ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে উত্তীর্ণ ছয় হাজার ৫৩১ জন প্রার্থীকে নিয়োগপত্র দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের এ রায়ের প্রতিবাদে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে গিয়ে অবস্থান নিতে চেয়েছিলেন শিক্ষকরা।
তবে তাদের রাজধানীর মিন্টো রোডে আটকে দেয় পুলিশ। পরে শিক্ষকরা সেখানে বসে পড়েন। কিছুসময় পর পুলিশ জলকামান নিয়ে এসে তাদের সেখান থেকেও সরিয়ে দেয়। গত শুক্রবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থলে দেখা যায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা হাইকোর্টের রায় বাতিলসহ যোগদানের তারিখ ঘোষণার দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাত্রা করেন। তারা মিন্টো রোডের সামনে এলে পুলিশ বাধা দেয়। সেই সময় শিক্ষকরা মিন্টু রোডে বসে পড়েন। পরে পুলিশ তাদের সেখানে থেকে উঠিয়ে দেয়। তাদের মিন্টো রোডের সামনে থেকে পুলিশ শাহবাগ হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের দিকে নিয়ে যায়।
সহকারী শিক্ষকরা জানান, আমাদের সব পরীক্ষাসহ নিয়োগের সব কিছু শেষ হয়ে গেছে। এখন শুধু যোগদানের বাকি রয়েছে। যোগদানের তারিখ ঘোষণা করার আগে আমাদের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। হাইকোর্টের এ রায় বাতিল করতে হবে এবং আমাদের যোগদানের তারিখ ঘোষণা করতে হবে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে উত্তীর্ণ ছয় হাজার ৫৩১ জন প্রার্থীকে নিয়োগপত্র দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। একইসঙ্গে মেধার ভিত্তিতে পুনরায় নিয়োগ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে গত ১৯ নভেম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগপত্র দেয়ার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট। কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করে তাদের নিয়োগ দেয়ায় আদালত এ আদেশ দেন। পাশাপাশি রুল জারি করেন আদালত।
গত ৩১ অক্টোবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এতে উত্তীর্ণ হন ৬ হাজার ৫৩১ জন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এ ফল প্রকাশ করা হয়। গত ২৮ মে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) মৌখিক পরীক্ষাসহ নিয়োগপ্রক্রিয়া ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। এরপর মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণসংক্রান্ত হাইকোর্ট যে স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন, আপিল বিভাগ তা খারিজ করে দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মৌখিক পরীক্ষা নেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। তবে এই নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে গণমাধ্যমে আসা অভিযোগ অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।