
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, ইসরায়েল ও আমেরিকার চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধের সময় জাতীয় সংহতি প্রকাশ পেয়েছে। যা শত্রুর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগ্রাসীরা ভেবেছিল যে ইরানের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস করে ইরানের শাসন ব্যবস্থাকে দুর্বল করা যাবে। গত বুধবার সকালে ইরানের বিচার বিভাগের প্রধানসহ অন্য বিচারকগণ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।
ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা উল্লেখ করেন সম্প্রতিক আরোপিত যুদ্ধে ইরানি জাতির সাহসিকতা এবং ইরানের সব দল মত ও পথের মানুষের ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের কারণে শত্রুদের সব পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, এই জাতীয় ঐক্য রক্ষা করা সকলের কর্তব্য। আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেন, ১২ দিনের যুদ্ধে জনগণ দৃঢ় সংকল্প, ইচ্ছাশক্তি এবং জাতীয় আত্মবিশ্বাস দেখিয়েছে, কারণ আমেরিকা এবং তার পোষা কুকুর ইহুদিবাদী ইসরায়েলের মতো শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য চেতনা এবং প্রস্তুতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাবেক পাহলভি সরকারের এজেন্টদের বিভিন্ন ঘটনার কথা উল্লেখ করে, যারা গোপন ও ব্যক্তিগত বৈঠকেও আমেরিকার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস করত না তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ইরান সেই সময় থেকে এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তারা আমেরিকাকে তো ভয় পায় না বরং আমেরিকাকে ইরান ভয় দেখাতে সক্ষম এবং এই জাতীয় চেতনা ও ইচ্ছাশক্তিই ইরানকে মর্যাদার উচ্চ আসনে পৌঁছে দিয়েছে।
বন্ধু ও শত্রু উভয়েরই জানা উচিত যে ইরানি জাতি কোনো ক্ষেত্রেই দুর্বল পক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হবে না এ কথা জোর দিয়ে বিপ্লবের নেতা আরও বলেন, আমাদের কাছে যুক্তি এবং সামরিক শক্তির মতো প্রয়োজনীয় সমস্ত উপায় উপকরণ রয়েছে, তাই কূটনীতির ক্ষেত্রে হোক বা সামরিক ক্ষেত্রে, যখনই আমরা প্রবেশ করব, আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা পূর্ণ শক্তি নিয়ে এগিয়ে যাব।
আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেন, যদিও আমরা ইহুদিবাদী ইসরায়েলকে ক্যান্সার এবং তাদেরকে সমর্থন দেওয়ার কারণে আমেরিকাকে সমান অপরাধী মনে করি, কিন্তু আমরা কখনও আগাম হামলা চালায়নি। তবে শত্রু যখনই আগ্রাসন চালিয়েছে আমরা তাদেরকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দিয়েছি। তিনি ইহুদিবাদী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের শক্ত পাল্টা আঘাত হানার কথা জানিয়ে বলেন, ইসরায়েল পতনের দ্বারপ্রান্তে ছিল বলেই তারা আমেরিকার কাছে আবেদন করেছিল যুদ্ধ থামানোর জন্য। তারা বুঝতে পেরেছিল যে ইরানকে মোকাবিলা করতে পারবে না।
বিপ্লবের নেতা মার্কিন হামলার প্রতি ইরানের পাল্টা আক্রমণকে অত্যন্ত বড় ধরনের আঘাত বলে উল্লেখ করে বলেন, ইরান যে কেন্দ্রে আক্রমণ করেছে তা ছিল এই অঞ্চলে একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল মার্কিন সামরিক কেন্দ্র এবং যখন সংবাদ সেন্সরশিপ প্রত্যাহার করা হবে, তখন স্পষ্ট হয়ে যাবে যে ইরান কতটা বিশাল আঘাত হেনেছিল আমেরিকার ওই ঘাঁটিতে।
আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি সাম্প্রতিক যুদ্ধের সময় জাতীয় সংহতিকে গুরুত্বপূর্ণ যা কিনা শত্রুর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে জানিয়ে বলেন, আগ্রাসীরা ভেবেছিল যে যে ইরানের কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস করে ইরানের শাসন ব্যবস্থাকে দুর্বল করা যাবে। এরপর তাদের ভাড়াটে অনুচর, মুনাফিক এবং রাজতন্ত্রের অনুসারী থেকে শুরু করে লুকিয়ে থাকা গুন্ডাদের সামনে এনে, তারা জনগণকে উত্তেজিত করে এবং রাস্তায় নামিয়ে এনে ইরানের ইসলামি শাসন ব্যবস্থাকে শেষ করে দিতে পারে।