নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় অবৈধ ঘোষণা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে ত্রয়োদশ সংশোধনী বৈধ ঘোষণা করে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল করেছেন দেশের সব্বোর্চ আদালত। এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর মগবাজারে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘যে রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছিল, সেটি ছিল বিতর্কিত ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের ফলে শেখ হাসিনা স্বৈরাচারি শাসন কায়েম করার সুযোগ পেয়েছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার মূল তত্ত্বই প্রথম প্রবর্তন করেছিলেন জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযম। তার সেই দূরদর্শী প্রস্তাব আজ বিজয়ী হলো। তত্ত্বাবধায়কবিহীন বিগত নির্বাচনগুলো ইতিহাসে কলঙ্কিত নির্বাচন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আজকের এই রায়ের মাধ্যমে গণতন্ত্র তার ইতিবাচক ধারায় ফিরে আসবে।’
অ্যাডভোকেট জুবায়ের জানান, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ হয়, সেজন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করে জামায়াত। তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘যদি বিগত দিনের মতো পাতানো নির্বাচনের পাঁয়তারা করা হয়, তাহলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জামায়াত তা প্রতিহত করবে।’
এই রায়কে ‘নিরপেক্ষ নির্বাচনের নতুন যুগের সূচনা’ হিসেবে অভিহিত করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, দেশের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে এই ব্যবস্থার প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় ছিল। এই রায় গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে এবং জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করবে।
সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতারা ছাড়াও দলের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মী-সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়কে বাতিল ঘোষণা করে আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে রায় দেন। এই রায়ের মাধ্যমে সংবিধানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরলেও আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে অধীনে। চতুর্দশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা কার্যকর হবে বলে রায়ে বলা হয়েছে।
