মধ্যবিত্তকে সুরক্ষার একমাত্র মাধ্যম শিক্ষা। পড়াশোনা ঠিকমতো করলে অন্তত টিউশনি করে হলেও চলা যাবে। আজ যারা দুনিয়াটাকে ফুটবল ভেবে ঠিকমতো পড়াশোনা করছে না, পরীক্ষায় বসছে না কিংবা লাইব্রেরির দিকে হাঁটছে না- তাদের মাত্র বছর পনেরো পরে দেখো। দুনিয়াই তাদের ফুটবল বানাবে। এর ওর কাছে হাত পাতবে, সাহায্য চাইবে, করুণা ভিক্ষা করবে। শিক্ষা বলতে কেবল বই, স্কুল এবং সার্টিফিকেট অর্জনকে বলছি না। দক্ষতা অর্জনে মনোযোগী হওয়া দরকার। পৃথিবীর আগামী হবে দক্ষতানির্ভর। জীবন ও জীবিকার জন্য যে কোনো এক অথবা একাধিক বিষয়ে দক্ষ হতেই হবে। ছাত্রজীবনে পড়াশোনা বাদ দিয়ে উৎসব-উল্লাস করে কাটালে পরিণামে দুঃখ বোধ করতেই হবে। উত্তরাধিকারসূত্রে যদি টাটা-বিরলার সন্তান না হও, তবে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করা উচিত। সম্প্রতি গুলতেকিন খানের একটি লেখার শেষ লাইনে- ‘জীবনে যত ঝড় আসুক, পড়াশোনা শেষ করতেই হবে’- চোখ আটকে গেছে। হৃদয় কেড়ে নিয়েছে এই বাক্যটি। দিনভর ভাবাচ্ছে। বিশ্বের কত দেশের তরুণ-তরুণীরা হাজারো প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষার জন্য দেশে-বিদেশে ছুটছে। অথচ আমাদের দেশে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ প্রায় দুয়ারে দুয়ারে। রাষ্ট্রীয়ভাবে নাগরিক সেবায় নানা সীমাবদ্ধতা থাকলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক এবং শিক্ষা উপকরণে বিশেষ কোনো অপ্রতুলতা নেই। দুঃখ শুধু, শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের আগ্রহ কম। অভিভাবককে লেগে থাকতে হয়, শিক্ষকদের রোজ খোঁজ নিতে হয়- তারপরেও শিক্ষার্থীদের পড়ায় মনোযোগ নেই। আজকালকার শিক্ষার্থীদের দিয়ে রাজ্যের সব কাজ তরানো যায়, কেবল পড়াশোনা বাদে। শহরের গ্রন্থাগারগুলো পাঠকের অভাবে ধুঁকছে, লাইব্রেরিগুলোতে পাঠক গল্প-উপন্যাস খোঁজে না। শিক্ষার্থীরা শ্রেণি-পাঠ্যের গাইড বই ছাড়া অন্য কোনো ভালো বইয়ের নাম জানে না! সারা বাংলাদেশের প্রায় একই চিত্র। ক্লাসে উপস্থিতি নেই। পরীক্ষার খাতা পড়ে নম্বর দিলে পাস করানো কঠিন। হোমওয়ার্ক দিলে সে শিক্ষক অপ্রিয় হয়ে ওঠে।