প্রিন্ট সংস্করণ
০০:০০, ০১ জানুয়ারি, ২০২৬
একটি রাষ্ট্রের উন্নয়ন শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, উঁচু ভবন বা অবকাঠামোর বিস্তারে পরিমাপ করা যায় না। প্রকৃত উন্নয়নের মূল সূচক হলো- রাষ্ট্র তার নাগরিকদের কতটা সুস্থ, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন দিতে পারছে। এই বিবেচনায় স্বাস্থ্য খাত বরাবরই রাষ্ট্রীয় সক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতার সবচেয়ে স্পষ্ট প্রতিচ্ছবি। বিদায়ী ২০২৫ সালও সেই বাস্তবতাই নতুন করে সামনে এনেছে। এই বছর স্বাস্থ্য খাত একদিকে কিছু অগ্রগতির সাক্ষী হয়েছে, অন্যদিকে পুরোনো সংকট ও কাঠামোগত ব্যর্থতাও আরও দৃশ্যমান হয়েছে।
২০২৫ সালের প্রাপ্তি- অগ্রগতি আছে, কিন্তু সীমিত : ২০২৫ সালে স্বাস্থ্য খাতে কিছু ইতিবাচক অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেছে, যা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। বিশেষ করে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবার প্রসার উল্লেখযোগ্য।
অনলাইন পরামর্শ, অ্যাপয়েন্টমেন্ট ব্যবস্থা, ডিজিটাল রিপোর্ট এবং টেলিমেডিসিন সেবার ব্যবহার আগের তুলনায় বেড়েছে। এতে শহরের পাশাপাশি কিছু প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষও প্রাথমিক চিকিৎসা পরামর্শ পাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। যদিও এই সেবার বিস্তৃতি এখনও সীমিত, তবুও এটি স্বাস্থ্যসেবার ভবিষ্যৎ রূপান্তরের একটি ইঙ্গিত বহন করে। এ ছাড়া মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য কার্যক্রমে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে। টিকাদান কর্মসূচি, প্রসবপূর্ব সেবা এবং কমিউনিটি পর্যায়ের সচেতনতা কার্যক্রমের ফলে বড় ধরনের অবনতি এড়ানো গেছে। স্বাস্থ্য সূচকে স্থবিরতা নয়, স্থিতিশীলতা বজায় রাখাও একটি অর্জন- ২০২৫ সালে সে জায়গায় পুরোপুরি ব্যর্থতা দেখা যায়নি। আরেকটি ইতিবাচক দিক হলো স্বাস্থ্য বিষয়ে সামাজিক সচেতনতার বৃদ্ধি। খাদ্যাভ্যাস, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের মতো বিষয়গুলো আগের চেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে। গণমাধ্যম ও সামাজিক পরিসরে স্বাস্থ্য এখন আর প্রান্তিক কোনো বিষয় নয়; এটি দৈনন্দিন আলাপের অংশ হয়ে উঠছে- যা দীর্ঘমেয়াদে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
তদুপরি, সরকার কিছু ক্ষেত্রে সংক্রমণ রোগ নিয়ন্ত্রণে উন্নতি দেখিয়েছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা, ডেঙ্গু ও টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য রোগের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে। যদিও অঞ্চলভিত্তিক চ্যালেঞ্জ এখনও আছে, তবু এ ধরনের উদ্যোগ জনস্বাস্থ্যের জন্য নিঃসন্দেহে সাফল্য।
২০২৫ সালে জনসাধারণের স্বাস্থ্য সচেতনতার বৃদ্ধি Noticeable। স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে এবং সামাজিক সংস্থা ও এনজিওগুলো কমিউনিটি লেভেলে সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। মানুষ এখন খাদ্য, পরিশ্রম ও মানসিক সুস্থতার দিকে আগের চেয়ে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে।
ব্যর্থতার বাস্তবতা- যেখানে হতাশা গভীর : তবে ২০২৫ সালের সামগ্রিক চিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সাফল্যের চেয়ে ব্যর্থতার জায়গাগুলোই বেশি দৃষ্টি কেড়েছে। সবচেয়ে বড় সংকট ছিল সরকারি স্বাস্থ্যসেবার মান ও ব্যবস্থাপনা। রোগীর চাপ, চিকিৎসক ও নার্স সংকট, প্রয়োজনীয় ওষুধের অভাব এবং প্রশাসনিক দুর্বলতা সরকারি হাসপাতালগুলোকে সাধারণ মানুষের আস্থার জায়গা হিসেবে গড়ে উঠতে দেয়নি। অনেক ক্ষেত্রে বিনামূল্যের চিকিৎসা নামমাত্র থাকলেও বাস্তবে রোগীদের অতিরিক্ত ব্যয় বহন করতে হয়েছে, যা স্বাস্থ্যসেবার মৌলিক দর্শনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আরেকটি বড় ব্যর্থতা হলো চিকিৎসা ব্যয়ের লাগামহীন বৃদ্ধি। বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসার খরচ মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের মানুষের জন্য অসহনীয় হয়ে উঠেছে। এই খাতে কার্যকর নজরদারি ও স্বচ্ছ নীতিমালার অভাব স্বাস্থ্যসেবাকে মানবিক অধিকার থেকে ধীরে ধীরে লাভনির্ভর পণ্যে পরিণত করছে।
২০২৫ সালেও মানসিক স্বাস্থ্য অবহেলার তালিকায় রয়ে গেছে। সামাজিক চাপ, কর্মজীবনের অনিশ্চয়তা, পারিবারিক টানাপড়েন এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ- সব মিলিয়ে মানসিক সমস্যার বিস্তার ঘটলেও সে অনুযায়ী চিকিৎসা ও সহায়তা কাঠামো গড়ে ওঠেনি। প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, কাউন্সেলিং সেবা ও সামাজিক সচেতনতার অভাব এই সংকটকে আরও জটিল করেছে। এ ছাড়া গ্রাম ও শহরের স্বাস্থ্যসেবার বৈষম্য আগের মতোই প্রকট। শহরকেন্দ্রিক উন্নত চিকিৎসা ও বিশেষজ্ঞ সেবার বিপরীতে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী এখনও প্রাথমিক সেবার সীমাবদ্ধতায় আটকে আছে। এই বৈষম্য শুধু চিকিৎসার নয়, এটি সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রশ্নও বটে।
তাছাড়া, পরিবেশগত ও আবহাওয়া সম্পর্কিত স্বাস্থ্যঝুঁকি ২০২৫ সালে আরও প্রকট হয়েছে। শীতকালে শ্বাসকষ্ট ও ফুসফুসজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে, নদী-নালা ও পানির দূষণ জলজ সংক্রমণ বাড়িয়েছে। নগরায়ণ ও শিল্পায়নের সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবার সামঞ্জস্য না থাকায় এসব ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে আনাও ব্যর্থতার অন্তর্ভুক্ত।
২০২৫ সালে অপ্রত্যাশিত মহামারি প্রস্তুতি ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা যথাযথ হয়নি। রোগ শনাক্তকরণ, আক্রান্তদের চিকিৎসা ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে দীর্ঘ দেরি স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়েছে। এই বিষয়গুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে ২০২৬ সালে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য।
২০২৫ থেকে শিক্ষা- কেন আমরা পিছিয়ে পড়ছি : ২০২৫ সাল আমাদের একটি বিষয় স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছে- স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়ন শুধু অবকাঠামো নির্মাণ বা প্রযুক্তি সংযোজনের মাধ্যমে সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন দক্ষ ব্যবস্থাপনা, নৈতিকতা, জবাবদিহি এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি।
এ বছর এটিও পরিষ্কার হয়েছে যে প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে অবহেলা করে চিকিৎসা ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। অসুস্থ হওয়ার পর ব্যয়বহুল চিকিৎসার চেয়ে সুস্থ থাকার পরিবেশ তৈরি করাই দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর ও টেকসই সমাধান। খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক চর্চা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, পর্যাপ্ত পানি ও বিশ্রাম- এই মৌলিক বিষয়গুলোতে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি করাই ২০২৬-এর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য।
রোগীর অধিকার ও জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটির দাবি : ২০২৫ সালের চ্যালেঞ্জ এবং স্বাস্থ্য খাতের সীমাবদ্ধতা তুলে ধরে জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি এর মধ্যেই কিছু সুপারিশ ও দাবি উত্থাপন করেছে। তাদের মতে, রোগীরা শুধু চিকিৎসা গ্রহণের সুবিধা পাবেন না, তাদের মানবিক অধিকার ও নিরাপত্তাও নিশ্চিত হতে হবে। সোসাইটির দাবির মূল বিষয়গুলো হলো- প্রথমত, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীর জন্য স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং সুরক্ষিত চিকিৎসা পরিবেশ নিশ্চিত করা। রোগীকে যে কোনো সময়ে তার চিকিৎসার সংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার অধিকার থাকা উচিত, যাতে অপ্রয়োজনীয় খরচ ও চিকিৎসার অপব্যবহার এড়ানো যায়।
দ্বিতীয়ত, হাসপাতালগুলোতে নির্দিষ্ট রোগী কল্যাণ অফিস ও অভিযোগ সমাধান সিস্টেম চালু করা। রোগীরা যাতে যেকোনো অসুবিধা বা অবহেলার বিষয়ে সরাসরি আবেদন করতে পারেন এবং তা দ্রুত সমাধান হয়।
তৃতীয়ত, অসহায় ও নিম্নআয়ের রোগীদের জন্য প্রণোদনা ও আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করা। এ ধরনের সহায়তা শুধু চিকিৎসা ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করবে না, বরং স্বাস্থ্যসেবাকে মানুষের মৌলিক অধিকার হিসেবে পুনঃস্থাপন করবে।
চতুর্থত, মানসিক স্বাস্থ্য ও প্রিভেন্টিভ মেডিসিনের গুরুত্ব বৃদ্ধিতে সামাজিক সচেতনতা কর্মসূচি শুরু করা। রোগীরা যাতে মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে জানেন এবং প্রাথমিক সহায়তা পান। জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি মনে করায়, রোগীর অধিকার ও সেবার মান বৃদ্ধিই স্বাস্থ্য খাতের প্রকৃত উন্নয়নের সূচক। এজন্য সরকার, স্বাস্থ্যকর্মী ও নাগরিকদের যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজন।
২০২৬ : সংশোধনের সুযোগ, নাকি পুরোনো ভুলের পুনরাবৃত্তি: নতুন বছর ২০২৬ আমাদের সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন দাঁড় করিয়েছে- এই বছর কি স্বাস্থ্য খাতে বাস্তব পরিবর্তনের সূচনা হবে, নাকি আগের বছরের সীমাবদ্ধতাগুলোই ঘুরে ফিরে আসবে?
১. সবার জন্য ন্যায্য ও মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে জেলা হাসপাতাল পর্যন্ত একটি কার্যকর ও সমন্বিত রেফারেল ব্যবস্থা গড়ে তোলা ছাড়া রোগীর ভোগান্তি কমানো সম্ভব নয়।
২. চিকিৎসা ব্যয় নিয়ন্ত্রণে কার্যকর নজরদারি ও নীতিমালা বাস্তবায়ন। ওষুধের দাম, পরীক্ষা-নিরীক্ষার খরচ এবং বেসরকারি হাসপাতালের চার্জে স্বচ্ছতা না এলে স্বাস্থ্য খাত সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাবে।
৩. মানসিক স্বাস্থ্যকে মূলধারার স্বাস্থ্যনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা। প্রতিটি জেলা ও বড় উপজেলা পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা, প্রশিক্ষিত কাউন্সেলর এবং জনসচেতনতা কর্মসূচি চালু করা ছাড়া এই নীরব সংকট মোকাবিলা সম্ভব নয়।
৪. স্বাস্থ্যকর্মীদের মর্যাদা, নিরাপত্তা ও প্রণোদনা নিশ্চিত করা। চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা যদি নিরাপদ ও সম্মানজনক কর্মপরিবেশ না পান, তবে মানসম্মত সেবা প্রত্যাশা করা বাস্তবসম্মত নয়।
৫. শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও কমিউনিটি পর্যায়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা, খাদ্যাভ্যাস ও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা- এসব পদক্ষেপ দীর্ঘমেয়াদে রোগপ্রতিরোধ ও স্বাস্থ্য খাতের ব্যয় নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।
৬. প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ও জরুরি সেবা উন্নয়ন। রোগ শনাক্তকরণ, মহামারি প্রতিরোধ, হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা এবং জরুরিসেবার দক্ষতা বৃদ্ধি ২০২৬ সালে অপরিহার্য।
নাগরিক ও গণমাধ্যমের ভূমিকা : স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়। নাগরিকদেরও দায়িত্ব রয়েছে সচেতন জীবনযাপন, অপ্রয়োজনীয় ওষুধ ব্যবহার পরিহার এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলার ক্ষেত্রে। গণমাধ্যমের দায়িত্বও গুরুত্বপূর্ণ। তথ্যভিত্তিক, দায়িত্বশীল ও গুজবমুক্ত স্বাস্থ্য সাংবাদিকতা নিশ্চিত করা, জনগণকে সঠিক তথ্য দেওয়া এবং ভুয়া চিকিৎসা প্রচার রোধ করা- এসব পদক্ষেপ স্বাস্থ্য খাতের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
পরিশেষে বলতে চাই, ২০২৫ সাল আমাদের দেখিয়েছে- স্বাস্থ্য খাতে আমরা কোথায় এগিয়েছি এবং কোথায় পিছিয়ে পড়েছি। প্রযুক্তি, জনসচেতনতা এবং কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে সফলতা থাকলেও অব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্য বৈষম্য এবং মানসিক স্বাস্থ্য অবহেলা বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। ২০২৬ সাল সেই ভুলগুলো সংশোধনের সুযোগ এনে দিয়েছে। রোগীর অধিকার রক্ষা, স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ এবং সচেতনতা বৃদ্ধি- এই তিনটি ক্ষেত্রে যদি সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তবে ২০২৬ সত্যিকার অর্থেই একটি সুস্থ, সচেতন ও দায়িত্বশীল সমাজ গঠনের বছর হয়ে উঠবে।
ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
লেখক, কলাম লেখক ও গবেষক, প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি