কুষ্টিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে এক গৃহবধূকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার সকালে লাশ গোরস্থানে নেওয়ার পথে হত্যা সন্দেহে পুলিশ লাশ আটকে দেয়। নিহত ওই গৃহবধূর নাম শিলা খাতুন (২০)। মিরপুর উপজেলার ধুবইল ইউনিয়নের কাঙালী মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। শিলা একই এলাকার আমিরুল ইসলামের মেয়ে। স্থানীয় এলাকাবাসী ও স্বজনরা জানান, দুই বছর আগে দৌলতপুর উপজেলার শেরপুর সেনপাড়া গ্রামের ইয়ারুল ইসলামের ছেলে আলামিনের সঙ্গে শিলার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। ইয়ারুল পেশায় একজন ওয়ার্কশপ মিস্ত্রী। তিনমাস আগে তাদের একটি পুত্র সন্তানও হয়। প্রায় এক সপ্তাহ আগে শ্বশুরবাড়ি থেকে জানায় শিলা শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। এরপর কুষ্টিয়া থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্বামী শিলাকে শ্বশুর বাড়িতে রেখে যায়। রাতে শ্বাসকষ্ট উঠলে পরিবারের লোকজন তাকে ভেড়ামারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখান থেকে বাড়িতে নিয়ে আসা হলে ভোররাতে শিলা মারা যায়। নিহতের দুলাভাই আশরাফুল ইসলাম বলেন, গত ২৯ জুন ঘটনাটি ঘটেছিল। শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমাদের বলেছিল শিলা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। তারাই চিকিৎসা করাচ্ছিল। কিন্তু শিলা মারা যাওয়ার আগে আমাকে বলেছে শ্বশুর বাড়ির লোকজন তার শরীরে তারপিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। যেহেতু পরিবারের অন্য কেউ বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইনি। তাই আমিও আর কাউকে সে সময় কিছু জানায়নি।
আশরাফুল ইসলাম আরও বলেন, গত শুক্রবার সকাল ১০টায় স্থানীয় গোরস্থানে শিলার লাশ দাফন হওয়ার কথা ছিল। বাড়ি থেকে লাশ গোরস্থানে নেওয়ার পথে পৌনে ১০টার দিকে পুলিশ লাশ আটকে দেয়। পুলিশ হত্যার অভিযোগের ব্যাপারে আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আমি তাদের বিষয়টি জানায়। এ ব্যাপারে মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুল ইসলাম বলেন, আসল ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে এমন সন্দেহের ভিত্তিতে পুলিশ তাদের থামিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে। নিহতের দুলাভাই বলছে মারা যাওয়ার আগে তাকে বলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিহতের শরীরের উপরের অংশটুকু পুড়ে গেছে। শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দুই পরিবার একে অন্যের আত্মীয়। দাফন না করে আমরা লাশ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দিয়েছি। ঘটনাস্থল দৌলতপুর হওয়ায় ওই থানার ওসি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন।
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ওসি নাজমুল হুদা জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সাপেক্ষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।