ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

কুমারখালীতে ৭০ বছরেও পাকা হয়নি ১ কিমি. সড়ক

কুমারখালীতে ৭০ বছরেও পাকা হয়নি ১ কিমি. সড়ক

প্রায় ২০ বছর আগে স্থানীয় এক চেয়ারম্যান ইট দিয়ে এইচবিবি (হেরিং বোন বন্ড) করলেও ৭০ বছরেও পাকাকরণ হয়নি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের সোঁপুকুরিয়া মসজিদ মোড় থেকে কাশেমের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কটি। ভোট আসে যায় কিন্তু রাস্তা হয় না। ভোটের সময় আসলেই মেম্বার-চেয়ারম্যানরা বলে, রাস্তা করে দেবো। কিন্তু ভোটের পরে আর খোঁজ নেয় না। গাড়িঘোড়া উল্টে যাচ্ছে। অ্যাক্সিডেন্ট ঘটছে। কত কষ্ট করে যে যাওয়া আসা করে মানুষ!’ কথাগুলো আক্ষেপ করে বলছিলেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের সোঁপুকুরিয়া গ্রামের শহিদুল ইসলামের স্ত্রী ফিরোজা খাতুন।

তিনি আরও বলেন, ‘রাস্তা এত খারাপ যে, ভ্যানের ওপরই ডেলিভারি হয়ে যায়। ফিরোজার কৃষক স্বামী শহিদুল ইসলাম বলেন, ৭০ বছর ধরে রাস্তা খারাপ। কোথাও পাড় ভাঙা, কোনো জায়গায় গর্ত। বৃষ্টি হলে চলাই যায় না। রোগী, ছাওয়াল পাল নিয়ে কষ্টের শ্যাষ নাই। রাস্তাডা পাকা হলেই ভালো হতো। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুমারখালী উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের সোঁপুকুরিয়া মসজিদ মোড় থেকে কাশেমের বাড়ি পর্যন্ত মাত্র এক কিলোমিটার সড়ক। সড়কের দুই পাশে কয়েকশ পরিবারের বসবাস। তবে গত ৭০ বছরেও সড়কটি পাকাকরণ হয়নি। প্রায় ২০ বছর আগে স্থানীয় এক চেয়ারম্যান ইট দিয়ে এইচবিবি (হেরিং বোন বন্ড) করেছিলেন। তবে সংস্কারের অভাবে সড়কজুড়েই খানাখন্দে ভরা। কোথাও ভেঙে গেছে পাড়। অতিরিক্ত ভাড়ায় ভ্যান চললেও যেতে চায় না অ্যাম্বুলেন্সসহ অন্যান্য যানবাহন। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নানা বয়সি শত শত মানুষ। ফলে জরাজীর্ণ সড়কটি পাকাকরণের দাবিতে ৩১ আগস্ট গত রবিবার বিকাল ৫টার দিকে সোঁপুকুরিয়া মসজিদ মোড়ে মানববন্ধন করেন গ্রামবাসী।

গ্রামের বাসিন্দা আবুল প্রামাণিক বলেন, ‘ভালো মানুষই চলতে পারে না। আর আমিতো শারীরিক প্রতিবন্ধী। কষ্টের কথা বলার জায়গা নেই। ভোটের সময় নেতারা আসে। প্রতিশ্রুতি দেয় রাস্তা করে দেবো। ভোট গেলে আর কেউ খোঁজ নেয় না।’ ফারজানা আক্তার নামের একজন গৃহবধূ বলেন, ‘বিয়ের পর ৪০ বছর ধরে দেখছি একই রকম রাস্তা। আপদে-বিপদে একটা ভ্যানও আসতে চায় না। বিয়ের গাড়ি পর্যন্ত উল্টে গেছে এই রাস্তায়। আশপাশের সব রাস্তা পাকা কিন্তু এইডা পাকা হয়না।’ নবম শ্রেণির ছাত্রী রায়শা রহমান বলে, ‘উঁচু-নিচু সড়কে ঝাঁকুনি আর ঝাঁকুনি। বৃষ্টির সময় কাদা-পানি জমে থাকে। দুর্ঘটনা ঘটে, পোশাক নষ্ট হয়। দ্রুত রাস্তাটি কার্পেটিং করার দাবি জানাই।’ গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব আলম মুকুল বলেন, ‘মসজিদ মোড় থেকে কাশেমের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার জরাজীর্ণ সড়ক। এটি দিয়ে ৩ থেকে ৪শ পরিবারের লোকজন ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করে। জনদুর্ভোগ কমাতে সড়কটি কার্পেটিংয়ের দাবিতে মানববন্ধন করেছি। তবে বরাদ্দের অভাবে সড়কটি এতদিনেও পাকাকরণ হয়নি বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী নাজমুল হক। তিনি বলেন, পাকাকরণের জন্য তালিকা পাঠানো হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম মিকাইল ইসলাম বলেন, জনদুর্ভোগ কমাতে ও জনস্বার্থে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সড়কটি পাকাকরণ করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত