
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের সমীকরণ বদলে গেছে। ভারতের অব্যাহত বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ড, প্রোপাগান্ডা ও হুমকির ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত কঠোর পররাষ্ট্রনীতি দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এর মধ্যে ‘আগুনে ঘি’ ঢেলেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের শীর্ষ এক কর্মকর্তার দেয়া স্ট্যাটাস। সেখানে তিনি বাংলাদেশের ভূ-ভাগ সম্প্রসারণের দাবি তুলে ভারতের কিছু অংশকে অন্তর্ভুক্ত করার হুমকি দিয়েছেন। তার এই মন্তব্যের পর ভারত দ্রুত সীমান্তে নিরাপত্তাব্যবস্থা শক্তিশালী করেছে এবং নদী পথে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে। মূলত, গত ১৬ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। ভারত সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, ভারতের সরকার পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা এবং আসামে বাস করা জনগণকে ‘গেটোইজ’ বা আলাদা করে রাখার চেষ্টা করছে এবং এই অঞ্চলের মানুষদের ‘বসতি স্থাপন’ করে তাদের উপনিবেশ বানাচ্ছে। এই তিন রাজ্যে বাংলা ভাষাভাষী মুসলমানরা সবচেয়ে বড় সংখ্যালঘু জনগণ। তিনি আরো লিখেন, শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশকে সফল হতে হলে দেশটির ভূ-ভাগ বৃদ্ধি করতে হবে। আলমের দাবি, একটি ছোট, স্থলবদ্ধ, সীমাবদ্ধ দেশ কখনোই সফল হতে পারবে না। তার মতে- ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সংস্কৃতি ঢাকার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ সংস্কৃতির সাথে অনেক বেশি মেলে, দিল্লির হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ সংস্কৃতির তুলনায়। তিনি আরও বলেন, ভারত থেকে প্রকৃত স্বাধীনতা পেতে হলে বাংলাদেশকে আরেকটি বিপ্লবের প্রয়োজন, এবং এর জন্য বাংলাদেশকে এই তিন রাজ্য পর্যন্ত নিজেদের সীমান্ত সম্প্রসারিত করতে হবে।” তার এই দাবির পক্ষে একটি মানচিত্রও শেয়ার করেছিলেন যেখানে বাংলাদেশ ওই তিন রাজ্য পর্যন্ত বিস্তৃত।