ঢাকা শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

দেড় যুগ পর চাকরিতে ইসির ৮৫ কর্মকর্তা

দেড় যুগ পর চাকরিতে ইসির ৮৫ কর্মকর্তা

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ৮৫ জ্বন কর্মকর্তার চাকরি ফেরত পাওয়ার দিনেই বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ৬৯ জ্বন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শোকজ্ব করেছে নাসির উদ্দিন কমিশন। ফলে এ বিষয়টি নিয়ে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেলেও অনেকে আতঙ্কিত ছিল।

জানা যায়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে চাকরিচ্যুত ৮৫ জ্বন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে চাকরি ফেরত দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে চাকরিতে বহাল করে তাদের সব সুযোগ-সুবিধা দিতে বলা হয়েছে। এই ৮৫ জ্বনের মধ্যে এরইমধ্যে মারা যাওয়া তিন কর্মকর্তার পরিবারকে আইন অনুযায়ী প্রাপ্য সব সুবিধা দিতে বলা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করে। আলতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী, সালাউদ্দিন দোলন, রুহুল কুদ্দুস কাজ্বল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি আপিল পুনর্বিবেচনার আবেদন শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জ্বন্য মঙ্গলবার দিন ঠিক করেছিল আপিল বিভাগ। মামলার নথি অনুযায়ী যায়, ২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ৩২০ জ্বনকে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে অস্থায়ীভাবে নির্বাচিত করা হয়।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ের এই নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক উঠলে ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ৩২০ জ্বনের মূল্যায়ন পরীক্ষা নেয়া হয়। তাদের মধ্যে ৮৫ জ্বনকে একই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর চাকরিচ্যুত করা হয়। এর বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত প্রার্থীরা মামলা করলে ২০০৯ সালের ২৩ মার্চ তা খারিজ্ব করে রায় দেয় প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল। এর বিরুদ্ধে তারা আপিল করেন। ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল ৮৫ কর্মকর্তার আপিল মঞ্জুর করে চাকরিতে পুনর্বহালের পক্ষে রায় দেয়।

প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ চারটি লিভ টু আপিল করে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ২০১০ সালের ২৯ এপ্রিল আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে এবং বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জ্বন্য পাঠায়।

এর ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে সরকার পৃথক আপিল করে। সরকারের করা আপিলগুলো মঞ্জুর করে ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর রায় দেয় আপিল বিভাগ। ওই রায়ে ৮৫ কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহালের আদেশ দিয়ে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল দেয়া রায় বাতিল করা হয়।

আপিল বিভাগের ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর দেয়া রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে ২০২৩ সালে পৃথক পাঁচটি আবেদন করেন চাকরিচ্যুত ব্যক্তিরা। শুনানি নিয়ে একটি রিভিউ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ গত বছরের ৬ নভেম্বর তাদের আপিলের অনুমতি দেয়।

সেই সঙ্গে এই আপিলের (রিভিউ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত) সারসংক্ষেপ চার সপ্তাহের মধ্যে দিতে আবেদনকারীপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়।

ওই আপিলের সঙ্গে অপর চারটি রিভিউ আবেদনও শুনানিতে রাখার কথা আদেশে বলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার রায় দেয়া হলো।

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের জ্বনবল শাখার উপসচিব খোরশেদ আলম এই ৬৯ জ্বনকে আলাদা আলাদা শোকজ্ব করেন। অফিসে বিলম্বে উপস্থিতির জ্বন্য এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারণ দর্শানো চিঠি দেন।

চিঠিতে বলা হয়, বিলম্বে অফিসে উপস্থিতির কারণে সরকারি কর্মচারী (নিয়মিত উপস্থিত) বিধিমালা, ২০১৯-এর বিধি ৫ অনুসারে কেন আপনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার ব্যাখ্যা অদ্য বিকাল ৩:৩০টার মধ্যে দাখিল করার জ্বন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

জ্বনবল শাখার উপসচিব খোরশেদ আলমের কাছে জ্বনাতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারব না। আপনি অতিরিক্ত সচিব স্যারের সাথে কথা বলেন।

কতজ্বন কর্মকর্তা ও কতজ্বন কর্মচারীকে শোকজ্ব করা হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব কেএম আলী নেওয়াজ্ব বলেন, আমি মিটিংয়ে আছি। রেকর্ড দেখে বলতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত