
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় বাসের ধাক্কায় নিহত ছয় আরোহীর প্রত্যেকের জন্য তাদের পরিবারকে দেড় কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই সড়ক দুর্ঘটনায় দুই পরিবারের আহত পাঁচজনকে অর্ধকোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। ওই দুর্ঘটনায় ভুক্তভোগী দুই ব্যক্তির করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল সোমবার এ রুল দেন। পাশাপাশি সড়ক পরিবহন আইনের তিনটি ধারার বিধান (আইনের ৯৮, ৯৯ ও ১০৫ ধারা) সংশোধন প্রশ্নে রুল হয়েছে। এর আগে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় টোল পরিশোধের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কারকে ধাক্কা দিয়ে দুমড়েমুচড়ে দেয় ‘বেপারী পরিবহনের’ একটি বাস। এতে প্রাইভেট কারে থাকা একই পরিবারের চারজন ও মোটরসাইকেলের দুই আরোহীর মৃত্যু হয়। দুই পরিবারের পাঁচজনসহ আরও কয়েকজন আহত হন। এ দুর্ঘটনায় পরিবারের সদস্য হারানো প্রাইভেট কারের মালিক নূর আলম এবং মোটরসাইকেল চালক সুমন মিয়া গত ফেব্রুয়ারি মাসে রিটটি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফজলুর রহমান, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী শামসুর রহমান (বাদল) ও মো. রিপন হোসাইন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী। পরে আইনজীবী শামসুর রহমান বলেন, ওই সড়ক দুর্ঘটনায় নূর আলমের পরিবারের চারজন ও সুমন মিয়ার পরিবারের দুজনসহ ছয়জন নিহত হন। নূর আলম ও সুমন মিয়াসহ তাঁর পরিবারের আরও পাঁচজন আহত হন। নিহত প্রত্যেকের জন্য তাদের পরিবারকে দেড় কোটি টাকা করে এবং নূর আলম ও সুমন মিয়াসহ আহত প্রত্যেককে অর্ধকোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। সড়ক পরিবহনসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক ও বেপারী পরিবহনের মালিক কর্তৃপক্ষসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। ভুক্তভোগী দুই ব্যক্তির করা রিটে সড়ক পরিবহন আইনের ৯৮, ৯৯ ও ১০৫ ধারা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। আইনের ৯৮ ধারায় ওভারলোডিং বা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে মোটরযান চালনার ফলে দুর্ঘটনায় জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতিসাধনের দণ্ড; ৯৯ ধারায় অপরাধ সংঘটনে সহায়তা, প্ররোচনা ও ষড়যন্ত্রের দণ্ড এবং ১০৫ ধারায় দুর্ঘটনাসংক্রান্ত অপরাধের দণ্ড সম্পর্কে বলা আছে।