
বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ দর্শনা কেরুজ চিনিকল। এ বৃহৎ চিনিকলের নতুন আধুনিকায়ন প্রকল্পের ২০২৫-২৬ মাড়াই মৌসুমের ১০২ কোটি ২১ লাখ টাকার কাজের নতুন বয়লিং হাউজের স্লো ফায়ারিংয়ের উদ্বোধন হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দর্শনা কেরুজ চিনিকলের নতুন বয়লিং হাউজের ফ্যাক্টরিতে দোয়া মাহফিল ও বয়লিং হাউসের আগুন নিক্ষেপের মাধ্যমে উদ্বোধন করা হয়। এ দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেরু এ্যান্ড কোম্পানির ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মীর রাব্বিক হাসান। তিনি বলেন, ১৯৩৮ সাল থেকে মিলটি একইভাবে চলছে। তবে মিলটি এরইমধ্যে বিএমআর আইয়ের কাজ চলছে। তাই বয়লিং হাউস মিলের একটি গুরুত্বপুর্ন জায়গা। সেজন্য আমরা পরিক্ষা মৃলকভাবে ১৫/২০ দিন আগে দেখে নিই কোন সমস্যা আছে কি না। যদি সমস্য থাকে তাহলে আমরা দ্রুত সারিয়ে তুলতে পারবো। এরইমধ্যে আমাদের বিএম আর আই প্রকল্পের দ্বীতীয় ধাপের কাজ প্রায় শেষ প্রান্তে। তাই এ বছরই নতুন বয়লিং হাউসে আখ মাড়াই করতে সক্ষম হবো বলে আশা করছি। এ বয়লিং হাউসটি চালু হলে বাংলাদেশ সরকার লাভবান হবে বলে মন্তব্য করেন। ২০১২ সালের কাজ ২ বছরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন জটিলতায় ১৩ বছর লেগে গেছে। তাই নতুন করে বিএমটিএফ, প্রকল্পের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পটি এরইমধ্যে কাজ করে ফেলেছে। আগামী ৫ ডিসেম্বর ২০২৫-২৬ মাড়ই মৌসুমের নতুন বয়লিং হাউস দিয়ে মড়াই যাত্রা শুরু করতে পারবো বলে তিনি আশা করছেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএম আর প্রকল্পের পিডি ফিদা হোসেন বাদশা, বিএমটিএফের ডাইরেক্টর ম্যানেজার বেলায়েত হোসেন, দর্শনা কেরুজ চিনিকলের মহাব্যাবস্থাপক কারখানা সুমন কুমার সাহা, মহাব্যাবস্থাপক কৃষি আশরাফুল আলম ভূইয়া, মহাব্যাবস্থাপক , এডিএম মীর্জা গালিব, মহাব্যাবস্থাপক যন্ত্রাশং ইসমাইল হোসেন মোল্লা প্রমুখ।
উল্লেখ্য, দুই বছর সময় বেঁধে দিয়ে ২০১২ সালে ‘বিএমআর অব কেরু অ্যান্ড কোং (বিডি) লিমিটেড’ নামে প্রকল্পটির অনুমোদন দেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনেক পুরোনো এই চিনিকলটির আধুনিকায়ন এবং আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদন যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপনের লক্ষ্যে তখন খরচ ধরা হয়েছিল ৪৬ কোটি টাকা। কিন্তু সে সময়ে তো হয়নি বরং সাতবার সংশোধন করে সময় বাড়ানো হয় ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত। খরচ দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে দাড়িয়েছে ১০২ কোটি ২১ লাখ টাকায়। তার পরও ১৩ বছরে শেষ হয়নি প্রকল্পটির কাজ। তাই বাকি কাজ শেষ করতে শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হলে সম্প্রতি একনেক সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০২৬ সালের জুনে পুরো কাজ শেষ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত ১৭ আগস্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অষ্টমবারের মতো সংশোধনের অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প কর্পোরেশন (বিএসএফআইসি)।