ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে হামলা চালানোর ইসরায়েলি পরিকল্পনা ফাঁস করেছে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস। ফাঁস হওয়া এই তথ্য ও পরবর্তী প্রতিবেদনকে ইসরায়েলের ইতিহাসের সবচেয়ে বিপজ্জনক ফাঁসগুলোর মধ্যে একটি বলে মন্তব্য করেছেন এক সিনিয়র ইসরায়েলি কর্মকর্তা। নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ইসরায়েল সরাসরি মার্কিন সহায়তায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে আক্রমণ চালানোর কথা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করেছে। বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি রাজনীতিবিদ এ তথ্য ফাঁসের জন্য প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সমালোচনা করেছেন। তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, ইরানের বিরুদ্ধে যথেষ্ট কঠোর পদক্ষেপ না নেয়ার জন্য সমালোচনা থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য তিনি (নেতানিয়াহু) এই খবরটি ফাঁস করেছেন। দেশটির সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী আভিগডোর লিবারম্যান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘আমি নিউইয়র্ক টাইমসে পুরো ফাঁস হওয়া তথ্যটি পড়েছি। আমার মনে হয়েছে, আমরা কত ভাগ্যবান যে সিরিয়া ও ইরাকে পারমাণবিক চুল্লিতে বোমা হামলার সময় নেতানিয়াহু প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না।
‘পোস্টে আরও বলা হয়েছে, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা অভিযোগ করেছেন যে, নেতানিয়াহু এখন ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর কথা বলার বা খুব কম কাজ করার জন্য সমালোচনা থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য তথ্য ফাঁস করেছেন। গত বৃহস্পতিবারের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ১ অক্টোবর ইসরায়েলে প্রায় ২০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর থেকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা তেহরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোর কথা বিবেচনা করছিল। সামরিক বাহিনী ইরানে আঘাত করার ক্ষমতার ওপর আত্মবিশ্বাসী ছিল এবং তাত্ত্বিকভাবে বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন ইসরায়েলি কর্মকর্তা এই ধারণার পক্ষে ছিলেন। তবে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বিস্তারিতভাবে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি কর্মকর্তারা মার্কিন অনুমোদন ছাড়া এই ধরনের অভিযান পরিচালনা করতে প্রস্তুত ছিলেন না।
প্রতিবেদনে তেহরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে আঘাত করার কয়েকটি সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে একটি যৌথ মার্কিন-ইসরায়েলি পরিকল্পনা। এটি হয় একটি বিশাল বোমা হামলা অভিযানের মতো দেখাবে অথবা বিমান হামলা এবং কমান্ডো অভিযানের মাধ্যমে সম্মিলিত আক্রমণের মতো দেখাবে, যেমনটা ইসরায়েল সিরিয়ার ভূগর্ভস্থ স্থাপনায় করেছিল। কর্মকর্তারা ট্রাম্পকে সম্ভাব্য আক্রমণে যোগ দিতে রাজি করানোর জন্য তার ক্ষমতাগ্রহণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের বেশ কয়েকজন সদস্য যৌথ আক্রমণের বিরোধিতা করেছিলেন এবং মার্কিন-ইরান চুক্তির জন্য চাপ দিয়েছেন।
