বর্ষা মানেই কাঁঠালের মৌসুম। সুমিষ্ট ঘ্রাণে চারদিক মাতিয়ে দেয় রসালো এই ফল। রাঙামাটির পাহাড়ি জনপদ এখন কাঁঠালের মৌসুমে সজীব। কিন্তু এই সুসংবাদেও লুকিয়ে আছে কৃষকের দীর্ঘশ্বাস, ব্যবসায়ীর অসন্তোষ এবং বাজার ব্যবস্থাপনার নৈরাজ্যের এক গহীন চিত্র।এ বছর রাঙামাটিতে কাঁঠালের উৎপাদনে নতুন এক রেকর্ড হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ৩৩৮০ হেক্টর জমিতে ১ লাখ টন কাঁঠাল উৎপাদন হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে বেশি। আবহাওয়া অনুকূলে ছিল, বড় কোনো ঝড় বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়নি। ফলে পাহাড়ি অঞ্চল বরকল, লংগদু, নানিয়ারচরসহ বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকা থেকে বাম্পার ফলনের খবর এসেছে।
বাঘাইছড়ি উপজেলার কাঁঠাল বাগান মালিক আব্দুর রহিম বলেন, এবার ফলন খুব ভালো। কিন্তু ফলনের আনন্দের চাইতে বাজারে গিয়েই কষ্ট বেশি। পাইকাররা দাম নিয়ে দরাদরি করে, শেষে না পেরে কম দামেই বিক্রি করে ফিরতে হয়। প্রত্যন্ত দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে শুষ্ক মৌসুমে কাঁঠাল শহরে পৌঁছাতে ছোট ইঞ্জিনচালিত নৌকা একমাত্র ভরসা।
নানিয়ারচর, বরকল, সুবলং, ঘাগড়া, বাঘাইছড়ি— এসব জায়গা থেকে রাতভর কাঁঠাল বোঝাই নৌকা আসছে শহরের সমতাঘাট, তবলছড়ি ঘাট এবং পৌর ট্রাক টার্মিনালে। এ যেন এক জীবনের জুয়া! স্রোতের বিপরীতে কাঁঠাল আর জীবনের ভার নিয়ে এগিয়ে চলেছে কৃষক। হঠাৎ ঝড়, নৌকার ইঞ্জিন বিকল, পাহাড়ি নদীতে ঢেউ— সবই যেন নিত্যসঙ্গী।