ঢাকা মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

রাঙামাটির পাহাড়ে বিলেতি ধনেপাতায় ২০০ কোটির স্বপ্ন

রাঙামাটির পাহাড়ে বিলেতি ধনেপাতায় ২০০ কোটির স্বপ্ন

রাঙামাটির পাহাড়ে এখন এক ধরনের নীরব বিপ্লব চলছে। সেটা রাজনীতি বা আন্দোলনের নয়, সবুজ পাতার বিপ্লব। গ্রামীণ বাঁশের মাচার নিচে, মাটির কাছাকাছি মাথা নিচু করে বড় হয়ে উঠছে সুগন্ধি এক সবজি, বিলেতি ধনেপাতা। যার সুবাস এখন ছড়িয়ে পড়ছে জেলার সীমা পেরিয়ে দেশের নানা প্রান্তে।

কৃষকরা বলছেন, ‘এটা শুধু একটা ফসল নয়, এটা আমাদের জীবনের আশার আলো। যেখানে চোখ যায়, সেখানেই সবুজ। জেলার কাউখালী, কাপ্তাই, বিলাইছড়ি কিংবা লংগদু উপজেলা, প্রায় প্রতিটি পাহাড়ি গ্রামে এখন ছাউনি টাঙানো মাচা। দেখে মনে হয় পানের বরজ। কিন্তু এগুলোর নিচে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে বিলেতি ধনেপাতা। একটু খেয়াল করলেই বোঝা যাবে এই পাতার গড়ন ভিন্ন। লম্বাটে, সরু ও গাঢ় সবুজ। হাতে নিয়ে ঘষলে ছড়িয়ে পড়ে একধরনের ভিন্নতর ঘ্রাণ, যা সাধারণ দেশি ধনেপাতার চেয়ে অনেক বেশি তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী। এই পাতারই এখন বাজার চাহিদা তৈরি হয়েছে সারা দেশে। বিশেষ করে ঢাকার বড় হোটেল, রেস্তোরাঁ ও বিদেশমুখী রফতানি পণ্যে ব্যবহারের কারণে চাহিদা বেড়েই চলেছে। ঘরে ঘরে গৃহীনিদের রান্নার সুঘ্রানে বিলেতি ধনিয়া পাতা ব্যবহার করে থাকেন।

এই বিপ্লবের নায়ক হচ্ছেন পাহাড়ের সাধারণ কৃষকরা। পাহাড়ি উঁচু-নীচু জমিতে কেউ বাঁশ কেটে মাচা বানিয়েছেন, কেউ আলো-ছায়ার ভারসাম্যে ধনেপাতা চাষে হাত দিয়েছেন। কাউকে শিখিয়েও দিতে হয়নি, প্রাকৃতিক অভিজ্ঞতা, বংশপরম্পরার কৃষি চেতনা আর একটু সাহস-এই দিয়েই গড়ে তুলেছেন অনেকে স্বনির্ভরতার পথ। এই ফসল শুধু পুরুষদের জীবন বদলায়নি, পাহাড়ের নারীদেরও এনে দিয়েছে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা। অনেক এলাকায় নারীরা দল বেধে ধনেপাতা বেছে, আঁটি বেঁধে স্থানীয় বাজারে পাঠায়। এতে যেমন সংসারের আয় বাড়ছে, তেমনি নারীরা পারিবারিক সিদ্ধান্ত গ্রহণেও ভূমিকা রাখতে পারছেন। এটি পাহাড়ে নারীর ক্ষমতায়নের একটি বাস্তব উদাহরণ হয়ে উঠেছে। সুনীল তংচঙ্গা, কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নের এক তরুণ কৃষক, বলেন, এবার দুই একর জমিতে ধনেপাতা লাগিয়েছি। কেজিপ্রতি দাম এখন ৮০ থেকে ৯০ টাকা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত