ঢাকা সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

আমজাদ হোসেনের দুটি কবিতা

আমজাদ হোসেনের দুটি কবিতা

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি

আমার পুড়ে যাওয়া ছেলে

একটি বাগানের কতগুলো তাজা ফুল ঝরে গেল,

ফোটার আগেই নিঃশেষ হয়ে গেল পুষ্পকলি।

পূর্ণিমার আকাশে এরা ছিল জ্বলজ্বল তারকা,

নিমিষেই খসে পড়ল তারা, গগন করে বিদীর্ণ।

যাদের কলকাকলিতে মুখরিত ছিল এই আঙিনা,

শহরে নিঃস্তব্ধতার কালিমা মেখে হয়ে গেল অচেনা।

কান্নার আওয়াজ আসে না, তাদের আঁখি যেন মরুভূমি!

আচমকা বোবা হয়ে গেল ব্যস্ততায় ঢাকা এ রাজধানী।

আর বুঝি শোনা যাবে না শিশুটির বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস!

আর কে শুধাবে সোনামণির আদরমাখা ডাকে ‘বাবা’?

অফিসের ক্লান্তি শেষে বাবা ফেরার অপেক্ষায় কে আর?

মায়ের বুকটি খালি, ঘুমপাড়ানি গল্প শুনবে না খোকা।

পৃথিবী বড়ই অদ্ভুত! যে পুষ্প ফুটে জগতে সুবাস ছড়াবে,

মাল্য হয়ে গলায় ঝুলবে, সৌন্দর্য বিলাবে আপন ত্যাগে।

অঙ্কুরেই হয়ে গেল বিনাশ, কে ছড়াবে আলো জগতে?

যে ভস্মে পোড়ে নিষ্পাপ শিশু, সেখানেই ফুটুক ফুল।

স্বর্গের শিশু

পুড়ছে মানুষ মরছে শিশু

লাশের শহর ঢাকা,

ফুলগুলো সব ঝরে গেল

হৃদয়বাগান ফাঁকা।

কান্নাভরা আর্তনাদে

আকাশ-বাতাস ভারি,

মা-জননীর আদরের ধন

ওপার দিল পাড়ি।

মা যে কাঁদে, বাপ যে কাঁদে

কাঁদছে সারা দেশ,

হাসিমাখা মুখখানি তোর

হলো নিরুদ্দেশ।

স্বর্গের দূত দুয়ারে দাঁড়ায়ে

বরিবে মেহমান,

দুনিয়া যাদের বিদায়বেলায়

শোকে মুহ্যমান।

স্বর্গবাসী অধিক খুশি

তোদের কাছে পেয়ে।

হরেক ফুলের সৌরভেতে

গেছে মাতিয়ে।

বেহেশতেরই বাগানভরা

তোরা শতক ফুল।

ইহজগত তোদের পানে

চেয়ে যে ব্যাকুল।

এই জগতে পোড়াগন্ধ

চুপসে বাতাস বয়।

পরপারে সুভ্র ঘ্রাণ আর

ছড়াও জ্যোতির্ময়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত