ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথ বন্ধ গাছের নিচে পাঠদান

বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথ বন্ধ গাছের নিচে পাঠদান

কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার পাত্রখাতা গ্রামের পূর্ব চর পাত্রখাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার একমাত্র রাস্তাটি বন্ধ হয়ে গেছে বন্দোবস্ত পাওয়া সরকারি জমিতে স্থাপনা নির্মাণের কারণে। পাঁচ বছর ধরে চলা এ ভোগান্তির কোনো সমাধান না পেয়ে শিক্ষকরা বাধ্য হয়ে সড়কের ধারে গাছতলায় পাঠদান শুরু করেছেন। ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়ে বর্তমানে ছয়জন শিক্ষক এবং ১০৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ওয়াবদা খালের বাঁধ ছিল বিদ্যালয়ে যাতায়াতের একমাত্র পথ। দীর্ঘদিন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা এই পথ দিয়েই যাতায়াত করতেন।

গতকাল সরেজমিন দেখা যায়-পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খোলা আকাশের নিচে গাছতলায় ক্লাস করছে কোমলমতি শিশুরা। যে পথ দিয়ে শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেত, সেখানে এখন বসতি স্থাপন করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক শাহ্ আলম বলেন, ১৯৮৮ সালে স্থানীয়দের উদ্যোগে আমরা চারজন শিক্ষক পাঠদান শুরু করি। পরে বিদ্যালয়টি রেজি: প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে চালু থাকে এবং ২০১৩ সালে সরকারি করণ করা হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই স্কুলে যাওয়ার একমাত্র পথ ছিল ওয়াবদা খালের বাঁধ, যা এখন পুরোপুরি বন্ধ।

জানা যায়, সাবেক ইউপি সদস্য সেকেন্দার আলী বিদ্যালয়ের জন্য ৩৫ শতাংশ জমি দান করেন। স্কুলে যাতায়াতের একমাত্র পথ ছিল ৩১৩৫ ও ৩১৩৬ দাগের ওপর দিয়ে যাওয়া বাঁধ। এর মধ্যে ৩১৩৬ দাগ ছিল সরকারি খাসজমি।

২০১৬ সালে অষ্টমীর চরের জাহাঙ্গীর আলম নিজেকে ভূমিহীন দেখিয়ে ৩১৩৬ দাগে ১৫ শতাংশ এবং ৩১৩৭ দাগে ২১ শতাংশ জমি বন্দোবস্ত নেন। সেখানে বসতি গড়ে তোলেন। ফলে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথ সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ হয়ে যায়। ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া খাতুন ও সুম্মা খাতুন বলেন, রাস্তা না থাকায় পাশের দুটি বাড়ির ভেতর দিয়ে যেতে হয়। বাড়ির পাশে বড় গর্ত, বর্ষায় পানি ভরে যায়। ছোটরা ভয় পেয়ে অনেক সময় স্কুলেই আসতে পারে না। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. রিয়াদ বিন রানু জানান, স্বাভাবিক যাতায়াতপথ না থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনই চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে রাস্তায় পাঠদান করছি। অভিযোগ অস্বীকার করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রাস্তা বন্ধ করিনি। রাস্তার জন্য বরাদ্দ এলে প্রয়োজনীয় জায়গা ছেড়ে দিব। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সবুজ কুমার বসাক বলেন, স্কুলের রাস্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়েছে। সরেজমিন প্রতিবেদন পাওয়া গেছে, খুব শিগগিরই স্কুলের জন্য বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত