ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

পুতিনের টাকার মেশিন কি থেমে যাচ্ছে?

দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন
পুতিনের টাকার মেশিন কি থেমে যাচ্ছে?

কালিনিনগ্রাদ থেকে ভ্লাদিভস্তক পর্যন্ত রাশিয়ায় এখন অনেক কিছু বদলে গেছে। গোল্ডম্যান স্যাশের এক উচ্চণ্ডগতির সূচক ইঙ্গিত করছে, গত বছরের শেষ দিক থেকে রাশিয়ার বার্ষিক প্রবৃদ্ধি প্রায় পাঁচ শতাংশ থেকে শূন্যের কাছাকাছি নেমে এসেছে। রুশ উন্নয়ন ব্যাংক ভিইবি-ও মাসিক প্রবৃদ্ধির অনুরূপ প্রবণতা দেখিয়েছে। দেশটির সবচেয়ে বড় ঋণদাতা সেবারব্যাংকের ব্যবসায়িক টার্নওভারের উচ্চণ্ডগতির মাপকাঠি নিম্নমুখী। সরকারি ভাষ্য কিছুটা সংযত হলেও তারা স্বীকার করে নিয়েছে, সমস্যা দেখা দিয়েছে। এপ্রিলের শুরুতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক খাতে উৎপাদন কমে গেছে চাহিদার হঠাৎ পতনের কারণে। গত তিন বছর রাশিয়ার অর্থনীতি বেশিরভাগ পূর্বাভাসকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল। কারণ ছিল রাজস্ব খরচের উল্লম্ফন, উচ্চ পণ্যমূল্য এবং অর্থনীতির সামরিকায়ন। ২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় আগ্রাসনের পর বিশ্লেষকেরা রাশিয়ার বার্ষিক জিডিপিতে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত সংকোচনের আশঙ্কা করেছিলেন। বাস্তবে সে বছর জিডিপি কমেছিল মাত্র ১ দশমিক ৪ শতাংশ। এরপর ২০২৩ সালে ৪ দশমিক ১ শতাংশ এবং ২০২৪ সালে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ভোক্তা আস্থা প্রায় রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল। মনে হচ্ছিল, ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট হলে ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে পুতিনের ইচ্ছামতো সমঝোতা হবে এবং তাতে রাশিয়ার অর্থনীতি ২০২৫ সালে আরও ত্বরান্বিত হবে। তবে হঠাৎ দেখা দেওয়া মন্দার পেছনে তিনটি মূল কারণ রয়েছে। প্রথমত, রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভাষায় অর্থনীতির ‘গঠনগত রূপান্তর’। আগে রাশিয়া পশ্চিমমুখী ছিল এবং নিয়ন্ত্রিতভাবে হলেও ব্যক্তিখাতের কার্যক্রম গ্রহণ করতো; ২০২২ সালের পর থেকে রাশিয়া মূলত যুদ্ধাভিমুখী অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে, যার কেন্দ্রে পূর্বমুখী বাণিজ্যিক সম্পর্ক। এ রূপান্তরের জন্য ব্যাপক বিনিয়োগ প্রয়োজন হয়েছে, শুধু অস্ত্র-গুলি কারখানায় নয়, চীন ও ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের নতুন সরবরাহ শৃঙ্খল গড়তেও। ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে স্থায়ী মূলধন বিনিয়োগ বাস্তবিকপক্ষে ২০২১ সালের শেষের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেশি হয়েছে। দ্বিতীয় কারণ মুদ্রানীতি। রাশিয়ায় মাসিক মূল্যস্ফীতি দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত চার শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার ওপর রয়েছে। ফেব্রুয়ারি ও মার্চে তা ১০ শতাংশ ছাড়িয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত