ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ‘প্রশিক্ষণ বিমান’ বিধ্বস্ত হয়ে মর্মান্তিক হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপির এই দুই শীর্ষ নেতা নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন এবং মহান আল্লাহপাক রাব্বুল আল-আমিন যেন সেইসব শোকার্ত পরিবারগুলোকে সন্তান হারানো কিংবা আহত হওয়ার ঘটনায় ধৈর্য ধারণের ক্ষমতা দান করেন এই দোয়া করেছেন।
বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণকারী শিক্ষার্থীদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনাসহ আগুনে দগ্ধ শিক্ষার্থী যারা গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছে, তাদের আশু-সুস্থতা কামনা করেছেন বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। পাশাপাশি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের সার্বিক খোঁজ-খবর নিচ্ছেন তারা।
বিএনপির চেয়ারপার্সন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান-দলের সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উত্তরার মাইলস্টোনে দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত পরিবারের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের রক্ত দানের জন্যেও দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
এদিকে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান-এর নির্দেশে তাৎক্ষণিকভাবে গতকাল সোমবার দুপুরেই ঘটনাস্থলে ছুঁটে যান- বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী ও আরেক যুগ্ম-মহাসচিব শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, দলের প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র আহবায়ক আমিনুল হক এবং ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনসহ দলের একাধিক সংগঠনের প্রতিনিধি দল। এছাড়া বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডাঃ রফিকুল ইসলাম দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনা অনুযায়ী- একটি উদ্ধারকারী টিমসহ অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে উত্তরার মাইলস্টোনের বিমান দুর্ঘটনাস্থলে ছুঁটে যান। এরপর প্রয়োজনীয় তৎপরতায় অংশ নেয় তার উদ্ধারকারী টিম। এদিকে, ঢাকার উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহতদের দেখতে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল সোমবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আলোচনা সভা চলাকালে সেখান থেকে সরাসরি হাসপাতালে চলে যান তিনি। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবীর খান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে মহাসচিব জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে গেছেন। এদিন দুপুর ১টা ৬ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণ বিমানটি উড্ডয়ন করে। এরপরই সেটি বিধ্বস্ত হয়। আইএসপিআর থেকে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১৮ জন এবং আহত হয়েছেন ১৬৪ জন। এরমধ্যে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন আছেন ৭০ জন। সেখানে মারা গেছেন দুজন। এছাড়া কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৮ জন, সিএমএইচে চিকিৎসাধীন ১৪ জন ও নিহত ১১ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিহত দুইজন, উত্তরা লুবনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে চিকিৎসাধীন ১১ জন ও নিহত ২, উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৬০ জন ও নিহত ১ জন এবং উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ১ জন চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানিয়েছে আইএসপিআর। প্রসঙ্গত, বিমান দুর্ঘটনায় পর থেকে বিএনপির একাধিক অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উত্তরায় ঘটনাস্থলে স্বেচ্ছাসেবকের কাজ শুরু করেন। লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছেন।