ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

জাজিরায় অটোরিকশাচালকের দুই চোখ উপড়ে ফেলার অভিযোগ

জাজিরায় অটোরিকশাচালকের দুই চোখ উপড়ে ফেলার অভিযোগ

মাদক ব্যবসার তথ্য প্রকাশ করে দেওয়ার সন্দেহে শরীয়তপুরের জাজিরায় রমজান মিয়া (৩৮) নামে এক অটোচালকের দুই চোখ উপড়ে ও হাত-পায়ের রগ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে মাদক ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ওই এলাকার এক মাদক ব্যবসায়ির বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। গত শনিবার দুপুরে উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের রুপবাবুরহাট এলাকায় এঘটনা ঘটে। আহত রমজান মিয়াকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল রোববার দুপুরে রমজান মিয়ার স্ত্রী ইসমত আরা বাদী হয়ে এজাহার নামীয় দশ জন ও অজ্ঞাতনামা ১৫ জনকে আসামি করে পদ্মা দক্ষিণ থানায় মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ দুই জনকে আটক করেছে।

পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল শনিবার সকালে জাজিরা উপজেলার দক্ষিণ বাইকশা গ্রামের শফি মোল্লার ছেলে রমজান মোল্লা তার ভাড়ায় চালিত অটোরিকশা নিয়ে জাজিরা থেকে নাওডোবা যাওয়ার পথে একই উপজেলার রুপবাবুর হাট এলাকার সুমন শিকদারসহ ৪-৫ জন মিলে ধরে সুমন শিকদারের বাড়ির পেছনের বাগানে নিয়ে যায়। পরে রমজানের দুই চোখ উপরে ফেলে চার হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়। বিষয়টি স্থানীয়রা টের পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে সুমন শিকদার তার দলবল নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এসময় উত্তেজিত জনতা সুমন শিকদারের বসতবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহত রমজান মিয়াকে উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করে। এ ঘটনায় পুলিশ শাহজান সম্রাট ও জব্বার মিয়া নামের দুই জনকে আটক করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী আবুল হোসেন শিকদার বলেন, আমরা খবর পাই বাঁশঝাড়ে ভিতর এক লোককে মারধর করা হচ্ছে। পরে লোকজন নিয়ে সেখানে গিয়ে দেখি এক লোককে সুমন শিকদারসহ আরও কয়েকজন মারধর করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখেছে। পরে আমাদের দেখে সুমনসহ সবাই দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় শাহজাহানকে আমরা আটক করে পুলশে দিয়েছি। সুমন শিকদার দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় মাদকের ব্যবসা করে আসছে। সুমন সিকদারের বাড়ির পিছনে বাঁশবাগানে নিয়মিত মাদক ও জুয়ার আসর বসায়। সে কারণে আজ বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সুমনের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।

চিকিৎসাধীন রমজান মোল্লা বলেন, আমি অটো নিয়ে নাওডোবা যাওয়ার সময় সুমন শিকদার, সোহেল চাপলাসী, সোহেল চোকিদার, শাহজাহান সম্রাট, বাচ্চু সুমনসহ আরও কয়েকজন মিলে গাড়ি থামিয়ে আমাকে জোর করে বাঁশবাগানে নিয়ে আমার চোখ উঠিয়ে ফেলে ও হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়। সুমন সিকদার দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

আমি পুলিশকে তথ্য দিয়েছি এমন সন্দেহে আামকে এই অবস্থা করেছে। আমি এই মাদক ব্যবসায়ী ও হামলার দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।

পদ্মা দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহম্মেদ পারভেজ সেলিম বলেন, এক ব্যক্তির চোখ উপড়ে ফেলা ও হাত-পায়ের রগ কেটে ফেলা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দু’জনকে আটক করা হয়েছে। বিক্ষুব্ধ জনতা যে বাড়িটি পুড়িয়ে দিয়েছে তার বিরুদ্ধে মাদকসহ প্রায় ২০টি মামলা রয়েছে।

এ ঘটনায় রমজানের স্ত্রী ইসমত আরা বাদী হয়ে এজাহার নামীয় দশ জন ও অজ্ঞাতনামা ১৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে। আমরা আসামিদেরকে গ্রেপ্তার করতে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত