ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

দাগনভূঞায় কীটনাশক ছাড়া লাউ চাষে সাফল্য

দাগনভূঞায় কীটনাশক ছাড়া লাউ চাষে সাফল্য

ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলায় উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের বিষমুক্ত লাউসহ অন্যান্য সবজি চাষ করছেন দাগনভূঞা পৌর এলাকার জগতপুর গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা হাসান আহমেদ। লাউ চাষ করে বীজ বপনের ৪৫ দিনের মধ্যে ভালো ফলন পেয়ে খুশি। তিনি জানান, ১০ শতক জমিতে লাউ আবাদ করেছেন।

সরেজমিনে হাসান আহমেদের সবজি প্লটে গিয়ে দেখা গেছে, বিষ প্রয়োগ ছাড়াই জমিতে মাচায় হাইব্রিড জাতের লাউ চাষ করেছেন। তার লাউ এর জমিতে মাচার নিচে ঝুলছে ছোট-বড় শত শত সবুজ লাউ।

হাসান আহমেদ বলেন, গত কয়েক মাস আগে অতিবৃষ্টিতে অনেক ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। তাই উপজেলা কৃষি অফিসের পরার্মশে এবং সহযোগিতায় ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। লাউ চাষে কোনো ধরনের বিষ প্রয়োগ করা হয়নি। এ লাউ চাষাবাদে মাচা তৈরি, মালচিং পেপার শ্রমিকসহ আমার খরচ হয়েছে প্রায় ৬ হাজার টাকা। এখন পর্যন্ত ৮০টি লাউ বিক্রি করেছি প্রায় ৬ হাজার ৫০০ টাকা। এখনও গাছে প্রচুর লাউ রয়েছে। ঠিকমতো পরিচর্যা করতে পারলে জমি থেকে আরও প্রায় ১৫ হাজার টাকার লাউ তুলে বিক্রি করা যাবে। প্রতিটি লাউ খুচরা ৮০-৯০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়াও বেগুন, টমেটো, মিষ্টি কুমড়া, কাঁচামরিচসহ অন্যান্য সবজির আবাদ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে, বিক্রিও করা হচ্ছে।

জানা গেছে, নিরাপদ ফসল উৎপাদনে জমিতে ব্যবহার করছেন পরিবেশবান্ধব ‘সেক্স ফেরোমন ফাঁদ’। বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে এই ফাঁদ যুগান্তকারী পদ্ধতি। গুণগতমানের ফসল উৎপাদনে এই ফাঁদ যুগোপযোগী ও কার্যকরী পদক্ষেপ। এই ফাঁদ ব্যবহার করলে বিষমুক্ত ফসল পাবে ভোক্তারা। লাউ ও অন্যান্য ফসলে পরিবেশবান্ধব জৈবিক পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন কৃষক উদ্যোক্তা মো. হাসান আহমেদ। তার সফলতা দেখে অন্য সবজি চাষিরা লাউ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। বিষমুক্ত লাউ চাষের কারণে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। অনলাইন প্লাটফর্মে প্রচারের কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা লাউ কিনে নিচ্ছেন। কৃষকদের লাউ চাষের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়েছে। লাউ কিনতে আসা স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষমুক্ত লাউয়ের কারণে কিনেছি। উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, একটি ফেরোমন লিউর ধারণকারী প্লাস্টিক টিউব ও স্থানীয়ভাবে তৈরি একটি ২২ সেন্টিমিটার উচ্চতার প্লাস্টিক বয়াম থাকে। যাতে সাবান মিশ্রিত পানি ব্যবহার করা হয়। ৩-৪ সেন্টিমিটার উচ্চতার সাবান মিশ্রিত পানি বয়ামের তলদেশে পুরুতে রাখতে হয়। ফসল রোপণের ৩-৪ সপ্তাহ পর ফসলের ঠিক ১০-১২ সেন্টিমিটার ওপরে সেট করতে হয়। ফসল না তোলা পর্যন্ত জমিতে রাখতে হয়। ফলে ক্ষতিকর পোকা বংশবৃদ্ধি করতে পারে না। ফলে নিরাপদ পুষ্টি যুক্ত খাদ্য উৎপাদন ও কার্যকর পোকা দমনে জৈব বালাইনাশকের বিকল্প নেই।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যে জৈব বালাইনাশকসমূহ যেমন রোগ নিয়ন্ত্রের জন্য ট্রাইকোডার্মা, মাছি পোকা দমনের জন্য ফেরোমন ফাঁদ, হলুদ ফাঁদসহ বিভিন্ন জৈব বালাইনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত