জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পরে আমাদের অনেক আকাঙ্ক্ষা ছিল প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ গঠন হবে। কিন্তু কোন বিশ্ববিদ্যালকে ছাত্র সংসদ নির্বাচন এখনো কার্যকর হয়নি। নিজের মত প্রকাশের জন্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কার এবং অধিকারের জন্য আপনারা ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে সরব হন, আপনাদের দাবির সাথে আমরা আছি।
বুধবার (৯ জুলাই) রাত ১১টায় কুষ্টিয়ার ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রধান ফটকে করা জুলাই পদযাত্রা ও পথসভায় বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন তিনি। পথসমাবেশটির আয়োজন করেন ইবি শাখা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
এসময় তিনি আরো বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীদের বিদ্রোহের কথা লেখা থাকবে গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাসে। আমরা যখন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে যাই আমরা ভুলে যাই যে আমরা রাজনৈতিক দলের নেতা। মনে হয় আমরা আপনাদের সাথেই সেই সহযোদ্ধা। আমরাও ছাত্র, আমরাও শিখছি। জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে আমরা গণঅভ্যুত্থানের গল্পটা আপনাদেরকে বলতে এসেছি।
আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল আকাশচুম্বী এবং এখনো তা আছে। আমরা গণঅভ্যুত্থানকে স্রেফ একটা রেজিম চেঞ্জ হিসেবে দেখি না। মানুষের জীবনের পরিবর্তন আনবে গণঅভ্যুত্থান, রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কার আনবে। গণঅভ্যুত্থানের প্রধানতম লেজিটেমিসি হচ্ছে ছাত্ররা। বাংলাদেশের যেই প্রান্তে যাবেন এটা বলা হবে যে, এটা ছাত্রদল আন্দোলন ছাত্ররা রেজিম চেইঞ্জ করেছে। ফলে ছাত্রদের উপর মানুষের যে আস্থা, ইতিহাসে বারবার জনগণ এই আস্থা রেখেছে। ছাত্রদের সেই আস্থার জায়গাটা ধরে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, চাকরির ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনৈতিক বৈষম্য করা হতো। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা শুনলে তাদেরকে রাজনৈতিক ট্যাগ দিয়ে চাকরি থেকে বাতিল করা হতো। আগামীর বাংলাদেশে এরকম কোন বৈষম্য দেখতে চাই না।আমরা দেখেছি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দাড়ি-টুপি পড়া থাকলে বা মুসলমানের চিহ্ন থাকলে তাদেরকে শিবির ট্যাগ দিয়ে নির্যাতন করা হতো। হিজাব নেকাব পড়া থাকলে তাদেরকে ছাত্রী সংস্থার ট্যাগ দিয়ে নির্যাতন করা হতো। এই ট্যাগের রাজনীতি থেকে আমরা বের হতে চাই। কোন ধরনের ট্যাগিং যাতে না চলে, রাজনৈতিক ট্যাগ দিয়ে যাতে কাউকে হেনস্থা করা না হয় এরকম একটা বিশ্ববিদ্যালয় চাই। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গণতান্ত্রিক সহ অবস্থান থাকবে বাংলাদেশের বুদ্ধিভিত্তিক নেতৃত্ব, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক নেতৃত্ব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গড়ে উঠবে।
এসময় ইবি শাখার সহ-সমন্বয়ক তানভীর মন্ডলের সঞ্চালনায় পথসমাবেশে উপস্থিত ছিলেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, প্রধান সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইবি শাখা সমন্বয়ক এস এম সুইট, সহ-সমন্বয়ক গোলাম রব্বানী এবং ইয়াসিরুল কবীর সৌরভসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনগণ।