ঢাকা শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

পাকিস্তানের শুল্ক দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন, শাহবাজের কৃতজ্ঞতা

পাকিস্তানের শুল্ক দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন, শাহবাজের কৃতজ্ঞতা

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম শুল্কহার এখন পাকিস্তানের। দেশটির শুল্কহার মাত্র ১৯ শতাংশ। এটি প্রতিবেশী চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারতের তুলনায় অনেকটাই কম।

ভারতের ক্ষেত্রে এ হার ২৫ শতাংশ। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দেশটির শুল্কহার ২৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে আনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘গভীর কৃতজ্ঞতা’ জানিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ চুক্তি (যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে) অর্থনৈতিক সহযোগিতার এক নতুন যুগের সূচনা করল, বিশেষ করে জ্বালানি, খনি ও খনিজ সম্পদ, তথ্যপ্রযুক্তি, ক্রিপ্টোকারেন্সি ও অন্যান্য খাতে। ট্রাম্প প্রশাসনের অধীন যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান সম্পর্ক উষ্ণ হয়েছে। চলতি বছরের জুন মাসে পাকিস্তান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছিল।

কানাডার ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক : কানাডার ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যা আগে ছিল ২৫ ভাগ। এ সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন মার্কিন প্রসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার শুল্ক নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয় মার্কিন প্রশাসন। কানাডার ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্টের আরোপিত শুল্ক সাত দিনের মধ্যে কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যারা বাণিজ্য চুক্তি করেনি : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার এক নির্বাহী আদেশে বিভিন্ন দেশ থেকে তার দেশের আমদানি করা পণ্যে নতুন পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন। এর মধ্যে অসম বাণিজ্যিক সম্পর্কের কারণে কিছু দেশের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক বসিয়েছেন তিনি। সিরিয়ার ওপর সবচেয়ে বেশি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। দেশটির নতুন শুল্কহার ৪১ শতাংশ। ১৪ বছরের দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের ধ্বংসস্তূপ থেকে সদ্য উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে সিরিয়া। এ সময় দেশটির জন্য এ উচ্চ শুল্কহার বড় আঘাত। পরের অবস্থানে রয়েছে লাওস ও মিয়ানমার। উভয় দেশের ওপর ৪০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্ত এশিয়ার অর্থনীতিতে নতুন চাপ সৃষ্টি করবে, বিশেষ করে যেসব দেশ আগে থেকেই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে আছে। সুইজারল্যান্ড থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৯ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছে। এটি একমাত্র উন্নত অর্থনীতির দেশ, যেটির ওপর ট্রাম্প প্রশাসন এত উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করলেন। দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদারও। এদিকে কানাডার পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো বাণিজ্য চুক্তি না হওয়ায় দেশটির ওপর এ শুল্ক আজ শুক্রবার থেকে কার্যকর হয়ে গেছে। মধ্যপ্রাচ্যের আরেক গুরুত্বপূর্ণ দেশ ইরাক ও ইউরোপের সার্বিয়ার ওপরও ৩৫ শতাংশ হারে শুল্ক বসানো হয়েছে। অন্যদিকে চারটি দেশের ওপর ৩০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। দেশগুলো হলো আলজেরিয়া, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, লিবিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তার নতুন শুল্কনীতির বাস্তবায়ন ‘খুব ভালোভাবে, খুব মসৃণভাবে’ চলছে। ট্রাম্প বলেন, যেসব দেশ এখনো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করেনি, তাদের জন্য ‘অনেক দেরি হয়ে গেছে’। তবে তিনি আরও বলেন, এমন নয় যে কেউ চার সপ্তাহ পর এসে কোনো ধরনের চুক্তির প্রস্তাব দেবে না। সেটা হতেই পারে। ট্রাম্পকে এক সাক্ষাৎকার জিজ্ঞাসা করা হয়, তার শুল্কের কারণে মার্কিন ভোক্তাদের জন্য পণ্যের দাম বাড়ছে কি না। উত্তরে ট্রাম্প বলেন, শুধু একটা জায়গায় দাম বাড়ছে। তা হলো শত শত বিলিয়ন ডলার এখন যুক্তরাষ্ট্রের কোষাগারে ঢুকছে।

ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দ্য সিলভা তাঁর শুল্কনীতির বিরোধিতা করছেন, এ বিষয়ে তাঁর মন্তব্য কী। জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘ঠিক আছে। তাহলে ওনার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যবসা করতে হবে না। আমার এতে কোনো সমস্যা নেই।’ ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি কানাডার সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা চালিয়ে যেতে আগ্রহী। তবে তিনি সতর্ক করেছেন, নতুন ৩৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগে আর কোনো চুক্তির সুযোগ নেই।

ট্রাম্প বলেন, তিনি আজ রাতেই কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে ফোনে কথা বলার কথা ভাবছেন। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কানাডার ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের কারণ হচ্ছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে ভয়ানক মাদক ফেন্টানিলের অব্যাহত প্রবাহ ঠেকাতে সহযোগিতা করতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে কানাডার বাণিজ্য ব্যুরো এ অভিযোগ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত