ঢাকা শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

আমরা কারও এজেন্ডা বাস্তবায়নে আসিনি : সিইসি

দেশে মোট ভোটার ১২ কোটি ৩৭ লাখ
আমরা কারও এজেন্ডা বাস্তবায়নে আসিনি : সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আমরা জাতির কাছে ওয়াদা দিয়েছি, আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। আমাদের ব্যক্তিগত কোনো এজেন্ডা নেই। আমরা অন্য কারও এজেন্ডা বাস্তবায়নে আসিনি। আমাদের এজেন্ডা হলো ১৮ কোটি মানুষের এজেন্ডা। আমাদের এজেন্ডা বাংলাদেশের এজেন্ডা। আমাদের এজেন্ডা বাংলাদেশিদের এজেন্ডা, একটা সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন করা। আমরা যে ওয়াদা দিয়েছি সেটা বাস্তবায়নে কাজ করছি।

গতকাল রোববার নির্বাচন ভবনে জাতীয় ভোটার দিবসের আলোচনায় অংশ নিয়ে সিইসি এসব কথা বলেন। ভোট সন্ত্রাস আখেরে সর্বনাশ ডেকে আনে জানিয়ে সিইসি বলেন, ভোট সন্ত্রাস করে আপাত দৃষ্টিতে জেতা যায়। কিন্তু আখেরে নিজের জন্য, দলের জন্য, দেশের জন্য সর্বনাশ ডেকে আনে। সন্ত্রাস করে আখেরে টেকা যায় না। আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় জিতে গেলাম। কিন্তু আখেরে নিজের জন্য ভালো হয় না। দেশ ও দলের জন্য ভালো হয় না। এটা শুধু বাংলাদেশে নয়, সারাবিশ্বেই এর ফল ভালো হয় না। তাই আমার প্রত্যাশা ভোটে গোলযোগ করবেন না। আমরা ইনশাআল্লাহ সর্বশক্তি দিয়ে ১৮ কোটি মানুষের পাশে আছি। দেশবাসীর কাছে আমার আবেদন, আপনারা আমাদের পাশে থাকুন। আপনাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমরা যুদ্ধে আছি। সময় হাতে বেশি নেই। সীমিত সময়ের মধ্যে আমরা খুব কষ্ট করে কাজ করে যাচ্ছি।

তরুণদের সঙ্গে বেঈমানি নিয়ে সিইসি বলেন, নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। আমরা যদি কোনো রকম পা পিছলে যাই, তাহলে তরুণদের সঙ্গে বেঈমানি করা হবে। ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। ভোট নাগরিকের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এটা আমাদের বড় দায়িত্ব। আমি যেখানে যাই সবাই সালাম দিয়ে বলে, স্যার সারা দেশের মানুষ তাকিয়ে আছে। সারা দেশের মানুষের কাছে অনেক বড় প্রত্যাশা। এত বেশি প্রত্যাশা কারও প্রতি ছিল না। মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেড়ে গেছে। সবার সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।

সিইসি আরও বলেন, আমরা গ্রহণযোগ্য ভোট চাই। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায় না এমন কেউ নেই। সবাই সুন্দর ক্রেডিবল নির্বাচন চায়। যত রাজনৈতিক দল আলোচনায় আসে সবাই বলে সুন্দর ভোট চাই।

রমজানে সবাইকে সুষ্ঠু ভোটের ওয়াদা করতে বলে সিইসি বলেন, এখানে সব কর্মকর্তাদের বলছি। আপনারা সুষ্ঠু ভোটের ওয়াদা করবেন তো? আপনারা আমার সঙ্গে ওয়াদা করলেন। আশা করি এ ওয়াদা রক্ষা করবেন। অনেকে বলেছে আগে নানা পরিবেশ নিয়ে অনেকে কাজ করেছেন। এর আগে মরার ইলেকশন হয়েছে। এই মরা লাশ আর কত টানবো? আমরা যে কাজ করার ওয়াদা করেছি সেটা বাস্তবায়নে বিবেকের কাছে যেন পরিষ্কার থাকি।

দেশের ভোটার সংখ্যা নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, দেশে বর্তমানে মোট ভোটার ১২ কোটি ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ২৭৪। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৩৩ লাখ ৬১ হাজার ৬১৫। নারী ভোটার ৬ কোটি ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৬৬৫।

জানা যায়, ‘তোমার আমার বাংলাদেশে, ভোট দেবো মিলেমিশে’ এই প্রতিপাদ্যে দেশে সপ্তমবারের মতো জাতীয় ভোটার দিবস উদযাপন করে ইসি। ২০১৯ সাল থেকে জাতীয় ভোটার দিবস উদযাপিত হয়ে আসছে। জাতীয় ভোটার দিবস উদযাপনে কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় এবং মাঠপর্যায়ে থানা/উপজেলা, জেলা ও আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসগুলোতে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

আমরা স্বচ্ছ-সুন্দর ভোট উৎসব করতে চাই : ইসি সানাউল্লাহ

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, ভোটকে আমরা যুদ্ধ বা বিশেষ কিছুতে পরিণত করেছি। এটা যুদ্ধ উৎসব নয়। আমরা স্বচ্ছ, সুন্দর ভোট উৎসব করতে চাই। নির্বাচনে আমরা হানাহানি বা অনিয়ম দেখতে চাই না।

গতকাল রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে জাতীয় ভোটার দিবস-২০২৫ উপলক্ষে আলোচনা সভায় এ কথা বলেন ইসি। ইসি সানাউল্লাহ বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গণতন্ত্র উত্তরণে, নাগরিকদের ভোটে আস্থা ফেরানো ও নির্বাচন ব্যবস্থার উন্নতি করার একটি বাস্তব অবস্থা তৈরি হয়েছে। ভোটার তালিকার স্বচ্ছতা নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট হতে চাই। এজন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে হালনাগাদ চলছে। এই হালনাগাদ কার্যক্রম শেষে ৩০ জুনের মধ্যে আবারো একটা ভোটার তালিকা পাওয়া যাবে।

তিনি বলেন, আমরা ভোটকে যুদ্ধ বা বিশেষ কিছুতে পরিণত করেছি, এটা যুদ্ধ নয় উৎসব। স্বচ্ছ সুন্দর ভোট উৎসব চাই, আমরা হানাহানি, অনিয়ম দেখতে চাই না নির্বাচনে। গত তিন মাসে ৮০ হাজারের বেশি জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, বিগত সময়ে নির্বাচনগুলো যদি সঠিক না হয়ে থাকে এর দায় কাউকে না কাউকে নিতে হবে। এর পুরো দায় নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচন কমিশন কঠিন পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইসি ভালো নির্বাচন করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সবার সহযোগিতা চাই সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের। জুলাই আন্দোলনের রক্তের সঙ্গে যাতে প্রতারণা না হয় সেজন্য একটি ভালো নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।

নির্বাচন কমিশনার বেগম তাহমিদা আহমদ বলেন, চারিদিকে সংস্কার আর সংস্কার, ইসিতে কী সংস্কার হবে না? স্বচ্ছতা নিশ্চিতে খোলা মাঠে ভোট করতে চাই, আবদ্ধ রুমে নয়। এজন্য সবার সহযোগিতা চাই।

জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন কেউ বলে সব দলের অংশগ্রহণ, আমি মনে করি এর পাশাপাশি জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। বর্তমান কমিশন কথায় নয় কাজে দেখাতে চায়। সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে আইন ও বিধি অনুযায়ী কাজ করবে কমিশন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত