ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর কবলে উপকূল

সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর কবলে উপকূল

সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল ও সমুদ্রবন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সঙ্গে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ফলে দেশের চারটি সমুদ্রবন্দর-চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রাকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। আবহাওয়াবিদদের মতে, বর্তমানে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বঙ্গোপসাগরের উত্তরাংশে এবং বাংলাদেশে প্রবলভাবে সক্রিয় রয়েছে। এটি মূলত বর্ষাকালের একটি স্বাভাবিক জলবায়ুগত প্রক্রিয়া হলেও যখন তা বেশি সক্রিয় হয়, তখন তা ব্যাপক বৃষ্টিপাত ও বাতাসের গতি বাড়িয়ে তোলে, যার ফলে উপকূলীয় এলাকাগুলো ঝুঁকির মুখে পড়ে। এই সময়ে নদীবন্দর, জেলেদের মাছ ধরার নৌকা ও সামুদ্রিক যাত্রার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন হয়। বিষয়টি নিয়ে আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক জানান, সাধারণত দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রতি বছর জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়কালে বঙ্গোপসাগর হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এটি ভারত মহাসাগরের উষ্ণ জলীয় বাষ্প বহন করে আনে এবং ভূমি এলাকায় পৌঁছেই ওই বাষ্প ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টির সৃষ্টি করে। যখন এই জেলেরা : মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে সাগর উত্তাল। বাগেরহাটের মোংলা ও সুন্দরবন এলাকায় হচ্ছে ভারী বৃষ্টিপাত। মোংলা বন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত বহাল রেখেছে আবহাওয়া অফিস। এতে করে ব্যাহত হচ্ছে জাহাজের পণ্য খালাস। বৃষ্টির সময় খালাস কার্যক্রম করতে না পারায় লোকসানের মুখে পড়ছে আমদানিকারকরা। গত বুধবার থেকে গতকাল শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত মোংলা বন্দরে কখনও থেমে থেমে আবার কখনও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বিড়ম্বনায় শহরের চলাচলকারীরা। পণ্য খালাস বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ম আয়ের মানুষরা।

মোংলা বন্দরের উপ-পরিচালক কামরুজ্জামান বলেন, ‘মোংলা বন্দরে অবস্থানকরা দেশ-বিদেশি জাহাজের মধ্যে চাল বোঝাই ৩টি জাহাজ অবস্থান করছে। বৃষ্টির সময় এ জাহাজের চাল খালাস করা যাচ্ছে না। এছাড়া সারবাহী জাহাজেরও একই অবস্থা। বৃষ্টির সময় সার খালাস করতে গেলে পানি ঢুকে সার গলে যাবে এবং চালে পানি লাগলে চাল পচে নষ্ট হবে। তাই একটু বৃষ্টি দেখলেই নাবিকরা জাহাজের কাজ বন্ধ করে দেয়। হালকা ও ভারি বৃষ্টির ফলে মোংলা বন্দরে এ সব সামুদ্রিক জাহাজ থেকে অন্যান্য পণ্য খালাস কাজও চরম ব্যাহত হচ্ছে।

বন্দরের হারবার বিভাগ জানায়, গতকাল শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত সার, ক্লিংকার, পাথর, গ্যাস, ফ্লাই আ্যাশ ও চালসহ ৯টি বাণিজ্যিক জাহাজ এ বন্দরে পণ্য খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। নতুন একটি কনটেইনারবাহী জাহাজ মোংলা বন্দরে নোঙর করবে। তবে বন্দরের জেটি এলাকায় কার্যক্রম রয়েছে স্বাভাবিক।

অন্যদিকে বৈরী আবহাওয়াতে সুন্দরবনের অভ্যন্তরে ও সাগরে জেলেরা মাছ ধরতে পারছে না। ৫৮ দিন বন্ধ থাকার পর নতুন করে জেলেরা সাগরে গিয়েও দুবলার চর এলাকায় সাগর থেকে আহরিত মাছ নিয়েও উঠে আসতে পারছেনা তারা। এতে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে দুবলার জেলেদের। আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে বঙ্গোপসাগর প্রচণ্ড উত্তল। মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে টানা বৃষ্টি হচ্ছে, আকাশও মেঘাচ্ছন্ন এবং রাত-দিন বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া গত বুধবার সকাল থেকে গতকাল শুক্রবারও বন্দর ও সুন্দরবন উপকূল অঞ্চলে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত