ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

দ্রুত নির্বাচনে জোর বিএনপির

দ্রুত নির্বাচনে জোর বিএনপির

জরুরি ন্যূনতম সংস্কার সম্পন্ন করে দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল প্রাঙ্গণে বর্ধিত সভার আয়োজন করে দলটি। চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে অবস্থান করায় সেখান থেকেই দলের বর্ধিত সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এছাড়াও যুক্তরাজ্য থেকে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বর্ধিত সভায়ও দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতি জোর দেয় দলটির সিনিয়র নেতারা।

গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে সর্বশক্তি নিয়োগ করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেছেন, এখনো ফ্যাসিস্টদের দোসর ও বাংলাদেশের শত্রুরা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্জন নস্যাৎ করতে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। গতকাল দুপুরে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি দলের বর্ধিত সভায় যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তার এ বক্তব্য আগে থেকে ধারণ করা ছিল। সেটিই সভায় প্রচার করা হয়। বেগম খালেদা জিয়া এখন চিকিৎসার জন্য লন্ডনে আছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল প্রাঙ্গণে শুরু হয় বিএনপির বর্ধিত সভা। এ সভায় ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও। ২০১৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে বিএনপির সর্বশেষ বর্ধিত সভা হয়, যেখানে বেগম খালেদা জিয়া সভাপতিত্ব করেছিলেন।

জনগণকে সম্পৃক্ত করে ‘ঐক্যবদ্ধ বিএনপি’ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বেগম খালেদা জিয়া বলেন, দেশ এখন সংকটকাল অতিক্রম করছে। ফ্যাসিস্ট সরকার বিদায় নিয়েছে। রাষ্ট্র মেরামতের ন্যূনতম সংস্কার শেষ করে গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে যেতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করা উচিত। বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ বিশেষ করে তরুণ সমাজ আজ এক ইতিবাচক গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সংকীর্ণতা ভুলে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের কাজ করতে হবে। এখনো ফ্যাসিস্টদের দোসররা এবং বাংলাদেশের শত্রুরা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্জনকে নস্যাৎ করার জন্য গভীর চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। আমি যুক্তরাজ্য থেকে অসুস্থ অবস্থায় আপনাদের আহ্বান জানাতে চাই, আসুন জনগণকে সম্পৃক্ত করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে পূর্বের ন্যায় আন্দোলন, সংগ্রাম ও রাষ্ট্র পরিচালনার নেতৃত্ব প্রদানে আরও ঐক্যবদ্ধ এবং সুসংহতভাবে গড়ে তুলি।

বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণে বেগম খালেদা জিয়া পরামর্শ রেখে বলেন, ইস্পাত কঠিন ঐক্যের মাধ্যমে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ওদের চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দিতে হবে, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। আসুন আমরা আগামী দিনগুলোতে শহীদ জিয়াউর রহমানের স্বপ্নের আধুনিক সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য আমাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করি এবং এতো ত্যাগের বিনিময়ে এই অর্জনকে সুসংসহ এবং ঐক্যকে আরও বেগবান করি। প্রতিহিংসা প্রতিশোধ নয় বলে জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আপনাদের মাধ্যমে ছাত্র-যুবকসহ দেশবাসীর কাছে আহ্বান রাখতে চাই, আসুন প্রতিহিংসা প্রতিশোধ নয় পারস্পরিক ভালোবাসা ও ভ্রাতৃত্বের মাধ্যমে আমরা সবাই মিলে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটি বাসযোগ্য উন্নত ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করি।

লন্ডনে নিজের ছেলে তারেক রহমানের বাসায় লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়া চিকিৎসাধীন আছেন। গত ৭ জানুয়ারি তাকে কুয়েতের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডন নিয়ে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তারেক রহমানের বাসায় চিকিৎসা নেয়ার জন্য ছাড়পত্র দেয়। বেগম খালেদা জিয়া বলেন, দীর্ঘ ৬ বছর পর নেতৃবৃন্দ আবার একসাথে ফ্যাসিস্টমুক্ত বাংলাদেশে একত্রিত হয়েছে। সেজন্য আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া আদায় করছি। দীর্ঘ ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামে যারা শহিদ হয়েছেন এবং সম্প্রতি জুলাই-আগস্টের ফ্যাসিবাদী শাসনের নির্মম ভয়াবহ দমননীতির কারণে গণহত্যায় যারা শহিদ হয়েছেন তাদের প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। যারা আহত হয়েছেন তাদের প্রতি জানাচ্ছি আন্তরিক সমবেদনা। আমি চিকিৎসার কারণে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করলেও আমি সব সময় আপনাদের পাশেই আছি। দীর্ঘ ১৫ বছর গণতন্ত্রের জন্য, আমার মুক্তির জন্য আপনারা যে নিরন্তর সংগ্রাম করেছেন এবং আমাদের অসংখ্য সহকর্মী প্রাণ দিয়েছেন, জুলুমণ্ডনির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং প্রায় সোয়া লক্ষ মিথ্যা মামলায় জর্জরিত হয়েছেন এখনও তারা আদালতের বারান্দায় ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আপনাদের শুধু দল নয়, জাতি চিরকাল স্মরণ রাখবে।

ন্যূনতম সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনই জনপ্রত্যাশা বলে মন্তব্য করে বেগম খালেদা জিয়া বলেন, দেশ আজ এক সংকট সময় অতিক্রম করছে। আপনাদের এবং ছাত্রদের সমন্বিত আন্দোলনের ফলে ফ্যাসিস্ট শাসকরা বিদায় নিয়েছে। একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাদের কাছে জনগণের প্রত্যাশা রাষ্ট্র মেরামতের ন্যূনতম সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার জন্য সবার কাছে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্পন্ন করা।

নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ কাজ করার পরামর্শ দিয়ে বেগম খালেদা জিয়া বলেন, আমার অবর্তমানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এবং আপনাদের সবাইকে নিয়ে নিরন্তর কাজ করে দলকে সুসংহত করেছেন এজন্য আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি বিশ্বাস করি, আপনারা শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে আগামী নির্বাচনের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন। এমন কোনো কাজ করবেন না যাতে আপনাদের এতো দিনকার সংগ্রাম আত্মত্যাগ বিফলে যায়। আমাদের সবসময় শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সেই উক্তি মনে রাখা দরকার- ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ।

সকাল ১১টায় সংসদ ভবনের এলডি হলের মাঠে বিএনপির এই বর্ধিত সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, লন্ডন থেকে তিনি ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। সারা দেশের তৃণমূল থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরের ৪ হাজার নেতা এই বর্ধিত সভায় অংশ নেন। বেগম খালেদা জিয়া যখন বক্তব্য দিচ্ছেন তখন পাশে ভার্চুয়ালি বসেছিলেন তারেক রহমান। দলের চেয়ারপারসনের বক্তব্যের সময় তৃণমূলসহ সিনিয়র নেতারা থেকে নেত্রীর কথা শুনতে দেখা যায়।

প্রধান অতিথি হিসেবে খালেদা জিয়ার বক্তব্যের আগে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বক্তব্য রাখেন। তিনি দলের চেয়ারপারসনের অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে বলেন, বিএনপির সর্বশেষ বর্ধিত সভা হয়েছিল ২০১৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি। সেই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাদার অব ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়া। ফ্যাসিবাদী শাসনকালে এরপর আর বিএনপির বর্ধিত সভা বা কাউন্সিল করা সম্ভব হয়নি। চিকিৎসাধীন থাকায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এই গুরুত্বপূর্ণ সভায় উপস্থিত থাকতে পারেনি। তবে এই সভার সাফল্য কামনা করেছেন। তিনি আপনাদের কাছে দোয়া চেয়েছেন। দেশনেত্রীর শারীরিক সুস্থতার জন্য আমরা আল্লাহর দরবারে দোয়া কামনা করছি।

এদিকে জাতীয় নির্বাচনের জন্য ‘বিএনপিকে প্রস্তুত’ করতে নেতাদের প্রতি আহ্বান জানালেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, মাফিয়া প্রধানের পালানোর পর দেশে বর্তমানে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে এসেছে। জাতীয় নির্বাচনের সময় হয়তো ঘনিয়ে আসছে। সারা দেশে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মী-সমর্থক-শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি আমার আহ্বান আপনারা শৃঙ্খলাবদ্ধ থাকুন, আপনারা যে কোনো মূল্যে ঐক্যকে ধরে রাখুন। দেশবাসীর উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, আমি গণতন্ত্রকামী দেশবাসীর উদ্দেশে একটি বার্তা দিয়ে বলতে চাই, বিএনপি শুধুমাত্র আপনাদের ভোটের পুনরুদ্ধারই নয়, আপনাদের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে চায়। আপনাদের সমর্থন পেলে বিএনপি এমন একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যে সরকার আপনার কাছে, আপনাদের কাছে তথা দেশবাসীর কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে। আমি বিএনপির পক্ষ থেকে জনগণের সমর্থন চাই, চাই সবার সহযোগিতা।

শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের বিএনপি প্রশ্রয় দেয় না জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, আমি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের একটি বার্তা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই... তিনি বলেছিলেন, ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। দলের প্রতি আপনার, আপনাদের প্রতিটি নেতাকর্মীর দীর্ঘদিনের সীমাহীন ত্যাগ-তিতিক্ষা আমি গভীরভাবে উপলব্ধি করি। তারপরও যারা দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণ হবেন ব্যক্তির চেয়ে দলের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে আমাকে বাধ্য হয়েই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হয়েছে, নিতে হবে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ কিংবা দলের ইমেজ ক্ষুণ্ণ হয় এমন কোনো কাজকে বিএনপি বিন্দুমাত্র প্রশ্রয় দেবে না। তিনি বলেন, জনগণই বিএনপির সকল রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস। বিএনপি জনগণকে বিশ্বাস করে, জনগণও বিএনপিকে বিশ্বাস করে। সুতরাং আপনার প্রতি, আপনাদের প্রতি বিএনপির প্রতি জনগণের এই ভালোবাসার প্রতিদান দিতে আপনারা জনগণের সঙ্গে থাকুন, জনগণকে সঙ্গে রাখুন। বাংলাদেশে গণতন্ত্র এবং বিএনপি সমার্থক। দেশের গণতন্ত্র থাকলে বিএনপি থাকে, গণতন্ত্র বিপন্ন হলে বিএনপির স্বার্থ বিপন্ন হয়।

‘ভোটের বিকল্প নেই’ বলে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার জন্য জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের কোনো বিকল্প নাই। রাষ্ট্র এবং সমাজে জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার পূর্ব শর্ত হলো প্রতিটি নাগরিকের ভোট প্রয়োগের অধিকার বাস্তবায়ন। এই লক্ষ্যে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি বার বার জনগণের ভোটে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকার প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানায়। তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য জনমনে ইতিবাচক ধারণা পোষণ করলেও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো কোনো উপদেষ্টার বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য মন্তব্য স্বাধীনতাপ্রিয় গণতন্ত্রকামী জনগণের জন্য হতাশার কারণও হয়ে উঠেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের সব রাজনৈতিক দলের নিঃশর্ত সমর্থন থাকলেও সরকার এখনো তাদের কর্ম পরিকল্পনায় অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে পারছে না বলে মনে হচ্ছে।

‘নির্বাচন বিনষ্টের অপচেষ্টা’ চলছে বলে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালানোর পর দেশে গণতন্ত্রকামী মানুষের সামনে বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের এক অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে। একে নস্যাৎ করার জন্য এরইমধ্যে চক্রান্ত শুরু হয়েছে।

সুকৌশলে রক্ত পিছলে রাজপথে গড়ে ওঠা জাতীয় ঐক্য এবং জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্টের অপচেষ্টা চলছে। জাতীয় ঐক্য এবং জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্টের চক্রান্তের বিরুদ্ধে আমি আজ দেশের কৃষক-শ্রমিক-জনতা, আলেমণ্ডউলামা-পীর-মাশায়েখ তথা সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে আপনারা যারা এখানে উপস্থিত হয়েছেন আপনাদের প্রত্যেকের মাধ্যমে তাদের সতর্ক থাকার আহ্বান এবং অনুরোধ জানাচ্ছি। তিনি বলেন, যারা বাংলাদেশকে তাঁবেদার রাষ্ট্র বানিয়ে রাখতে চেয়েছিল তাদের ষড়যন্ত্র কিন্তু এখনো থামেনি। সংস্কার কিংবা স্থানীয় নির্বাচন এসব ইস্যু নিয়ে জনগণের মাঝে এক ধরনের ধূম্রজাল সৃষ্টি করা হচ্ছে।

‘স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে তারেক রহমান বলেন, সারা দেশে খুন-হত্যা-ধর্ষণ-চুরি-ছিনতাই-রাহজানি বেড়েই চলেছে। বাজার সিন্ডিকেটের কবলে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণহীন। বর্তমান সরকার এখনও মনে হয় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপরে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। সরকার যেখানে বাজার পরিস্থিতি কিংবা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করতে পারছে না সেখানে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের নামে কেন দেশের পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করতে চাইছে এটি জনগণের কাছে বোধগম্য নয়। গণতন্ত্রকামী জনগণ মনে করেন, স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সেটি হবে সারা দেশে পলাতক স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসনের একটি প্রক্রিয়া যা সরাসরি গণঅভ্যুত্থান আকাঙ্ক্ষাবিরোধী। গণহত্যাকারী, টাকা পাচারকারী দুর্নীতিবাজ মাফিয়া চক্রকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার এই ফাঁদে বিএনপি পা দেবে না, বিএনপি পা দিতে পারে না। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান, সারা দেশে গণহত্যাকারীদের দোসর মাফিয়া চক্রকে পুনর্বাসনের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পরিকল্পনা থেকে সরে আসুন। অবিলম্বে আগামী দিনগুলোর জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ?সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনার রোডম্যাপ ঘোষণা করুন।

নতুন দলের আত্মপ্রকাশ প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, গণহত্যাকারী মাফিয়া প্রধান হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর এই পর্যন্ত অনেক নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বিএনপি সব নতুন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে স্বাগত জানায়। তবে নির্বাচনের মাধ্যমে গ্রহণ কিংবা বর্জনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে জনগণ। সুতরাং প্রতিটি দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সবার আগে নির্বাচন কমিশনকে প্রস্তুত রাখতে হবে। তিনি বলেন, দেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নিরপেক্ষতাই হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সবচেয়ে বড় পুঁজি। কিন্তু সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে এরইমধ্যে জনমনে সন্দেহ-সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। নিজেদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে আমি বিএনপির পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আরও সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানাই। তিনি বলেন, সর্বোপরি ’৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের লাখো শহিদ এবং দেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ধারাবাহিক সংগ্রামে যারা শহিদ হয়েছেন এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে তাঁবেদার অপশক্তির বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধে সাহসী বীর আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ওয়াসিম, রিয়া গোপ, আব্দুল আহাদ এবং বিএনপির পাঁচ শতাধিকসহ হাজারো শহিদ এবং আহত যোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি।

বিএনপি গণহত্যাকারীদের বিচার করবে বলে জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আগামী নির্বাচনে বিএনপি জনরায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে গণহত্যাকারী মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান, সারাদেশে গণহত্যাকারীদের দোসর মাফিয়া চক্রকে পুনর্বাসনের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পরিকল্পনা থেকে সরে আসুন। অবিলম্বে আগামী দিনগুলোর জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনার রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। তিনি বলেন, ‘বিএনপির কাছে সংস্কারের ধারণা নতুন কিছু নয়। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের পর দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের আকক্সক্ষার প্রতিফলন এবং ১৯৯১ সালে দেশে সংসদীয় সরকার প্রতিষ্ঠা ছিল রাষ্ট্র ও রাজনীতির ময়দানে যুগান্তকারী সংস্কার। তবে ষড়যন্ত্রের পথ ধরে পলাতক স্বৈরাচার রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর সংস্কারের সব পথ বন্ধ করে দেয়া হয়। বাংলাদেশকে চিরতরে তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করে রাখতে গত দেড় দশকে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছিল। দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে নাজুক করে তুলেছিল। টাকা পাচার আর লুটপাট চালিয়ে দেশের অর্থনীতি ভঙ্গুর করে দিয়েছিল। অকার্যকর করে দেয়া হয়েছিল দেশের সব সাংবিধানিক এবং বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। তারেক রহমান বলেন, ‘রাষ্ট্রের স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তার জন্য জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের কোনো বিকল্প নেই। রাষ্ট্র এবং সমাজে জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার শর্ত হলো- প্রতিটি নাগরিকের ভোট প্রয়োগের অধিকার বাস্তবায়ন। ‘৩১ দফা : বৈষম্যহীন মানবিক বাংলাদেশ গড়ার সনদ বলে উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি এবং আগামী দিনের রাজনীতিতে বিএনপির এই ৩১ দফা হচ্ছে একটি বৈষম্যহীন মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সনদ। তবে এই ৩১ দফাই শেষ কথা নয়। সময়ের প্রয়োজনে রাষ্ট্র, সরকার, রাজনীতি ও রাজনৈতিক দলের সংস্কারের জন্য এই ৩১ দফাতেই সংযোজন-বিয়োজনের সুযোগ রয়েছে। এমনকি এই ৩১ দফার সঙ্গে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার প্রস্তাবে খুব বেশি ইস্যুতে মৌলিক বিরোধ নেই।

পররাষ্ট্রনীতির প্রসঙ্গ টেনে তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি সুস্পষ্ট। বর্তমান বিশ্বে স্থায়ী শত্রু-মিত্র বলে কিছু নেই। বরং একটি দেশের সঙ্গে অপর দেশের সম্পর্ক হবে পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষা, প্রয়োজন এবং ন্যায্যতার ভিত্তিতে। অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের নীতি ‘সবার আগে বাংলাদেশ’। অর্থাৎ নিজ দেশ এবং জনগণের স্বার্থ রক্ষাই হতে হবে প্রথম এবং প্রধান অগ্রাধিকার। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটি বৃহৎ পরিবার। এই পরিবারের নানা বিষয়ে আমাদের মতের অমিল থাকতেই পারে। তাই বক্তব্য দেয়ার সময় ব্যক্তিগত পর্যায়ের বিরোধকে এড়িয়ে যাওয়া বাঞ্ছনীয়। ঐক্যই আমাদের বারবার বিজয় আর সফলতা এনে দিয়েছে। সুতরাং আমাদের খেয়াল রাখা জরুরি, আলোচনা-সমালোচনা যেন নিজেদের মধ্যকার ঐক্য বিনষ্টকারী কিংবা দলের ক্ষতির কারণ না হয়। প্রশংসাসূচক শব্দ চয়নের ক্ষেত্রে আরও বেশি সতর্কতা, বুদ্ধিমত্তা এবং পরিমিতি বোধের পরিচয় দেবেন।

প্রধান অতিথি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যের পর কর্ম অধিবেশন শুরু হয়। সেখানে তৃণমূল নেতারা বক্তব্য রাখেন। বর্ধিত সভার মূল মঞ্চে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বসেন। ভার্চুয়ালি লন্ডন থেকে যুক্ত হন স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।

উদ্বোধনী বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন নিয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা পাচ্ছি না। দেশের মানুষের অনেক আশা-ভরসা ছিল ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ থেকে পলায়নের পরে আমাদের দেশের অবস্থার পরিবর্তন হবে। অতি দ্রুত দেশের জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়া হবে। তারা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন এবং তাদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারবেন। কিন্তু আমরা দুঃখের সঙ্গে দেখছি সে লক্ষ্যে আমরা সুস্পষ্ট নির্দেশনা পাচ্ছি না। আপনারা দেখেছেন, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি বিএনপিকে গণতন্ত্রের জন্য, জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য কি পরিমাণ ত্যাগের মধ্য দিয়ে সংগ্রাম করতে হয়েছে।

এরইমধ্যে দেশের অর্থনীতির অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আইনশৃঙ্খলা অবস্থার অবনতি হচ্ছে। ক্রমান্বয়ে শিক্ষাঙ্গনগুলো বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার পরিবেশ থাকছে না। অবিভক্ত বাংলায় যে সমস্ত বরেণ্য, বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক, যাদের হাত ধরে বিশেষ করে পূর্ব বাংলার ভূখণ্ডে জন্ম হয়েছিল তাদের নামগুলোকে বাদ দিয়ে এখন কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্য নামকরণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেন তিনি। তিনি আরও বলেন, আমরা ফ্যাসিবাদকে তাড়িয়েছি, শেখ হাসিনাকে তাড়িয়েছি। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি, আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের আধুনিক, সমৃদ্ধ, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে বিঘ্নিত করার জন্য, বাধাগ্রস্ত করার জন্য একটি মহল বিভিন্নভাবে চক্রান্ত করার চেষ্টা করছে। বাইরে থেকেও চেষ্টা করা হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তর থেকেও কিছু কিছু গোষ্ঠী ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগের পতনের পর কিছুটা হলেও মুক্তি এবং স্বস্তির পরিবেশ বিরাজ করছে। যারা এই ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনার বর্বরোচিত শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল, যারা ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমাদের কাছ থেকে হারিয়ে গেছে, এখনো তাদের হদিস মেলেনি। কতজন আয়না ঘরে বন্দি ছিল। কতজন যে অকথ্য অত্যাচারের শিকার হয়ে তারপর কোথায় তাদের ফেলে রাখা হয়েছে এখনো পর্যন্ত তাদের হদিস পাওয়া যায়নি। কত নেতাকর্মী এবং দেশের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ হারিয়ে গেছেন তারই অন্ত নেই। আমরা এদের সকলের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি, তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। তিনি বলেন, দীর্ঘ রক্তস্নাত আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ মুক্ত পরিবেশে আজ দলের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বর্ধিত সভার শুরুতেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে দলের প্রতিষ্ঠাতা ও মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর বিক্রমকে। এদেশের বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশ বিনির্মাণ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদের প্রবর্তক ছিলেন শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ন্যায়নিষ্ঠা, সততা এবং দেশপ্রেমের এক অনন্য ক্ষণজন্মা পুরুষ বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান। যিনি তার রেখে যাওয়া পতাকাকে হাতে ধারণ করে যখনই গণতন্ত্র বিপন্ন হয়েছে, যখনই দেশ বিপন্ন হয়েছে তখনই তিনি দেশের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে আপসহীন থেকে গণতন্ত্রের পক্ষে সংগ্রাম করেছেন। সেই গণতন্ত্রের প্রতীক গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আশু সুস্থতা কামনা করে তিনি বলেন, ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের পর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ে যেসব নেতাকর্মী-সমর্থক মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের সবাইকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। আজকের বর্ধিত সভায় শোক প্রস্তাব গ্রহণ করছি। এছাড়া আমরা যাদের হারিয়েছি, দেশের বিশ্ব বরেণ্য নেতৃত্ব সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ, সুরকার, গীতিকার যারা পৃথিবী থেকে চলে গেছেন আমরা তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত