ঢাকা বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

এনসিটি পরিচালনার দায়িত্বে নৌবাহিনীর ড্রাই ডক

চট্টগ্রাম বন্দর
এনসিটি পরিচালনার দায়িত্বে নৌবাহিনীর ড্রাই ডক

চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে বড় ও ব্যস্ততম টার্মিনাল নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনার দায়িত্ব পাচ্ছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত চট্টগ্রাম ড্রাই ডক লিমিটেড। গত ৬ বন্দর ও ড্রাইডক কর্তৃপক্ষ এনসিটির দায়িত্ব বুঝে নিয়েছে। জানা যায়, বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত চিটাগাং ড্রাই ডক লিমিটেডের (সিডিডিএল) অধীনে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের (এনসিটি) যাত্রা শুরু হয়েছে। বিগত ৬ জুলাই মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (সিপিএ) ও ড্রাই ডক কর্তৃপক্ষের মধ্যে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। এরপর ৭ জুলাই থেকে ড্রাই ডক এনসিটি পরিচালনার কাজ শুরু করে। এরমধ্য দিয়ে এনসিটিতে বেসরকারি সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের প্রায় দেড় যুগের অবসান হলো। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছিল ডাইরেক্ট প্রকিউরমেন্ট মেথডে (ডিপিএম) এনসিটি পরিচালনা করবে চিটাগাং ড্রাইডক লিমিটেড। এরপর বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত ড্রাইডক কর্তৃপক্ষ এনসিটির দায়িত্ব বুঝে নেওয়া শুরু করেছিল। ফাইনালি গত রোববার (৭ জুলাই) মধ্যরাত থেকে এনসিটি ড্রাইডকের অধীনে পরিচালনা শুরু হয়েছে। প্রয়োজনে নতুন জনবলও নিয়োগ করা হবে। এনসিটি বিগত ১৭ বছর ধরে দেশীয় প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড পরিচালনা করে আসছিল। প্রতিষ্ঠানটির সাথে বন্দর কর্তৃপক্ষের চুক্তির মেয়াদ ৬ জুলাই শেষ হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ নতুন ব্যবস্থাপনায় যাচ্ছে। এনসিটির অবকাঠামোগত সক্ষমতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাঁচটি জেটির প্রতিটিতে বড় সমুদ্রযাত্রার জাহাজ ভিড়তে পারে এবং একটি জেটিতে অভ্যন্তরীণ নৌযান চলাচল করে। বছরে প্রায় ১৩ লাখ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করে এই টার্মিনাল। এখানে রয়েছে ১৪টি গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ আধুনিক সরঞ্জাম। ড্রাই ডকের এই দায়িত্ব গ্রহণ মূলত ছয় মাসের জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তি, যার মধ্যে বিদেশি অপারেটর নিয়োগের বিষয়েও আলোচনা চলছে। আন্তর্জাতিক অপারেটর ডিপি ওয়ার্ল্ডসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এ বিষয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এনসিটির মতো টার্মিনাল বিদেশি অপারেটরের হাতে না দিয়ে দেশের নিয়ন্ত্রণেই রাখার পক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। শিপিং সংশ্লিষ্টরা জানান, ড্রাই ডকের অভিজ্ঞতা, নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার দিক থেকে এটি একটি সাহসী সিদ্ধান্ত। তবে আগামী ছয় মাসে টার্মিনাল পরিচালনায় দক্ষতা, স্থায়িত্ব ও কর্মসংস্থান রক্ষার দিকগুলো নির্ধারক হয়ে উঠবে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার জন্য। তিনি আরও জানান, স্মোথলি কনটেইনার লোড, আনলোড, ডেলিভারি হচ্ছে।

বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, তারা চাইছেন দ্রুততম সময়ে বন্দরে লোড, আনলোড, ডেলিভারি হোক এবং খরচ কম হোক। বন্দরে আধুনিক হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ এনসিটিতে প্রতি ঘণ্টায় ৩০টির বেশি কনটেইনার জাহাজ ওঠানামা করানোর সক্ষমতা রয়েছে, অন্যান্য বার্থ এবং টার্মিনালে যা প্রতি ঘণ্টায় মাত্র ১৭ থেকে ১৮টি। বছরে এখন ১২-১৩ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিং হচ্ছে এনসিটিতে। টার্মিনালটি ১৭ বছর ধরে দেশীয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছিল। বর্তমানে এনসিটি পরিচালনাকারী সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে ৬ জুলাই। এই টার্মিনালে জেটি আছে পাঁচটি। এই পাঁচ জেটিতে চারটি সমুদ্রগ্রামী জাহাজ ও অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলকারী একটি জাহাজ ভিড়তে পারে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত