অনলাইন সংস্করণ
১৬:০০, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার পদ স্থগিত হওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেছেন, বিএনপি যদি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আজকের প্রেক্ষাপটে দাঁড়ায়, ভালো। আমি তো আছিই বিএনপিতে। কিন্তু বিএনপি যদি দাঁড়াতে না পারে, তাহলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে নতুন কেউ দাঁড়াবে।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি গণমাধ্যমের টকশোতে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন আলোচিত এই রাজনীতিবীদ। এ সময় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও জামায়াতের দেশবিরোধী অবস্থান নিয়েও কথা বলেন তিনি।
ফজলুর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধকে আওয়ামী লীগ একটি দলের সম্পদে পরিণত করেছে—এমন প্রচার চালানো হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, একাত্তরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানে ৭১ শতাংশ ভোট পেয়েছিল।
তিনি বলেন, খুব সোজা হিসাব। ৭০ সনে শেখ মুজিবের দল জিতলো। সবাই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে দিল এবং ৭১ শতাংশ ভোট পেল আওয়ামী লীগ একা। ৮ শতাংশ ১০ শতাংশ ভোট পেল তিনটা মুসলিম লীগ, ৬ শতাংশ ভোট পেল জামায়াত গোলাম আজমের নেতৃত্বে। অর্থাৎ ২৯ শতাংশ ভোট বাইরে, আর একা শেখ মুজিবের দল ভোট পেল ৭১ শতাংশ। ১৬২টা সিট পূর্ব পাকিস্তান পেল। তাহলে একটা দল বলবে না তো কয়টা দল বলবে?
ফজলুর রহমান আরও বলেন, ১৬০টা সিট যে একটা দল পায়, তারা তো এইটাই বলবে। তার পরেও তো শেখ মুজিব মওলানা ভাসানীরে গিয়ে পায়ে ধরে সালাম করে বলেছে, হুজুর আমার সঙ্গে থাকেন। আর এই হুজুরই তো প্রথম বলছে—এই মুজিব তুমি স্বাধীনতা ঘোষণা করো। তোমার সঙ্গে আমি থাকব।
পদ স্থগিত হওয়া এই বিএনপি নেতা বলেন, বিএনপি যদি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান না নেয় আজকের প্রেক্ষাপটে তাহলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কিন্তু শেখ হাসিনার দাঁড়াতে হবে না, আওয়ামী লীগেরও দাঁড়াতে হবে না। একটা রাজনৈতিক শক্তি কিন্তু দাঁড়াবে। এ কথা আমি বলব। আরে আমি তো পলিটিক্যাল সাইন্সের ছেলে। বিএনপি দাঁড়ালে ভালো। আমি তো আছিই বিএনপিতে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে জামায়াতের ভূমিকা নিয়ে ফজলুর রহমান বলেন, জামায়াত বলছে কি বলছে? মুক্তিযুদ্ধ যারা করে এরা হলো ভারতের দালাল। নাম দিয়েছে দুষ্কৃতিকারী।
তিনি বলেন, টিক্কা খান যখন তিন দিনে ৫ লক্ষ লোক মেরে ফেলল ২৫ মার্চ এর রাত থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত, শুধু ৯০ হাজার লোক মেরেছে সেই বুড়িগঙ্গা নদীর থেকে ধরে কেরানীগঞ্জ নবাবগঞ্জ পর্যন্ত। তখন টিক্কা খানের সঙ্গে প্রথম যে দেখা করে পায়ে ধরে সালাম করল তার নাম গোলাম আজম। আপনি ছবি দেখেন ইতিহাসে। গোলাম আজম গিয়ে টিক্কা খানকে বললো, হুজুর আপনার সঙ্গে আমি আছি।
বিএনপির সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করে ফজলুর রহমান বলেন, আমার দলের রাজনৈতিক শিষ্টাচার যদি থাকে, তাহলে আমাকে নেওয়া উচিত ছিল। আমি তো বলছি, আমার ভুল হতে পারে। কিন্তু আমাকে তো কেউ বলেনি, আপনি এই ভুলটা করেছেন। শুধু বলা হলো, আমি কুরুচিপূর্ণ বক্তৃতা দিয়েছি। অথচ সেই বক্তৃতার পর আপনারা আমাকে আবার চ্যানেলে ডাকলেন।
তিনি আরও বলেন, আমি শিষ্টাচার চাই না, আমি চাই ন্যায্যতা। আমি তো দলের বিরুদ্ধে কিছু বলিনি। আমি ইতিহাস বলেছি, মুক্তিযুদ্ধের সত্য বলেছি।