ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

মানবিক সংকটে গাজা

* নিরীহ মানুষ; সে হোক ইসরাইলি অথবা ফিলিস্তিনি। যারা যুদ্ধ পছন্দ করে না, যারা পরিবার, আত্মীয়স্বজন নিয়ে শান্তিপূর্ণ জীবন চায়; তাদের জন্য আজও, এত বছর পরও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কোনো সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে পারেনি
মানবিক সংকটে গাজা

ফিলিস্তিন বিশ্ব রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু। সেখানে মানবতা প্রশ্নবিদ্ধ। ফিলিস্তিন সংকট মূলত একটি ভূরাজনীতি ও মানবিক সংকট। যার মূল শেকড় বিশ শতকের গোড়ার। এটি অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে স্বাধিকার, জমি ও জাতীয় স্বীকৃতিকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিনের বিরোধ। অথচ এই ভূমির ইতিহাস সমৃদ্ধ। ফিলিস্তিনের আদি হিব্রু জনগোষ্ঠীরাই ৬৩৬-৩৭ সালে ইসলামের আলোয় আলোকিত হয়েছিল। এরা জেরুজালেমকে মধ্যমণি করে আবাদের মাধ্যমে ভূমধ্যসাগরের পূর্বে ১০৪২৯ বর্গমাইলের দেশ ফিলিস্তিনকে উর্বর করে তুলেছিল। শান্ত প্রকৃতির এ সকল মুসলমানেরা বুক আগলে স্থান দিয়েছিল দু’হাজার বছরের যাযাবর জাতি ইহুদিদের। আজ সেখানে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। হত্যা, খুন, গুম সেখানকার নিত্যদিনের ঘটনা। দখলদার ইসরায়েলি পাপিষ্ঠরা ফিলিস্তিনিদের স্বীয় মাতৃভূমি থেকে বিতাড়িত করার বীভৎস খেলায় মেতে উঠেছে। অথচ গল্পটা ছিল ভিন্ন।

সারা পৃথিবীতে প্রত্যাখ্যাত ইহুদিরা উদার ফিলিস্তিনিদের সরলতার সুযোগে পবিত্র ভূমিতে গেঁড়ে বসে। কৌশলে দখল করতে থাকে ফিলিস্তিনিদের মাতৃভূমি। আরবদের অভ্যন্তরীণ দলাদলি আর আমির-ওমরাদের ঔদাসিন্য ইসরায়েল নামক অবৈধ রাষ্ট্রের ভিত মজবুত করে দেয়। তাতেই নিজস্ব ভূমে পরবাসী হয়ে ওঠার বেদনাময় উপাখ্যান তৈরি হয়। আরব ফিলিস্তিনিদের হাতে ১৪০০ বছরের গড়ে ওঠা উর্বর ফিলিস্তিনে ১৯৪৮ সালে বিষবৃক্ষ রোপণ করে জায়নবাদীরা। এতে করে ফিলিস্তিনসহ পুরো মধ্যপ্রাচ্য অস্থিরতায় জ্বলেপুড়ে ছাড়খার হচ্ছে। যার পুরোটা সুবিধা নিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট ও যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপীয় খ্রিষ্টসমাজ। প্রতিনিয়ত আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েল। এরই মধ্যে বৃহৎ আকারে ১৯৪৮, ১৯৫৬, ১৯৬৭, ১৯৭৩ (ইওম কিপুর যুদ্ধ) এবং সর্বশেষ ২০২৩ সালের যুদ্ধ চলমান।

জায়নবাদীরা অজেয়, এমন একটি মিথ বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠিত। ফলে জায়নবাদীরা খামখেয়ালি করতে করতে ফিলিস্তিনের ভূমি দখল করে। এরা পশুপাখির মতো আবাল, বৃদ্ধ, শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষ যখন যাকে ইচ্ছে হত্যা করে। তাদের মিথ্যা মিথের ভয়ে কেউ ফিলিস্তিনিদের পক্ষে তেমন কথা বলে না। জায়নবাদীদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সমরাস্ত্র কিংবা বৈজ্ঞানিক তৎপরতার সব জায়গা অতিরঞ্জিত মিথের ওপর প্রতিষ্ঠিত। এ মিথ্যা মিথ ও আরবের গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর সঙ্গে তার নব সক্ষমতাকে ভেঙে দিতেই প্রয়োজন ছিল অবৈধ দেশটির অভ্যন্তরে একটি আক্রমণ। হামাস তা-ই করেছে। ৭ অক্টোবর, ২০২৩ শনিবার স্থানীয় সময় ভোর ৬টা ৩০ মিনিটে গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাসের মিলিটারি উইং কাসেম ব্রিগেড নজিরবিহীন আক্রমণে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে প্রবেশ করে। হামলায় হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের কিবুৎজ, সামরিক ঘাঁটি ও বেসামরিক এলাকা দখল করে। এতে ইসরায়েলের এত দিনের নিরাপত্তা বিষয়ক যাবতীয় দম্ভ চুরমার হয়ে যায়। অবশ্য এর কারণে আরেকটি অসম যুদ্ধের দ্বার খুলে যায়। এ যুদ্ধের পরিণাম কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা যুদ্ধরত পক্ষ দুটিরও জানা নেই।

এ আক্রমণে ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ ১২ শতাধিক মানুষ নিহত এবং শতাধিক ইসরাইলিকে অপহরণ করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সত্যি বলতে এ হামলায় ইসরায়েল হতভম্ব হয়ে গেছে। হামাস সদস্যরা গাজা থেকে কমপক্ষে পাঁচ হাজার রকেট হামলা চালিয়েছে। ঠিক সেই সময় হামাসের সশস্ত্র সদস্যরা কাঁটাতারের বেড়া বুলডোজার দিয়ে ছিঁড়ে ইসরায়েলের সীমানায় প্রবেশ করেছে। একই সঙ্গে প্যারাগ্লিডার ব্যবহার করে উড়ে গিয়ে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে নেমেছে। সমুদ্রপথেও স্পিডবোটযোগে হামলা চালায় হামাস। হামাস এ হামলার নাম দিয়েছে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’। কঠোর নিরাপত্তা ভেদ করে এমন হামলা হঠাৎ শুরু হবে এবং ইসরায়েল এতটা ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হবে, তা ভাবতে পারেনি। ইসরায়েলের গোয়েন্দা ব্যবস্থা পৃথিবীখ্যাত। তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে হামাসের মতো একটি সংগঠন এমন হামলা চালাতে পারে, সেটা অনেকের কাছেই কল্পনাতীত। এমন ভয়াবহ হামলার ঘটনা গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে তারা দেখেনি। এত মৃত্যুর ঘটনাও গত ৫০ বছরে ইয়ম কিপ্পুর যুদ্ধের পর ইসরায়েল প্রত্যক্ষ করেনি। সেই ইয়ম কিপ্পুর যুদ্ধ একই সঙ্গে রমজান মাসের যুদ্ধ বা অক্টোবর যুদ্ধ নামেও পরিচিত। সে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ১৯৭৩ সালের ৬ অক্টোবর। সে কারণে কেউ কেউ বলছেন, সেই যুদ্ধের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ হামলা চালানো হয়েছে। সেটা খুব একটা সঠিক কথা বলে মনে হয় না। কারণ, হামাস এ বিষয়ে সে রকম কোনো স্টেটমেন্ট দেয়নি। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হলো, হামাস বেশ কিছুকাল ধরে রকেট জমিয়েছে এ হামলা করার জন্য। হামাসের জানা ছিল, দু-একশ রকেট ছুড়লে তা ইসরায়েলের বিশেষ প্রযুক্তির আয়রন ডোম ধ্বংস করে দেবে। কিন্তু অসংখ্য রকেট ছুড়লে, তা ধ্বংস করতে পারবে না। বিষয়টা তা-ই হয়েছে। প্রথম দিকের কিছু রকেট ইসরায়েল ঠেকিয়ে দিয়েছে। কিন্তু হামলার সংখ্যা এত বেশি ছিল যে, আয়রন ডোমে কাজ হয়নি।

প্রশ্ন হলো, হামাস এতদিন ধরে রকেট জমিয়েছে, আক্রমণের প্রস্তুতি নিয়েছে, তা ইসরায়েলের শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থা জানতে পারল না? এখন কেউ যদি দাবি করে, এ ঘটনার পেছনে কোনো একটি গোয়েন্দা সংস্থার হাত রয়েছে, তাহলে খুব বেশি অযৌক্তিক বলা যাবে না। কারণ, গোয়েন্দা সংস্থাই কেবল গোয়েন্দা সংস্থার চোখ ফাঁকি দিতে পারে। এখন কোন সে গোয়েন্দা সংগঠন, সে প্রশ্ন থাকতে পারে। এসব নিয়ে পরে ভাবা হবে বলে ইসরায়েল মনে করছে। অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, হামাসেরও শক্তিশালী একটি গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে; যেটি বিশ্বের নামকরা কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার ক্ষমতা রাখে। তবে সর্বাধিক সংখ্যক মানুষ নিহত হয়েছে এবং ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে শতাধিক মানুষকে একটি মিউজিক ফেস্টিভ্যাল থেকে। সেখানে থাই, চায়ইস ও অন্যান্য জাতিরও কয়েকজনকে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ঘটনার পরপরই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ‘উই আর অ্যাট ওয়ার’ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। পরে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইগাক হেরসগও বলেছেন, এ যুদ্ধ অনেকদূর গড়াবে। গাজার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে এবং মুহুর্মুহু বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা লাগাতার চলছে। ইসরায়েল এক লাখের অধিক সৈন্য নামিয়েছে। অন্যদিকে হামাসের আক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে ইরান সমর্থিত লেবাননের হিজবুল্লাহ গেরিলারা লেবানন থেকে ইসরায়েলে রকেট ছুড়তে শুরু করে। যে কারণে ইসরায়েলের বাহিনী লেবাননেও সুনির্দিষ্ট স্থানে হামলা করতে শুরু করে। ফিলিস্তিন দুটি আলাদা আলাদা ভূখণ্ডে বিভক্ত। একটি ওয়েস্ট ব্যাংক (পশ্চিম তীর), আরেকটি গাজা। ওয়েস্ট ব্যাংক দুই হাজার বর্গমাইল হলেও গাজা সেই তুলনায় আরও অনেক ছোট। গাজা লম্বায় ২৫ মাইল আর প্রস্থে ৮-৯ মাইল। এই এতটুকু গাজা ভূখণ্ডে সাড়ে ২৩ লাখ মানুষের বসবাস। অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ গাজায় ঢাকার মতোই একটি ভবনের সঙ্গে গা মিশে দাঁড়িয়ে আছে আরেকটি ভবন। ইসরায়েল সাধারণ মানুষকে ভবনগুলো থেকে সরে যেতে বলেছে। অনেকে স্কুলভবনে আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু সেটা কতটা নিরাপদ এই ঘনবসতির মধ্যে, তা নিশ্চিত করা যায় না। ইসরায়েল একের পর এক স্থাপনা ধ্বংস করছে, কিন্তু এরই মধ্যে একটি সমস্যা ইসরায়েল বোধ করছে। যেসব ইসরাইলি নাগরিক ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাদের কী হবে? ইসরায়েল বলেছে, এই ধরে নিয়ে যাওয়া যুদ্ধাপরাধ। এ অতর্কিত হামলা নিয়ে দু’পক্ষ থেকেই কিছু দৃষ্টিভঙ্গি জানা গেছে। হামাস বলেছে, আমরা তো যুদ্ধের মধ্যেই আছি দীর্ঘকাল ধরে, যা চিরন্তন সত্য। আর ইসরায়েলের বক্তব্য হলো, যখন আরব দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে উঠছে, তখন এ হামলা আমাদের নতুন করে যুদ্ধের ময়দানে নামিয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থানে দেখা যাচ্ছে কয়েকটি দেশকে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসন, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপীয় দেশগুলো ইসরায়েলের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন অবিচল সমর্থনের কথা বলেছেন। জার্মানি ফিলিস্তিনে প্রদত্ত আর্থিক সহায়তা বন্ধের বিবেচনার কথা জানিয়েছে। অন্যদিকে ইরান হামাসকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া এবং ফিলিস্তিনের ইসলামি জিহাদ জেনারেল সেক্রেটারি জিয়াদ আন-নাকালার সঙ্গে টেলিফোনে এ হামলার জন্য অভিনন্দন জানিয়ে সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। কাতারও হামাসের হামলাকে সমর্থন জানিয়েছে।

অবশ্য ইসরায়েল এ হামলায় ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হলেও নতুন করে আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছ থেকে গাজায় হামলার অনুমোদন পেল। ২০০৫ সালে গাজা থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের পর পশ্চিমা বিশ্বের এক ধরনের চাপে ছিল ইসরায়েল, যাতে গাজায় অযাচিত হামলা না করে। অসম এ যুদ্ধে এখন ইসরায়েল যে মাত্রার হামলাই চালাক না কেন, তা পশ্চিমা দেশগুলো মেনে নেবে বলেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। হামাস কেন এ সময় এমন আক্রমণের পথ বেছে নিল তার কিছু কৌশলগত রাজনৈতিক কারণ থাকতে পারে। ইসরায়েল ২০২১ সালে ৮৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে ৩২ মাইল দীর্ঘ একটি অত্যাধুনিক দেয়াল নির্মাণ করতে শুরু করে, যা দ্রুত শেষ হতে চলেছে। এ দেয়াল মাটির ওপরে ২০ ফুট উঁচু এবং মাটির নিচে এতটাই গভীর পর্যন্ত, যাতে হামাস বা ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা কোনোক্রমেই টানেল খুঁড়তে না পারে।

অন্যদিকে আরব দেশগুলোর সঙ্গে দ্রুত ইসরায়েলের সম্পর্ক গড়ে উঠতে শুরু করেছে। সৌদি আরবের ডি ফ্যাক্টো শাসক মোহাম্মদ বিন সালমান ইসরায়েলকে সৌদি আকাশ ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছেন। তিনি কয়েকটি মুসলিম দেশের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতেও ইসরায়েলকে সহায়তা করেছেন। সালমান ফিলিস্তিনের ব্যাপারে বেশ কয়েক বছর ধরে উদাসীন রয়েছেন বলেও সংবাদ প্রচারিত হয়েছে। ইরানের সঙ্গে সৌদি আরবের চরম বৈরিতা ফিলিস্তিনের স্বার্থ থেকে সৌদি আরবকে আরও দূরে ঠেলে দিয়েছে।

নেতানিয়াহু বলেন, এমন হামলার শিকার হবে হামাস, যা আগে কখনও দেখেনি। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, হামাসের হামলা ইসরায়েলকে বাধ্য করেছে এমন হামলা পরিচালনার, যা ইসরায়েল আগে কখনও করেনি। ইসরায়েলের ভাষ্য, এরই মধ্যে যেসব নাগরিককে হামাস গেরিলারা ধরে নিয়ে গেছে, তাদেরকে গাজার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেকটা মানব ঢাল হিসেবে। ইসরায়েলের আক্রমণের মাত্রা দেখে মনে হচ্ছে, তারা এ মানব ঢালকে পরোয়া করবে না। তাদের মনোভাব, হয় এখন না হলে আর কখনোই না। সত্যিকারার্থে গত ১ বছর ৯ মাসে গাজা নরকে পরিণত হয়েছে; বিনিময়ে ইসরায়েল তার আরও শ’খানেক নাগরিকের নিহত হওয়া মেনে নিয়েছে। কিন্তু চিত্রটা দেখা যাচ্ছে ভিন্ন। হামাস ইসরায়েলের মতো বর্বর হতে পারেনি। তারা বন্দিদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেনি। হামাস প্রশাসন কয়েকজন ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তিও দিয়েছে। ইসরায়েলের একজন সামরিক অফিসার হামাসের হামলাকে ৯/১১ অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ার হামলার সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ৯/১১-এর পর যে ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল, ইসরায়েলও তাই করতে যাচ্ছে। কিন্তু গবেষক হিসেবে আমাদের ভাবনার বিষয় হচ্ছে নিরীহ মানুষ; সে হোক ইসরাইলি অথবা ফিলিস্তিনি। যারা যুদ্ধ পছন্দ করে না, যারা পরিবার, আত্মীয়স্বজন নিয়ে শান্তিপূর্ণ জীবন চায়; তাদের জন্য আজও, এত বছর পরও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কোনো সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে পারেনি।

লেখক : ভূরাজনীতির গবেষক ও রাষ্ট্রচিন্তক

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত