
রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ আরেক শিক্ষার্থী মারা গেছে। শিশুটির নাম সাহীল ফারাবী আয়ান (১৪)। গত রোববার দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন শাওন বিন রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আয়ানের শরীরের ৪০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। আয়ানের বাবার নাম মোহাম্মদ আলী মাসুদ। থাকেন রাজধানীর মিরপুরে।
তদন্ত সরকারের কমিশন গঠন : মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় ৯ সদস্যের তদন্ত কমিশন গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। কমিশন বিমান বিধ্বস্তের পরিপ্রেক্ষিত, কারণ, দায়দায়িত্ব ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ এবং ঘটনা সংশ্লিষ্ট অপরাপর বিষয় চিহ্নিত করবে। এই কমিশনকে চার সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। রোববার রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। কমিশনের সভাপতি করা হয়েছে সাবেক সচিব এ কে এম জাফর উল্লা খানকে। অপর সদস্যরা হলেন- বিমানবাহিনীর সাবেক সহকারী প্রধান (প্রশাসন) এয়ার ভাইস মার্শাল এম সাঈদ হোসাইন (অব.), প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত), বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত), দুর্যোগব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত), ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার, নগরপরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান, বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মো. আশিকুর রহমান এবং আইনজীবী আশরাফ আলী। রাষ্ট্রপতির নির্দেশক্রমে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এই কমিশনের কার্যপরিধি সম্পর্কে বলা হয়, মাইলস্টোনের ঘটনায় স্কুলের ছাত্র, শিক্ষক ও অন্যান্য ব্যক্তির জীবনহানি ও গুরুতর আহত হওয়ার বিষয়সহ সব ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ এবং ঘটনা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় চিহ্নিত করবে।
মাইলস্টোনে বিমানবাহিনীর চিকিৎসা ক্যাম্প : মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে অস্থায়ী চিকিৎসা ক্যাম্প স্থাপন করেছে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী। এই ক্যাম্পে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ নিচ্ছেন অনেকে। তাদের বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের আত্মীয়স্বজন। বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অস্থায়ী এই চিকিৎসা ক্যাম্প গতকাল সোমবার থেকে এক সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত।
গতকাল সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মাইলস্টোন স্কুলের প্রশাসনিক ভবনে চলছে চিকিৎসা ক্যাম্পের কার্যক্রম। ভবনটির বারান্দায় মানুষের ভিড়। চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে যাওয়া ব্যক্তিদের নাম বারান্দায় বসে নিবন্ধন করছেন বিমানবাহিনীর একজন সদস্য। সামান্য দগ্ধ হওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিয়েছেন। অনেকে ড্রেসিং করাচ্ছেন, অনেকে ওষুধ নিচ্ছেন। চিকিৎসা ক্যাম্পে বিমানবাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, দুজন চিকিৎসক পরামর্শ দিয়েছেন। সঙ্গে চিকিৎসা সহকারীরা ছিলেন। মোট ১৫ সদস্যের একটি দল এই ক্যাম্প পরিচালনা করেন।