ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫, ৪ ভাদ্র ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সকালে পরীক্ষা, রাতে ফল প্রকাশ

তদন্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি
সকালে পরীক্ষা, রাতে ফল প্রকাশ

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিপ্তরের (ডিআই) একটি নিয়োগের ক্ষেত্রে একই দিন সকালে পরীক্ষা নিয়ে রাতে ফল প্রকাশ করার ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রণালয়। গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এই কমিটি গঠনের আদেশ জারি করা হয়। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন শাখার যুগ্মসচিব বরাদ হোসেন চৌধুরীকে। অন্য সদস্যরা হলেন বেসরকারি কলেজ শাখার উপসচিব আ. কুদ্দুস এবং সিনিয়র সহকারী সচিব জাবের মো. সোয়াইব। কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে মতামতসহ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। জানা গেছে, গত ৯ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন ডিআইএ-এর কয়েকটি পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ৩ হাজার ১০৫ জন প্রার্থী। ওই রাতেই লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে ডিআইএ কর্তৃপক্ষ, যা নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক বিতর্ক। ডিআইএর নিয়োগ পরীক্ষার নথি ঘেঁটে দেখা যায়, ২০২৩ সালের ২১ মে ১০টি পদে ৩০ জন এবং ২০২৪ সালের ১০ অক্টোবর নতুন বিজ্ঞপ্তিতে ১১টি পদে ৩৩ জন নিয়োগের ঘোষণা দেওয়া হয়। দুই দফায় আবেদন করেন মোট ২৪ হাজার ১১২ জন প্রার্থী।

তবে পরীক্ষায় অংশ নেন মাত্র ৩ হাজার ১০৫ জন। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে প্রশ্নপত্র তৈরি থেকে খাতা মূল্যায়ন এবং ফল প্রকাশ—সবই অস্বাভাবিক দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়। পরীক্ষার কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন এবং খাতা মূল্যায়নের পুরো দায় ছিল ডিআইএ কর্তৃপক্ষের ওপর। এতে নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। সূত্র জানায়, অডিটর, সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর, উচ্চমান সহকারী ও অফিস সহায়ক এই চার পদে পরীক্ষা নেওয়া হয়। রাজধানীর তিনটি কেন্দ্রে পরীক্ষা শেষে রাতেই ১৫২ জনের ফল প্রকাশ করা হয়। এ নিয়ে চাকরিপ্রার্থীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অনেকে অভিযোগ করেন, ডিআইএর বর্তমান পরিচালকের চাকরির মেয়াদ শেষ হতে চলায় তড়িঘড়ি করে নিয়োগ সম্পন্নের চেষ্টা করা হয়। এছাড়া ডিপিসি (ডিপার্টমেন্টাল প্রমোশন কমিটি) কমিটিতে নিয়ম ভেঙে একজন শিক্ষা পরিদর্শককে দায়িত্ব দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিপ্তরের এক কর্মকর্তা নামণ্ডপরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যে ধরনের পদের জন্য এই নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল, সেখানে সাধারণত প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, খাতা মূল্যায়ন ও ফল প্রকাশের জন্য একটি স্বচ্ছ ও সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। কিন্তু এখানে সবকিছু এক দিনে-সকালে পরীক্ষা, রাতে ফল প্রকাশ এটা কোনোভাবেই স্বাভাবিক নয়। এতে স্পষ্ট সন্দেহ দেখা দেয়, আগেই কোনো একটি নির্দিষ্ট তালিকা তৈরি ছিল কি না। নিয়োগ কার্যক্রমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ডিআইএ নিজেরাই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেছে, যার ফলে স্বচ্ছতা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠে এসেছে। প্রসঙ্গত, ডিআইএর নিয়োগ নিয়ে এটাই প্রথম বিতর্ক নয়। ২০২৩ সালের বিজ্ঞপ্তির পর থেকে বিভিন্ন সময় হওয়া সব নিয়োগ নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত