ঢাকা সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বাঞ্ছারামপুরে লেবু চাষে বাজিমাত

বাঞ্ছারামপুরে লেবু চাষে বাজিমাত

শুধু বাঞ্ছারামপুর নয়, কৃষি প্রযুক্তি ও আধুনিক লাভজনক কৃষি খামারি হিসেবে পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি পরিচিত মুখ শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মামুন। উপজেলার ছয়ফুল্লাকান্দি ইউনিয়নের ভেলানগর গ্রামে ৭ বিঘা জমিতে লেবুর বাগান শুরু করেন তিনি। পাশাপাশি সাথি ফসল হিসেবে লাউ, শিম, বেগুন, কলা, মাল্টা, কচু, চায়না কমলা, করলাসহ প্রায় ৫০ রকমের সবজি ও ফল চাষ করেছেন। সবকিছু থেকে খরচ মিটিয়ে আয় করছেন মাসে প্রায় লাখ টাকা। জানা গেছে, কৃষক আব্দুল্লাহ আল মামুন পৈতৃক সূত্রে ২ বিঘা জমি পান।

এই জমিতে প্রতিবছর বোরো ধান চাষ করতেন তিনি। ২ বিঘা জমিতে ধানের উৎপাদন খরচ পড়ে ৩৫ হাজার টাকা। ধান উৎপন্ন হতো ৪৫ মণ। প্রতি মণ ১০০০ টাকা হিসাবে ধানের মূল্য দাঁড়ায় মোট ৪৫ হাজার টাকা। উৎপাদন খরচ বাদে আয় হতো ২ বিঘায় মাত্র ১০ হাজার টাকা। অথচ একই পরিমাণ জমিতে লেবুর বাগান করে তিনি মাসে ২০-২৫ হাজার টাকা আয় করেছেন। আব্দুল্লাহ আল মামুনের লেবু বাগান ও কৃষি খামারে গেলে তিনি জানান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি কৃষি কাজ শুরু করেন। কয়েক বছর কচু, শসা, ভুট্টা, ধান চাষ করে তেমন আয় করতে পারেননি তিনি।

পরে নিজ উদ্যোগে প্রথমে ৩ বিঘা জমিতে চায়না-৩ জাতের লেবুর চারা রোপণ করেন। পরে আরও ৪ বিঘা জমিতে লেবুর চারা রোপণ করেন। এছাড়া আধাবিঘা বরইও চাষ করেন। পাশাপাশি কিছু ভুট্টা, দামি জাতের ধান যেমন পাকিস্তানি বাসমতি, কাটারিভোগ ধান ও নাজিরশাইল ধান চাষ করেন। নিজের জমির পাশাপাশি লিজ নেওয়া জমিতে তিনি কৃষি খামার তৈরি করেন। বর্তমানে এখান থেকে যে আয় হয়, সেটি দিয়ে তিনি কৃষি খামারের পরিধি বাড়াচ্ছেন। উদ্যোক্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘শিক্ষকতার পাশাপাশি লেবুর বাগান ও বাড়ির কৃষি খামারে মনোনিবেশ করি। চায়না-৩ লেবু সারা বছর পাওয়া যায়। গত এক মাসে ৩২ হাজার টাকার লেবু বিক্রি করেছি। আরও ৩৫ হাজার টাকার লেবু বিক্রি করতে পারব। অর্থাৎ ২ বিঘা জমিতে গত ৪ মাসে লেবু উৎপাদন হয় প্রায় ৯০ হাজার টাকার। উৎপাদন খরচ হয়েছে খুবই কম। উৎপাদন খরচ বাদে মাসে আয় হয় ১ লাখ টাকার কাছাকাছি। অথচ একই জমিতে বোরো চাষে চার মাসে আয় হয় ১০ হাজার টাকা। ধানের চেয়ে লেবু চাষে লাভ বেশি। লেবুর ফসল হিসেবে শিম ও লাউ চাষ করা হয়েছে। লেবু পাশাপাশি এগুলো থেকেও আয় হবে।’ প্রতিবেশী কৃষক আমান মিয়া বলেন, মামুন মাস্টারের বাহারি ও অফ-সিজনে লাভজনক চাষাবাদ দেখে আমরা অনুপ্রাণিত। আমরা অনেকে তাকে অনুসরণ করছি। বাঞ্ছারামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আ. আল মামুন বলেন, ‘আমি এই উপজেলায় নতুন যোগদান করেই মামুন মাস্টার এর কৃষি চাষের কথা শুনেছি। শীঘ্রই তার চাষাবাদ দেখতে যাব’।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত