ঢাকা শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ঝিনাইদহে তিন জনকে হত্যা, দায় স্বীকার করে এসএমএস

ঝিনাইদহে তিন জনকে হত্যা, দায় স্বীকার করে এসএমএস

নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কথিত সামরিক কমান্ডার হানিফ তার দুই সঙ্গীসহ খুন হয়েছেন। গত শুক্রবার রাতে প্রতিপক্ষ বন্দুকধারীরা তাদের হত্যা করে। খবর পেয়ে পুলিশ রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ত্রিবেনী ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর শ্মশান ঘাট এলাকার একটি ক্যানালের পাশ থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে। তিনজনের মাথায় গুলির চিহ্ন রয়েছে। পাশে দুইটি মোটরসাইকেল ও নিহতদের ব্যবহৃত হেলমেট পড়ে ছিল। হত্যার দায় স্বীকার করে ‘জাসদ গণবাহিনীর কালু’ পরিচয় দিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠানো হয়েছে। নিহতদের মধ্যে দুইজনের পরিচয় মিলেছে। এরা হলেন- হরিণাকুন্ডু উপজেলার আহাদনগর গ্রামের রাহাজ উদ্দীনের ছেলে শতাধিক হত্যা মামলার আসামি হানিফ আলী (৫২) ও তার শ্যালক শ্রীরামপুর গ্রামের উম্মাদ আলীর ছেলে লিটন (৩৫)। বাকি একজনের পরিচয় মেলেনি। শৈলকুপা থানার ওসি মাসুম খান খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এরই মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাতে এই এলাকায় তারা একাধিক গুলির শব্দ শুনতে পান। পরে তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ইবি থানার পিয়ারপুর ও শৈলকুপায় রামচন্দ্রপুর গ্রামের মাঠের মধ্যে শ্মশানঘাট এলাকায় তিনজনকে গুলি করে হত্যার পর ফেলে রাখা হয়েছে। তারা এগিয়ে গিয়ে দেখতে পান তিনজনের মৃতদেহ পড়ে আছে। পাশে তাদের ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল পড়ে আছে। যার নম্বর চুয়াডাঙ্গা ল ১২-০১২৩। এলাকার বাসিন্দারা আরো জানান, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে হরিণাকুন্ডু উপজেলার আহাদনগর গ্রামের হানিফ আলী, তার শ্যালক লিটন হোসেন রয়েছেন। একজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি। তারা সবাই চরমপন্থি দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। একইস্থানে ২০০৩ সালের ৫ ডিসেম্বর পাঁচজনকে হত্যা করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত হানিফ মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি ছিলেন। হরিণাকুন্ডু উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের আব্দুর রহমান হত্যা মামলায় তার ফাঁসি আদেশ হয়। উচ্চ আদালতেও ফাঁসির রায় বহাল থাকলে হাসিনা সরকারের সময় প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদের বিশেষ ক্ষমা নিয়ে এলাকায় ফিরে আসেন হানিফ এবং মৎস্যজীবী লীগের উপজেলা কমিটির সহ-সভাপতি নিযুক্ত হন। আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেন। আওয়ামী সরকারের পতনের পর হানিফ আরো একটি রাজনৈতিক দলের ব্যানারে ফিরে আসার চেষ্টা করেন। এদিকে হত্যার দায় স্বীকার করে ‘জাসদ গণবাহিনীর কালু’ পরিচয় দিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠানো হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় দাবি করা হয় ‘এতদ্বারা ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, কুষ্টিয়া, যশোর ও খুলনাবাসীর উদ্দেশ্যে জানানো যাইতেছে যে, পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি নামধারী কুখ্যাত ডাকাত বাহিনীর শীর্ষ নেতা অসংখ্য খুন, গুম, দখলদারি, ডাকাতি, ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত হরিনাকুন্ডু নিবাসী মো. হানিফ তার দুই সহযোগীসহ জাসদ গণবাহিনীর সদস্যদের হাতে নিহত হয়েছেন। তাদের লাশ রামচন্দ্রপুর ও পিয়ারপুর ক্যানালের পাশে রাখা আছে। অত্র অঞ্চলের হানিফের সহযোগীদের শুধরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হলো অন্যথায় আপনাদের একই পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে। কালু জাসদ গণবাহিনী।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত