উত্তাল মার্চের দ্বিতীয় দিন আজ। এ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় বিশাল ছাত্র-জনতার সামনে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করা হয়। ১৯৭১ সালের এ দিন সারা বাংলাদেশ ছিল আন্দোলনমুখর। আগের দিন ১ মার্চ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করার পর মুহূর্তের মধ্যে ঢাকার পরিস্থিতি পাল্টে যায়। ২ মার্চ ঢাকায় স্বতঃস্ফূর্ত হরতাল পালিত হয়। রাজধানী ঢাকা মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়। দলমত, পথ ও পেশা ভুলে সমগ্র ঢাকা এক ও অভিন্ন হয়ে গণতন্ত্র ও স্বাধিকারের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে। সকাল থেকেই রাজধানীর সব দোকানপাট, ব্যবসায় কেন্দ্র, যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। সরকারি ও বেসরকারি স্বায়ত্তশাসিত কোনো প্রতিষ্ঠানেই কর্মচারীরা কাজে যোগ দেননি। ট্রেন ও বিমান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে। হাজার হাজার মানুষ লাঠি ও রড হাতে রাজপথে নেমে আসেন। ঢাকায় যতগুলো প্রগতিশীল ছাত্র, শ্রমিক ও রাজনৈতিক দল আছে, সবাই সেদিন জনসভা ডাকে। বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ও বিকালে পল্টনে জনসভা করে ন্যাপ। ন্যাপের কর্মসূচির সঙ্গে সমর্থন রয়েছে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন, ট্রেড ইউনিয়ন ও কৃষক সমিতির। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছাত্রলীগ ও ডাকসুর আহ্বানে এক বিশাল ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ছাত্র-জনতার সামনে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করা হয়।