ফিলিস্তিনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন হুসেইন আল-শেখ। ফিলিস্তিনি মুক্তি সংস্থার (পিএলও) নির্বাহী কমিটি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের প্রস্তাবে হুসেইন আল-শেখকে তার উপদেষ্টা (ডেপুটি) হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়। পিএলওর নির্বাহী কমিটির সদস্য ওয়াসেল আবু ইউসুফ গত শনিবার বলেন, হুসেইন আল-শেখকে ‘পিএলও নেতৃত্বের ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, হুসেইন আল-শেখকে প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের উপদেষ্টা (ডেপুটি) হিসেবে এই মনোনয়ন গত বৃহস্পতিবার রামাল্লায় অনুষ্ঠিত প্যালেস্টাইন সেন্ট্রাল কাউন্সিলের (পিসিসি) ৩২তম অধিবেশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী করা হয়েছে।
কে এই হুসেইন আল-শেখ : হুসেইন আল-শেখ ১৯৬০ সালে ফিলিস্তিনের রামাল্লায় একটি শরণার্থী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১১ বছর তিনি ইসরাইলি কারাগারে আটক ছিলেন। কারাবাসের সময় তিনি হিব্রু ভাষা শিখেছিলেন। আল-শেখ ১৯৮৮ সালে প্রথম ইন্তিফাদার ইউনিফাইড ন্যাশনাল কমান্ডের সদস্য হন। অসলো চুক্তির পর তিনি প্রতিরোধমূলক নিরাপত্তা বিভাগে কর্নেল হিসেবে কিছুক্ষণ দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালে পশ্চিম তীরে ফাতাহর মহাসচিব হিসেবে নিযুক্ত হন শেখ।
২০০৭ সালে, আল-শেখ জেনারেল অথরিটি অফ সিভিল অ্যাফেয়ার্সের প্রধান হন। এই পদে তিনি ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অধিষ্ঠিত ছিলেন। আল-শেখ ২০১৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বেসামরিক বিষয়ক সমন্বয় মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, এবং তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তিনি তার মন্ত্রীর পদ ধরে রাখেন। ২০১৪ সালের গাজা যুদ্ধের পর, তাকে ইসরাইলি ও মিশরীয় প্রতিনিধিদের পাশাপাশি গাজা পুনর্গঠন কমিটিতে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি নিযুক্ত করা হয়। তিনি ২০০৯ সালে প্রথম ফাতাহ কেন্দ্রীয় কমিটিতে নির্বাচিত হন এবং ২০১৬ সালে পুনরায় নির্বাচিত হন, যেখানে তিনি ফাতাহর সরকারি মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০২২ সালে, আল-শেখ প্যালেস্টাইন মুক্তি সংস্থার (পিএলও) নির্বাহী কমিটির সদস্য হন। সেই বছরের শেষের দিকে, তিনি পিএলওর মহাসচিব এবং আলোচনা বিষয়ক বিভাগের প্রধান নিযুক্ত হন। আল-শেখ উপসাগরীয় আরব দেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট আব্বাসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এপি জানিয়েছে, তিনি এই বছরের শুরুতে সৌদি আরবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য দূতের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। এছাড়া, ২০১৭ সালে আল-শেখ ফিলিস্তিনি জাতীয় সংলাপ কমিটির সদস্য হন। ২০১০ সাল থেকে আল-বিরেহের যুব ক্রীড়া ক্লাবের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১২ সালে জনমত জরিপে তিনি ‘সেরা ফিলিস্তিনি পাবলিক ফিগার’ নির্বাচিত হন।