
দীর্ঘদিন ধরে চলমান ইসরায়েলি অবরোধের কারণে ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সংকটে গাজার হাসপাতালগুলো কার্যত অকেজো হয়ে পড়ছে। তবে আন্তর্জাতিক চাপে অবশেষ গাজায় ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। গতকাল শনিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সমন্বয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম বহনকারী ট্রাকের একটি বহর গাজা উপত্যকায় প্রবেশের কথা রয়েছে। এই চালানে কেবল চিকিৎসা সরবরাহ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এবং কোনো খাদ্য সামগ্রী নেই।
মন্ত্রণালয় আরও উল্লেখ করেছে, ‘বিভিন্ন প্রাণঘাতি রোগে আক্রান্ত রোগী এবং ইসরায়েলি হামলায় আহতদের জীবন বাচাতে ও চিকিৎসা অব্যাহত রাখার জন্য এই সরবরাহগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং জরুরিভাবে প্রয়োজন।’
ডব্লিউএইচওর প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়েসাস এক এক্স বাতায় জানিয়েছেন, মিশরের আল-আরিশ থেকে গাজার জন্য কেরেম শালোম ক্রসিংয়ে ১০টি ট্রাক স্থানান্তর করেছে। এসব ট্রাকে প্রয়োজনীয় ওষুধ, স্বাস্থ্য পরীক্ষার কিটসহ অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জাম রয়েছে। ১২টি রক্তের প্যালেটসহ চিকিৎসা সরবরাহের জন্য আরও দুটি ট্রাক প্রস্তুত করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, গাজা উপত্যকা বর্তমানে তার ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে গাজার সব সীমান্ত ক্রসিং সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে খাদ্য, চিকিৎসা সরবরাহ এবং মানবিক সাহায্যের প্রবেশ ইসরায়েলি অবরোধের কারণে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রুপ নিয়েছে। ডব্লিউএফপির অনুমান অনুসারে, ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজার জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ একটানা বেশ কয়েক দিন ধরে কিছু না খেয়ে আছে। এরমধ্যে ১ লাখ নারী ও শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা এবং অধিকার গোষ্ঠীগুলো উপত্যকাজুড়ে ক্ষুধার কারণে মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমেই আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন, বিশেষ করে শিশু, অসুস্থ এবং বয়স্কদের মধ্যে চরম অপুষ্টি দেখা দিয়েছে।