দিনাজপুরে হস্তশিল্প তৈরি করে সফল উদ্যোক্তা হয়েছেন শামিমা নাসরিন। ঘরে বসেই তৈরি করছেন ড্রিমক্যাচার ও ম্যাক্রামে পণ্য। এতে লাখ টাকা আয়ের পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে ৩০ নারীর। তার পণ্য যাচ্ছে বিদেশেও। অনলাইনে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার অর্ডার পাচ্ছেন। পণ্যের ডিজাইন ও মানের কারণে প্রশংসিত হচ্ছেন তিনি। দিনাজপুর শহরের পশ্চিম রামনগর লালবাগ এলাকার একটি ভাড়া বাড়ি থেকে কাজ শুরু করেন শামিমা নাসরিন। মাত্র ৩ হাজার টাকার পুঁজি নিয়ে ২০২০ সালের করোনার লকডাউনের সময় হাতে সুতার কাজ দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন। শামিমা নাসরিন বলেন, ‘ছোটবেলা কেটেছে লক্ষ্মীপুরে। মায়ের কাছ থেকেই হস্তশিল্প শিখেছি। দিনাজপুরে আসার পর স্বামীর অনুপ্রেরণায় নতুনভাবে যাত্রা শুরু করি। শুরুটা ছিল নিজের ঘর সাজানোর শখ থেকে। এখন সেই শখই হয়ে উঠেছে পেশা।’ ঘর সাজানোর কাজে ব্যবহৃত তার তৈরি পণ্যের মধ্যে রয়েছে- ড্রিমক্যাচার, ম্যাক্রামে ওয়ালম্যাট, জায়নামাজ হ্যাঙ্গার, প্ল্যান্ট হ্যাঙ্গার, ম্যাক্রামে শেলফ, টেবিল রানার, কুশিকাটার কাজ, বুনন টেবিল, বেতের ঝুড়ি, কোরআন হ্যাঙ্গার, ম্যাক্রামে আয়না ও লাক্সারি ক্যানভাস ড্রিমক্যাচার। এসব পণ্য তৈরি হয় সুতা, দড়ি, পালক, বেত ও মালয়েশিয়ান বোর্ড ব্যবহার করে। শামিমার ফেসবুক পেজ ‘চতুর্ভুজ’-এর মাধ্যমেই প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার অর্ডার পাচ্ছেন। এসব পণ্য হোম ডেলিভারির মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। ক্যাশ অন ডেলিভারিরভিত্তিতে লেনদেন সম্পন্ন হয়। পণ্যের দাম শুরু হয়েছে মাত্র ২০০ টাকা থেকে, আর বড় ডিজাইনের পণ্যের দাম ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। তার প্রতিষ্ঠান এখন দক্ষ নারী কর্মী তৈরির একটি প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে। চার বছর ধরে এখানে কাজ করছেন কামরুন্নাহার কাকলি। তিনি বলেন, এখানে কাজ শিখে এখন মাসে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা আয় করছি। এতে আমার সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ চালাতে পারছি।’ কলেজছাত্রী মনীষা আক্তার বলেন, ‘আমি আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রী। এখানে কাজ শিখে ওয়ালম্যাট তৈরির বিভিন্ন ডিজাইনের দক্ষতা অর্জন করেছি। ভবিষ্যতে নিজেই উদ্যোক্তা হতে চাই।’ প্রতিষ্ঠানের প্রোডাকশন ম্যানেজার আয়েশা সিদ্দিকা জানান, ‘চার বছর ধরে এখানে কাজ করছি। এখন মাসে ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা বেতন পাচ্ছি। লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নিজেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়তে চাই।