ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পর্যটকদের বাঁচিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন দুই কাশ্মীরি কন্যা

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পর্যটকদের বাঁচিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন দুই কাশ্মীরি কন্যা

ভারতের জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের পেহেলগামের সাম্প্রতিক বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন ভারতীয় পর্যটকের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এই হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। দুই পক্ষই প্রতিশোধমূলক পাল্টপাল্টি পদক্ষেপ নিয়েছে। এছাড়া দুই দেশই সীমান্তে বাড়াচ্ছে ব্যাপক সামরিক উপস্থিতি। এদিকে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ এ হামলায় ভারতীয়রা পাকিস্তানকে দোষারোপ করার পাশাপাশি কাশ্মীরি মুসলমানদেরকেও বিভিন্নভাবে কটাক্ষ করছেন। তবে এসবের মধ্যেই বেরিয়ে আসছে হামলাকারীদের হাত থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পর্যটকদের বাঁচাতে এগিয়ে আসা কাশ্মীরী দুই বীরঙ্গনার দুঃসাহসিক গল্প। রুবিনা ও মুমতাজ নামের এ দুই বোনের প্রচণ্ড সাহসিকতার জন্যই প্রাণে বেঁচে যায় বেশ কয়েকজন পর্যটকদের। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, রুবিনা ও মুমতাজ দুজন বোন। তারা বাড়ি বৈসরন উপত্যকার আশেপাশেই। পর্যটকদের ‘গাইড’ হিসাবে কাজ করে। বৈসরণ উপত্যকা হাতের তালুর মতো চেনা এ দুই বোনের। পর্যটকদের বৈসরনের ইকোপার্কে নিয়ে যাওয়া, তাদের ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সব দেখানোর কাজ করেন তারা। স্থানীয়দের কাছে রুবিনা ‘কাশ্মীরের খরগোশ কন্যা’ নামে পরিচিত। কারণ, পর্যটকেরা বৈসরনে এলে তাদের হাতে নিজের পোষা খরগোশ তুলে দেয় রুবিনা। সামান্য টাকার বিনিময়ে তারপর ওই পোষ্যের সঙ্গে পর্যটকদের ছবি তুলে দেন তিনি। বৈসরনে পর্যটকদের সঙ্গেই ওদের দিন কেটে যায়। কিন্তু গত ২২ এপ্রিল দিনটা ছিল অন্যরকম। আর ওই দিনেই দুই বোনকেও দেখা গিয়েছে অন্য এক দুঃসাহসিক ভূমিকায়। যা প্রশংসিত হচ্ছে গোটা ভারতজুড়ে। আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্যদিনের মতো ওই দিনও চেন্নাইয়ের বেশ কয়েকজন পর্যটকের ‘গাইড’ হিসাবে গিয়েছিল রুবিনা, মুমতাজ। দুপুরের দিকে যখন অস্ত্রধারীরা হামলা চালায় তখন রুবিনা এবং মুমতাজ নিজেদের জীবনের পরোয়া না করে তাদের সঙ্গে যাওয়া পর্যটক এবং আরও বেশ কিছু পর্যটককে রাস্তা দেখিয়ে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেন।

শুধু তা-ই নয়, পর্যটকদের সঙ্গে থাকা শিশুদের যাতে কোনো রকম ক্ষতি না হয়, আগলে নিয়ে যায় দুই বোন। প্রথমে কয়েক জন পর্যটককে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দেন। তারপর আবার আরও এক দলকে পথ দেখিয়ে নিয়ে আসেন। এভাবে বেশ কয়েক বার ছুটে ছুটে গিয়ে পর্যটকদের ভাগে ভাগে নিয়ে আসে দুই বোন। এমনকি এই পরিস্থিতিতে কী করতে হবে পর্যটকদের সব কিছু বুঝিয়েও দিয়েছিল তারা। বিষয়টি নিয়ে রুবিনা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ওই সময় আমরা নিজেদের সুরক্ষার কথা না ভেবে পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। তারা হাঁটতে পারছিল না। সবাই ভয়ে সিঁটিয়ে যাচ্ছিল। সবাই শুধু বলছিল, আমাদের বাঁচাও, আমাদের বাঁচাও।’ পাহাড়ি রাস্তা, জঙ্গলের ভেতর দিয়ে পর্যটকদের নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে রুবিনা এবং মুমতাজ। তারপর তাদের সবাইকে নিরাপদে হোটেলে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও করে দুই বোন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত