
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনী চলতি বছর একটি নতুন সামরিক প্রযুক্তি সংযোজন এবং তিনটি যৌথ সামরিক মহড়ার মাধ্যমে তাদের কৌশলগত ও নিরাপত্তাগত অংশীদারিত্ব আরও গভীর করতে যাচ্ছে। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হচ্ছে দুই দেশের অভিন্ন নিরাপত্তা স্বার্থকে শক্তিশালী করা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা।
টাইগার লাইটনিং মহড়া, যা টানা চতুর্থবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি প্যাসিফিক যৌথভাবে আয়োজন করছে। এই মহড়ার মাধ্যমে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান, জঙ্গলে টিকে থাকার কৌশল, আহতদের দ্রুত উদ্ধার ও চিকিৎসা এবং তাৎক্ষণিক বিস্ফোরক প্রতিরোধে সামরিক সদস্যদের সক্ষমতা বাড়ানো হবে। এটি বাস্তব পরিস্থিতির অনুরূপ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সেনাদের মানসিক ও কৌশলগত প্রস্তুতি বাড়াবে। টাইগার শার্ক ২০২৫ মহড়া, যা ‘ফ্ল্যাশ বেঙ্গল সিরিজের’ অংশ, এই মহড়ায় বাংলাদেশ স্পেশাল ওয়ারফেয়ার ডাইভিং অ্যান্ড স্যালভেজ ও প্যারা কমান্ডো ব্রিগেডের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ কৌশল অনুশীলন করবে। এখানে ব্যবহার করা হবে যুক্তরাষ্ট্রের উন্নত সামরিক সরঞ্জাম, যা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ব্যবহারের অনুশীলন ও সক্ষমতা বাড়ানোর সুযোগ দেবে।
প্যাসিফিক অ্যাঞ্জেল মহড়া বাংলাদেশে এবার চতুর্থবারের মতো অনুষ্ঠিত হবে। এখানে সি-১৩০ বিমান বহর, মানবিক সহায়তা, দুর্যোগ মোকাবিলা, অনুসন্ধান ও উদ্ধার (ঝঅজ), এবং অ্যারোমেডিকেল ইভাকুয়েশন প্রশিক্ষণ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এর ফলে মানবিক সংকটের সময়ে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানো এবং আক্রান্ত জনগোষ্ঠীকে দ্রুত সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার সক্ষমতা বাড়বে।
সবশেষে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে আরকিউ-২১ ব্ল্যাকজ্যাক মানববিহীন আকাশযান ব্যবস্থা (টঅঝ) চালু করছে, যা সামুদ্রিক ও সীমান্ত পর্যবেক্ষণে ব্যবহৃত হবে। সেনা ও নৌবাহিনীর সমন্বিত একটি ইউনিট এই অত্যাধুনিক ড্রোন সিস্টেম পরিচালনা করবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও নজরদারির সক্ষমতা আরও বাড়বে, বিশেষ করে শান্তিরক্ষা মিশন এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থায়।
এই সমস্ত উদ্যোগ পারস্পরিক আস্থা ও সামরিক কৌশলের উন্নয়ন ঘটাবে এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক হবে।