ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের প্রস্তাব বাদ দেওয়ার পরামর্শ সিপিডির

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের প্রস্তাব বাদ দেওয়ার পরামর্শ সিপিডির

বাংলাদেশে সংসদীয় জবাবদিহি ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করতে বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নতুন প্রস্তাব দিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটি মনে করে, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠন বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে বাস্তবসম্মত নয়। বরং বিদ্যমান এককক্ষবিশিষ্ট সংসদ ব্যবস্থাকেই আইনি, প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত সংস্কারের মাধ্যমে শক্তিশালী করা উচিত। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত জাতীয় সংলাপে এ আহ্বান জানান সিপিডির গবেষকরা। ‘প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষ কি জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে পারবে?’ শীর্ষক সংলাপের আয়োজন করে সিপিডি।

সাম্প্রতিক সময়ে সংসদীয় সংস্কার ও জবাবদিহিবিষয়ক একটি গবেষণা শেষে সিপিডি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ঐকমত্য কমিশনকে আহ্বান জানিয়েছে, যেন তারা চূড়ান্ত ঐকমত্যের তালিকা থেকে ‘দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠন’ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি বাদ দেন।

গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালনক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর নিজাম আহমেদ।

সিপিডির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, সংবিধান ও নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবিত বেশ কিছু সংস্কার ধারণা যেমন, বাইক্যামেরালিজম, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব, দলনিরপেক্ষ ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি বা নিয়োগ কমিটি গঠন নীতিগতভাবে আকর্ষণীয় হলেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় এসব কার্যকর নয়।

গবেষণায় বলা হয়, দীর্ঘদিনের দলীয় আনুগত্য, পৃষ্ঠপোষকতা এবং ‘বিজয়ী সব পায়’ রাজনীতির সংস্কৃতিতে এসব প্রস্তাব কার্যত প্রতীকী হয়ে থাকে। এতে জবাবদিহি বা ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার বদলে রাজনৈতিক অচলাবস্থা, প্রভাব বিস্তার ও ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ আরও বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।

সিপিডি মনে করে, কাঠামোগত ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ছাড়া শুধু প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার কার্যকর জবাবদিহি আনতে পারবে না। তাই উপরের কক্ষ গঠন না করে বিদ্যমান সংসদকেই কার্যকর করার ওপর জোর দিতে হবে।

সিপিডি সংসদীয় ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে কয়েকটি বাস্তবধর্মী পদক্ষেপের পরামর্শ দিয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোতে বিরোধীদলীয় এমপিদের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ, রাজনৈতিক দলের তহবিল সংগ্রহ ও ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, স্থানীয় সরকারকে আর্থিকভাবে আরও স্বনির্ভর করা, স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং দলত্যাগ রোধে আইনি সংস্কার।

সিপিডি মনে করে, শাসক দল যেন নির্বাহী দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করতে পারে, এজন্য গুরুত্বপূর্ণ ও সাংবিধানিক পদে সরকারের নিয়োগের ক্ষমতা থাকা উচিত।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত