোনো গুরুত্ব দেবে না। বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন বহু সময় এসেছে যখন আইনগত জটিলতা পেরিয়ে সমাধানের পথ বের হয়েছে।
এসময় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদসহ অনেক শাসকের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, তারা আইনগত পদ্ধতিতে ক্ষমতায় গিয়ে সংসদ গঠন করেছেন, আইন পাস করিয়েছেন। অতএব এই ক্ষেত্রেও আইনগত ভিত্তি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
সংস্কারের আইনগত রূপদানের বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আলোচনা করার প্রস্তাব দিয়ে জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা বলেন, এখনই আইনজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করা উচিত, যাতে সনদের বাস্তবায়নে কোনো প্রশ্ন না থাকে।
তিনি বলেন, যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়নযোগ্য না হয়, কিংবা তার আইনগত ভিত্তি না থাকে, তাহলে তা প্রতীকী দলিলে পরিণত হবে। এমন একটি দলিলে আমরা সই করব না, কারণ যেটার জনগণের কাছে কোনো বাস্তব মূল্য নেই, তাতে সই করে কোনো লাভ নেই।