
সুপ্রিম কোর্ট ও চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলা বিচারিক আদালতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর ছিদ্দিক শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
আলিফ হত্যা মামলার আইনজীবী ও চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী বলেন, আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলার পরবর্তী বিচারিক কার্যক্রমের জন্য বিচারিক আদালতে (মহানগর দায়রা জজ আদালত) প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। এ সময় নিহত আইনজীবী আলিফের বাবা ও মামলার বাদী জামাল উদ্দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
চার্জশিট অনুযায়ী মামলায় মোট ৩৯ জন আসামি রয়েছেন। এরমধ্যে ১৭ জন আসামী এখনো পলাতক রয়েছে। পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, হুলিয়া ও ক্রোকি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৬ নভেম্বর জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেপ্তার সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী সাইফুলকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যার ঘটনায় তার বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। চলতি বছরের ১ জুন আলিফ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন সিএমপির কোতোয়ালী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ৩৮ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
চিন্ময় কৃষ্ণ বাদে বাকি ৩৭ জন আসামি হলেন- চন্দন দাশ মেথর, রিপন দাশ, রাজীব ভট্টাচার্য্য, শুভ কান্তি দাশ, আমান দাশ, বুঞ্জা, রনব, বিধান, বিকাশ, রমিত প্রকাশ দাস, রুমিত দাস, নয়ন দাশ, ওমকার দাশ, বিশাল, লালা দাশ, সামীর, সোহেল দাশ, শিব কুমার, বিগলাল, পরাশ, গণেশ, ওম দাস, পপি, অজয়, দেবী চরণ, দেব, জয়, লালা মেথর, দুর্লভ দাস, সুমিত দাশ, সনু দাস, সকু দাস, ভাজন, আশিক, শাহিত, শিবা দাস ও দ্বীপ দাস। তবে গত ২৫ আগস্ট তৎকালীন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এসএম আলাউদ্দিন মাহমুদের আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার দাখিল করা চার্জশিটের গ্রহণযোগ্যতার শুনানি শেষে সুকান্ত দত্তসহ মোট ৩৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেছিলেন আদালত।
এদিকে আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠাতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে আবেদন করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এ আবেদন করেন।
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের সহকারী পিপি মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী বলেন, আলিফ হত্যা মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠাতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর আবেদন করেছেন তার বাবা জামাল উদ্দিন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা নির্বাচন কমিশনের কাজে ঢাকায় রয়েছেন। তাই তার পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শরীফ উদ্দিন আবেদনটি গ্রহণ করেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন।