ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

পাকিস্তান-আফগানিস্তান আবার যুদ্ধবিরতিতে

পাকিস্তান-আফগানিস্তান আবার যুদ্ধবিরতিতে

বিতর্কিত সীমান্তে সপ্তাহব্যাপী চলা ব্যাপক ও প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর কাতার এবং তুরস্কের মধ্যস্থতায় অনুষ্ঠিত আলোচনার মাধ্যমে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল রোববার সকালে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে এবং ‘দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে একমত হয়েছে’।

দোহা জানিয়েছে, দুই দেশ আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আবার বৈঠকে বসবে, যাতে যুদ্ধবিরতি টেকসই হয় এবং তা গ্রহণযোগ্য ও টেকসইভাবে কার্যকর হওয়ার বিষয়টি নির্ভরযোগ্যভাবে যাচাই করা যায়।

এর আগে উভয় দেশই গত শনিবার দোহায় শান্তি আলোচনা শুরুর কথা জানিয়েছিল। এক সপ্তাহের সংঘর্ষে কয়েক ডজন মানুষ নিহত এবং শত শত লোক আহত হওয়ার পর এ আলোচনা শুরু হয়। ২০২১ সালে তালেবান কাবুল দখল করে নেওয়ার পর থেকে দক্ষিণ এশিয়ার এ দুই প্রতিবেশীর মধ্যে এটিই ছিল সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা।

আফগান সরকারের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ গত শনিবার বলেন, আগের ঘোষণা অনুযায়ী দোহায় পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা হবে। তিনি জানান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা মুহাম্মদ ইয়াকুবের নেতৃত্বে আফগান প্রতিনিধিদল ইতিমধ্যে কাতারের রাজধানীতে পৌঁছেছে।

ইতিমধ্যে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ আফগান তালেবান সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

‘আলোচনায় মূলত পাকিস্তানের ভেতর আফগান ভূখণ্ড থেকে চলমান সন্ত্রাসী হামলা বন্ধে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ এবং পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে’, এক বিবৃতিতে জানায় পররাষ্ট্র দপ্তর।

এক সময়ের মিত্র দুই দেশের মধ্যে ওই গোলাগুলি ও পাকিস্তানের বিমান হামলা শুরু হয় ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ বিতর্কিত সীমান্তে। ইসলামাবাদের দাবি, আফগান ভূখণ্ড থেকে পাকিস্তানে হামলা চালানো সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর লাগাম টানতে কাবুলের ব্যর্থতার কারণেই এ সংঘাত শুরু হয়। পাকিস্তান জানায়, গোষ্ঠীগুলোর সদস্যরা আফগানিস্তানের নিরাপদ ঘাঁটি থেকে হামলা চালাচ্ছে। তালেবান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আফগানিস্তান সম্পর্কে ভ্রান্ত তথ্য ছড়াচ্ছে এবং ইসলামিক স্টেট (আইএসআইএল/ আইএসআইএস)- ঘনিষ্ঠ সদস্যদের আশ্রয় দিচ্ছে। তাঁরা আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতা ও সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করছেন।অন্যদিকে ইসলামাবাদ কাবুলের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। পাকিস্তানের দাবি, আফগানিস্তান বছরের পর বছর ধরে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দিয়েছে। গোষ্ঠীগুলো পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে দেশটিতে নিজেদের মতো করে শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।গত শুক্রবার সীমান্তের কাছে এক আত্মঘাতী হামলায় পাকিস্তানি ৭ সেনা নিহত ও আরও ১৩ জন আহত হন বলে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

পরদিন গত শনিবার ক্যাডেটদের এক স্নাতক সমাবর্তনে বক্তৃতা দিতে গিয়ে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির বলেন, আফগান সরকারকে অবশ্যই তাদের নিয়ন্ত্রিত প্রক্সিগোষ্ঠীগুলোর লাগাম টানতে হবে, যারা আফগান ভূমি ব্যবহার করে পাকিস্তানের ভেতরে নৃশংস হামলা চালাচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত