
জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ বিপর্যয় রোধে সবুজায়নের অভিযান শুরু করেছে জেলা পরিষদ শরীয়তপুর। শুধু গাছ লাগানো নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুস্থ ও বাসযোগ্য পৃথিবী এবং প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। শরীয়তপুরের বিভিন্ন উপজেলা পর্যায়েও একই সঙ্গে এই কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রথম ধাপে প্রতিটি উপজেলায় দেড় হাজার করে ও জেলা সদরের বিভিন্ন সড়ক, মহাসড়ক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপাসনালয় এবং প্রতিষ্ঠানে পনের হাজার ফলদ, ভেষজ ও বনজ গাছের চারা রোপণ করা হবে। এই অর্থ বছরে মোট এক লাখ বৃক্ষরোপণ করা হবে বলে জানায় জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় সদর উপজেলার ১০১নং উত্তর দেওভোগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম। এসময় উপস্থিত ছিলেন- জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমরুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাসুদুল আলম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোস্তফা কামাল হোসেন, নির্বাহী প্রকৌশলী এলজিউডি এসএম রাফেউল ইসলাম ও জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ।
শরীয়তপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নজরুল ইসলাম বলেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে আমরা বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ২০২৫ হাতে নিয়েছি। বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যার মাধ্যমে জীববৈচিত্র সংরক্ষণ ও জেলার পরিবেশগত উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখার লক্ষ্যকে সামনে রেখে এই কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। শুধু সরকারিভাবে নয়, জনসাধারণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা বছর ব্যাপী লক্ষাধিক বৃক্ষরোপণ করব। এই কর্মসূচির মাধ্যমে ফলদ, বনজ এবং ঔষধি গাছের চারা রোপণ করা হচ্ছে। আম, কাঁঠাল, পেয়ারা জাম, পেয়ারা, লিচু, সেগুন, নিম, অর্জুন, নারিকেল, কাঠবাদাম, আমলকী, হরীতকীসহ বিভিন্ন ধরনের গাছের চারা বিতরণ ও রোপণ করা হচ্ছে। এই বৈচিত্রময় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির ফলে একদিকে যেমন স্থানীয় অর্থনীতির অগ্রগতি হবে, তেমনি প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্যও বজায় রাখতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম বলেন, সবুজায়নের অভিযান শুধু একটি স্বল্পমেয়াদি কর্মসূচি নয়, বরং একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। শুধু গাছ লাগলেই হবে না সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে রক্ষণাবেক্ষণ করে গাছের চারাগুলোকে আগামীতে পরিণত গাছে রূপ দিতে আমাদের সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে পরিবেশের মহা বিপর্যয়ের হাত থেকে প্রাণপ্রকৃতিকে সুরক্ষা করতে। আসুন সবুজায়নের মাধ্যমে একটি সুস্থ, সুন্দর ও বাসযোগ্য পরিবেশ নিশ্চিতে ভূমিকা রাখি।