
গাজীপুর মহানগর পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার মো. নাজমুল করিম খানের ব্যবহৃত ব্যক্তিগত সাদা রঙয়ের গাড়ি ঘুস ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত কি না সে বিষয়ে অনুসন্ধান করতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি দিয়েছেন দুইজন আইনজীবী। গতকাল বৃহস্পতিবার দুদক চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানে চিঠিতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাদিম মাহমুদ ও নাদিম আলফাজ আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরুর আবেদন করেছেন।
চিঠিতে তারা জানিয়েছেন, মো. নাজমুল করিম খানের ব্যবহৃত ব্যক্তিগত সাদা রঙয়ের গাড়িটি ঘুস ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে কি না তা দুদক আইন এর তফসিলভুক্ত বিষয়। এটি দুদকের এখতিয়ারভুক্ত। এ বিষয়ে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে অনুসন্ধান শুরু ও প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া আবশ্যক। এ বিষয়ে ফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করে নাজমুল করিমের বক্তব্য জানা যায়নি।
গত ২৪ আগস্ট মো. নাজমুল করিম খান-কে নিয়ে ‘পুলিশ কমিশনার থাকেন ঢাকায়, রাস্তা বন্ধ করে ঢোকেন গাজীপুরে’ শীর্ষক খবর প্রকাশ করে একটি জাতীয় দৈনিক। যেখানে উল্লেখ করা হয়, গাজীপুরের পুলিশ কমিশনারের প্রটোকলের জন্য উড়ালসড়ক ফাঁকা রাখতে হয়। আর এই সময়ে যাত্রী, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী- সবার যাতায়াত থমকে থাকে। যানজটে হাঁসফাঁস করা মানুষের অনেকে জানেনও না, এই নগরের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রক ব্যক্তি থাকেন অন্য শহরে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জিএমপি কমিশনার যে গাড়িতে চড়ে যাতায়াত করেন, সেই গাড়ি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। নতুন সাদা রঙের গাড়িটি (প্রাডো) সরকারি নাকি ব্যক্তিগত, সেটাও পরিষ্কার নয়। গাড়িতে রেজিস্ট্রেশনের পূর্ণাঙ্গ কোনো নম্বর দেখা যায়নি।
পরে ২৫ আগস্ট জিএমপি কমিশনার মো. নাজমুল করিম খান-কে রাস্তা বন্ধ করে কর্মস্থলে যাওয়া-আসা করায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাদিম মাহমুদ বলেন, গত ২৪ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ বিষয়ে পরবর্তীতে কোনো আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। উনি যে গাড়ি ব্যবহার করছেন তা ওনার স্যালারির মধ্যে কাভার করছে না। এ জন্য দুদকে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, ওনার গাড়িটির অর্থের সোর্স কোথা থেকে এসেছে, ঘুস ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে কি না, উনি যে রাস্তা বন্ধ করছেন, কোন আইনের প্রটোকলে রাস্তা বন্ধ করছেন, মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি করছেন; এর জন্য যাতে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয় তদন্ত সাপেক্ষে। সেই জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব ও আইজিপি এই দুইজনকে লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তাদের টাইমফ্রেম দেওয়া হয়েছে ৭দিন। উচ্চপদস্থ তদন্ত কমিটি গঠন করে আইনগত ব্যবস্থা যেন নেওয়া হয়। তিনি বলেন, গত ২৫ আগস্ট ওই কমিশনারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। কিন্তু আজ পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু জানতে পারিনি। আইওয়াশ করে সব কিছু পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা যেন না হয়।