গণঅভ্যুত্থানের ফলে সৃষ্ট বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান জনবান্ধন করার জন্য সংস্কার করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতা ও বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ (এফবিসিসিআই) সাধারণ ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য সংগঠন বিধি ও এফবিসিসিআইয়ের সংস্কারের জন্য জোরালো ভূমিকা রাখে। সারা দেশের বিভিন্ন চেম্বার ও সব অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করে তাদের কাছ থেকে লিখিত সংস্কার প্রস্তাব গ্রহণ করে। এসব প্রস্তাব প্রশাসক, এফবিসিসিআই ও মহাপরিচালক, বাণিজ্য সংগঠন মহোদয়ের অফিসে জমাদানের পাশাপাশি বিভিন্ন সভা ও সেমিনারে সংস্কারের পক্ষে ব্যবসায়ীদের দিক থেকে জোরালো অবস্থান ব্যক্ত করা হয়।
২০ মে ২০২৫ইং তারিখে সরকার বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা-২০২৫ প্রকাশ করেছেন।
আমরা সাধারণ ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে গণতান্ত্রিক ও ব্যবসায়ীবান্ধব সংস্কার প্রস্তাবমালা বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা-২০২৫কে সাধুবাদ জানাই কেননা এখানে ব্যবসায়ীদের বেশিরভাগ দাবিকে গ্রহণ করা হয়েছে। প্রথমত সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সহ- সভাপতিবৃন্দ সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হবে, ফেডারেশনের পরিচালনা পর্ষদ ৮০ থেকে কমিয়ে ৪৬ জন করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, নতুন নেতৃত্ব বিকাশের জন্য দুইবার নির্বাচনের পর একবার নির্বাচন থেকে বিরতি রাখার বিধান রাখা হয়েছে। যদিও পূর্বে এ নিয়ম ছিল কিন্তু বিগত সময়ে ব্যক্তি স্বার্থ উদ্বারের জন্য একটি সুবিধাবাদী গোষ্ঠী এটি রহিত করছিল।
তৃতীয়ত, সহ-সভাপতির সংখ্যা ও মনোনীত পরিচালকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমানো হয়েছে এবং সর্বক্ষেত্রে নির্বাচনাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র জাতীয় অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে এরকম খাতের কিছু মনোনীত পরিচালক নিয়োগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে বিধিমালাতে।
সর্বোপরি বর্তমান সরকার ব্যবসায়ীবান্ধব সংস্কার প্রস্তাব প্রণয়ন করে ব্যবসায়ের সব খাতে শৃঙ্খলা আনয়নের অভূতপূর্ব কাজ সম্পাদন করেছে।
বিগত বিভিন্ন সময়ে এফবিসিসিআই ও বাণিজ্য সংগঠন বিধি সংস্কারের দাবি জানানো হয়েছে কিন্তু কোনো সরকারই ব্যবসাবান্ধব বাণিজ্য সংগঠন বিধি প্রণয়ন করেনি। সব সরকারই লেজুড়বৃত্তি করে এমন ব্যবসায়ী নেতৃত্ব গঠনের দিকে মনোনিবেশ করেছে।
আমরা বিশ্বাস করি এ বিধিমালা বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিতামূলক ফেডারেশন গঠিত হবে এবং ৪.৫ কোটি ব্যবসায়ীদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। আমাদের সবার উচিত সে উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করা এবং বিধিমালাকে সাধুবাদ জানানো। কেননা ২০০০ শহিদের আত্মত্যাগ ও প্রায় ৪৫,০০০ আহতের রক্তের বিনিময়ে আমরা সংস্কারকে বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।
লেখক : আহ্বায়ক, মিডিয়া ও লিয়াজোঁ কমিটি, বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ ( এফবিসিসিআই)