
দাগনভূঞা উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে চিচিঙ্গা, ধুন্দল, ঢ্যাঁড়সসহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজির আবাদ করছেন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা আবু ছায়েদ জুটন। ভালো ফলন ও লাভ পাওয়ায় চিচিঙ্গা চাষে ঝুঁকছেন এলাকার অন্যান্য কৃষকরা। ধান চাষে অনুপযোগী এবং বন্যার পানি থেকে উঁচু জমিতে চিচিঙ্গা চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন তিনি। খরচ কম এবং ফলনের কারণে লাভবান হচ্ছেন তিনি। উপজেলার পূর্ব চন্দ্রপুর মডেল ইউনিয়নের জগতপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, তিনি আলাদা আলাদা প্লটে চিচিঙ্গা, ধুন্দল, ঢ্যাঁড়স, বরবটি, সিম, পুঁইশাক, পাটশাক, কলমিশাক, ডাটাসহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করেছেন। নিরাপদ বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে ক্ষতিকর পোকামাকড়দের নিয়ন্ত্রণ করতে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ, হলুদ আঠালো ফাঁদ এবং পরিবেশবান্ধব জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করছেন। বাঁশের খুঁটি, লাইলন সুতা ও জিয়াই তার ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে মাঁচা। আর মাচায় ঝুলছে ছোট বড় অসংখ্য চিচিঙ্গা ও ধুন্দল। যা একসময় বাড়ির উঠানে ও ঘরের চালে শুধু পরিবারের সবজির চাদিহা পূরণের জন্য স্বল্প পরিসরে চাষ করা হতো। তবে বর্তমানে চাষ হচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে। চাহিদা বেশি থাকায় বিভিন্ন অঞ্চলে ও এলাকার পাইকারদের কাছে এসব সবজি বিক্রি করছেন। তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা আবু ছায়েদ জুটন বলেন, ৩৩ শতক জমিতে চিচিঙ্গা, ৩৩ শতক জমিতে ঢ্যাঁড়স, ৩৬ শতক জমিতে ধুন্দল ও ৪০ শতক জমিতে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজির আবাদ করেছি। চিচিঙ্গা পাইকারি বিক্রি করছি ১ কেজি ২৫ টাকা, ধুন্দল ১ কেজি ২৮ টাকা ও ঢ্যাঁড়স ১ কেজি-২০ টাকা। চাহিদা থাকায় অন্যান্য শাকসবজিও ভালো বিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, মাচা, শ্রমিকসহ সবমিলিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। প্রায় আড়াই লাখ টাকার সবজি বিক্রি করেছি। বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করছি। তিনি আরও বলেন, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মারুফ প্লটে সরেজমিন এসে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করছেন। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মারুফ বলেন, জুটোন কৃষকদের মাঝে তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। পড়াশোনা শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে কৃষিতে অগ্রসর হয়েছেন। তিনি একজন আদর্শ কৃষক। বাণিজ্যিক কৃষি করে চাকরিজীবীর থেকেও বেশি আয় করার সুযোগ থাকে। আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তাকে বিভিন্ন প্রকার সহয়োগিতা ও পরামর্শ প্রদান করছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. কামরুজ্জামান বলেন, বর্ষাকালে বাজারে সবজি কম থাকায় দাম একটু বেশি থাকে। এ সময় যে সব কৃষকরা সবজি উৎপাদন করতে পারে তারা অর্থনৈতিকভাবে বেশি লাভবান হন।