
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার মাঝ দিয়ে বয়ে চলা নদী গাজীখালী। বর্ষার দিনে কুলকুল ধারা আর শুষ্ক মৌসুমে শুকিয়ে যাওয়া এই নদীর এক প্রান্তে বংশী, অন্য প্রান্তে ধলেশ্বরী নদী। এক সময় এই নদীকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছিল সাটুরিয়া বাজার। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বড় বড় নৌকায় করে শত শত ক্রেতা-বিক্রেতা আসতেন এ বাজারে।
বর্তমানে নদীর বড় অংশ দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালী মহল। বালু-মাটি ফেলে ভরাট করে নির্মাণ করা হয়েছে নানা স্থাপনা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কচুরিপানার দখল। সাটুরিয়ার গোপালপুর থেকে ধামরাইয়ের বারবারিয়া পর্যন্ত পুরো নদীজুড়ে এখন কচুরিপানার জট। ফলে নৌকা চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, গোপালপুরে ধলেশ্বরী থেকে উৎপন্ন গাজীখালী নদী ধামরাই হয়ে সিঙ্গাইরে গিয়ে আবার ধলেশ্বরীতে মিশেছে। কিন্তু নদীতে পানি থাকলেও কচুরিপানার আস্তরণে পানি আর দেখা যায় না চারপাশে শুধু সবুজের জটলা। নাব্যতা না থাকায় নৌপথ বন্ধ হয়ে গেছে। অতিরিক্ত কচুরিপানায় নদীর পানি দূষিত হচ্ছে, মাছ মরে যাচ্ছে, ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। জেলেরা বাধ্য হচ্ছেন পেশা বদলাতে।
দুই দফায় প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নদী খননের প্রকল্প নেওয়া হলেও কোনো সুফল মেলে নি। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, ভুয়া প্রকল্পের নামে টাকা আত্মসাৎ হয়েছে।
সাটুরিয়া বাজারের ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, এক সময় খাদ্যগুদামের সামনে পর্যন্ত ছিল নদী। বড় বড় নৌকা ও স্টিমার চলত। এখন কচুরিপানার কারণে ছোট নৌকাও চলাচল করতে পারে না।
হরগজ গ্রামের আবদুল খালেক বলেন, আগে হাটে আসার একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌকা। খাল-বিল পেরিয়ে গাজীখালী নদী দিয়েই আসতাম। এখন শুধু কচুরিপানার স্তুপ, পানির দেখা নাই।
মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান জানান, তিনি সদ্য যোগদান করেছেন, তাই পূর্বের খনন প্রকল্পের তথ্য ফাইল দেখে বলতে পারবেন। বর্ষায় নদীতে কচুরিপানা থাকেই। শুষ্ক মৌসুমে প্রকৃত অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। তবে বর্তমানে কচুরিপানা অপসারণের কোনো বরাদ্দ বা প্রকল্প নাই।