ঢাকা সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

পাথরঘাটায় ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ

পাথরঘাটায় ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ

দীর্ঘদিন পর আবারও সরব হয়ে উঠেছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মাছের বাজার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র (বিএফডিসি)। জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালি ইলিশ। কিন্তু আশার বিপরীতে হতাশা যেন ঘিরে ধরছে সাধারণ ক্রেতাদের। কারণ বাজারে ইলিশের দাম রীতিমতো আকাশ ছোঁয়া। ইলিশ মৌসুম শুরু হলেও প্রথমদিক থেকে জেলেরা তেমন কোনো মাছের দেখা পাননি। এতে জেলে এবং জেলে পরিবারে হতাশা বিরাজ করেছিল। অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটছিল তাদের পরিবারে। হঠাৎ করে জেলেদের জালে ছোট বড় বিভিন্ন আকারে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মাছ পরায় জেলেরা দারুণ খুশি।

স্থানীয় জেলেরা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গভীর সমুদ্রে বড় সাইজের ইলিশ ধরা পড়ছে বেশি। প্রতিদিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত বহু ট্রলার ইলিশ বোঝাই করে ফিরে আসছে বিএফডিসি ঘাটে। তবে বাজারে এসব ইলিশের দাম শুনেই মাথায় হাত ক্রেতাদের। গতকাল শনিবার (১৩-০৯-২৫) দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মৎস বন্দর পাথরঘাটা বিএফডিসি বাজারে মাছের দর পরেছে এক কেজির উপরে একটি ইলিশ মাছ ৩০০০ টাকা কেজি, একটায় এক কেজি ২৫০০ টাকা, দুইটায় এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম ১৩০০ টাকা, তিনটায় এক কেজিও জনের ইলিশের দাম পড়ছে ১০০০ টাকা।

মিজানুর রহমান নামের এক ইলিশ মাছ ক্রেতার সঙ্গে কথা হলে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঘাটে এতো ইলিশ, তবু দাম যেন আমাদের নাগালের মধ্যে নাই। পরিবার নিয়ে একবেলা ইলিশ খেতে চাইলেও তা আমাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। তিনি আরও বলেন ছোটবেলা থেকে জেনে এসেছি ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ কিন্তু এভাবে যদি দাম থাকে একসময় জাতীয় মাছ থেকে এটিকে বাদ দিতে হবে।

ট্রলার মালিক মো. সগির হোসেন বলেন, জ্বালানি তেল, বরফ, রসদ ও শ্রমিকদের মজুরি বাড়ায় খরচও বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে পাইকার ও মধ্যস্বত্ব ভোগীদের দৌরাত্ম্য দাম কিছুটা বেশি হলেও তারা খুব একটা লাভবান হচ্ছেন না।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মতে, সরকার যদি সরবরাহ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য রোধ করতে পারে তাহলে ইলিশের ন্যায্য মূল্য বজায় থাকবে এবং সাধারণ মানুষও ইলিশের স্বাদ নিতে পারবে।

বরগুনা জেলা মৎসজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ছোট বড় ট্রলার মালিকরা গত দুইট্রিপে আট লাখ, দশ লাখ ও পনেরো লাখ টাকা মাছ বিক্রি কররেও তাদের বিগত দিনের লোকসানের টাকা উঠতে আরও অনেক সময় লাগবে। তিনি আরও বলেন, সামনের মাসে ইলিশ মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা আসছে। সে পর্যন্ত সাগরে এভাবে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মাছ ধরা পরতে থাকলে জেলেরা কিছুটা হলেও তাদের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন।

পাথরঘাটা উপজেলা সিনিয়র মৎস কর্মকর্তা মো. হাসিবুল হক বলেন, ইলিশের মৌসুম শুরু হওয়ার প্রথম দিকে সাগরে মাছ কম থাকলেও বর্তমানে সাগরে প্রচুর ইলিশ মাছ ধরা পরছে। আশাকরি এ অবস্থা অব্যহত থাকবে। তিনি আরও বলেন আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এবং প্রায় দুইমাস জেলেরা ঠিকমত অবরোধ পালন করায় গভীর সাগরে ইলিশ মাছের প্রাচুর্যতা তো আছেই তার মধ্যেও মাছের আকার ও একটু বড় দেখা যাচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত