
কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে তাণ্ডবের ঘটনায় এবার দুইটি মামলা হয়েছে। যার একটি বাদি কক্সবাজার জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা আলাউদ্দিন এবং অন্যটির বাদী কক্সবাজার সদর মডেল থানার এসআই রাজীব পাল।
গতকাল রোববার কক্সবাজার সদর মডেল থানায় এই মামলা দুইটি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ফারুক হোসেন।
তিনি জানান, স্টেডিয়ামে ভাঙচুর, আগুন দেওয়াসহ তাণ্ডব চালিয়ে ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় ক্রীড়ার সংস্থার পক্ষে জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা বাদী হয়ে দায়ের করা মামলার এজাহারে দুই জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত দেখানো হয়েছে ৭০০ জনকে। নাম উল্লেখ করে আসামিরা হলেন, টিকেটেরর ইজারাদার ইব্র্রাহিম বাবু ও মুন্না। পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা প্রদানের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে করা মামলায় আসামি অজ্ঞাত এবং সংখ্যা উল্লেখ নেই।
কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলার ছিল গত শুক্রবার। রামু ও টেকনাফ উপজেলা একাদশের মধ্যে বেলা ৩টায় ফাইনাল ম্যাচটি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ৭টা থেকে স্টেডিয়ামে গিয়ে টিকেট সংগ্রহ শুরু করেছে দর্শকরা। এই টিকেটের মূল্য ৫০ টাকা নির্ধারিত থাকলেও দর্শকের উপস্থিত দেখে ক্রমাগত বাড়তে থাকে। দুপুরে ২টা পর্যন্ত আয়োজক কমিটির অতিরিক্ত মূল্যে ধারণ ক্ষমতার ৬ গুণ টিকেট বিক্রি করে দেয়। এতে অসংখ্য দর্শক টিকেট কেটে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে না পারায় উত্তেজিত হয়ে উঠে। অতিরিক্ত দর্শক গ্যালোরিতে বসার স্থান না পেয়ে গেইট ভেঙে আড়াইটার দিকে দর্শক পুরো মাঠ দখল করে নেন। এতে কারণে মাঠে খেলা পরিচালনার সুযোগ না হওয়ায় আয়োজকসহ পুলিশ ও র্যাবসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। কিন্তু দফায় দফায় চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।
এর মধ্যে স্টেডিয়ামে প্রবেশে ব্যর্থ দর্শকরা স্টেডিয়ামের বাইর থেকে ভবনে ভাংচুর শুরু করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এর মধ্যে বিকাল ৫টা ১৫ মিনিটের দেখা মাঠ থাকা দর্শকদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাঠি চার্জ করে বের করে দিতে সক্ষম হয়। এরপর মাঠে খেলা পরিচালনার প্রস্তুতি নিলেও গ্যালোরিতে দর্শক ও বাইরের দর্শকরা এক যোগে হামলা করে গ্যালোরি, মাঠ, প্রেস বক্সসহ সব কিছু ভাংচুর ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এতে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন, পুলিশের ৩ সদস্যসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে।
এর প্রেক্ষিতে ফাইনাল খেলা স্থগিত ঘোষণা করে আয়োজক কমিটি। গত শনিবার দুপুরে কক্সবাজারের ‘বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম’ পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন শাহীনসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন ভাংচুরের পাশাপাশি যে তাণ্ডব চালিয়েছে তা তদন্তে প্রশাসন দুইটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছেন।